গ্রামবাসীদের কাছে খবর পেয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ-প্রশাসন। পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের বড়গ্রামের ঘটনা। সুজাতা মাহাতো নামের ১৪ বছরের ওই কিশোরীর বিয়ের দিনই পুলিশ গিয়ে তা রুখে দেয়। বেগতিক বুঝে সরে পড়ে উত্তরপ্রদেশের পাত্র।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, বড়গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষিশ্রমিক দুলাল মাহাতো তার মেয়ে সুজাতার বিয়ে ঠিক করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের খুশিনগর জেলার খাড্ডা থানার বোসাই গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে। কিন্তু পাত্রের নামই জানাতে পারেননি দুলালবাবু। পাত্রের ঠিকানাও পুলিশ জোগাড় করেছে বহু অনুসন্ধানের পরে। বিয়ে উপলক্ষে সামান্য যে আয়োজন করা হয়ে থাকে, সেটুকুও করেননি দুলালবাবু। এত ‘গোপনে’ বিয়ের তোড়জোড় দেখে সন্দেহ হওয়ায় এলাকাবাসীই খবর দেন প্রশাসনে। খবর পেয়েই রবিবার দুপুরে হুড়া থানার পুলিশ গ্রামে গিয়ে বড়গ্রাম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুজাতার বিয়ে আটকায়। ততক্ষণে সরে পড়েছে পাত্র। তাকে ধরা যায়নি।
সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক স্বপন মুখোপাধ্যায় জানান রবিবার তাঁর কাছে খবর আসে, বড়গ্রামে এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি পুলিশকে জানান। একই রকম ভাবে খবর পেয়েছিলেন পুরুলিয়ার সহকারী শ্রম কমিশনার প্রসেনজিৎ কুণ্ডু। তিনি বলেন “ওই এলাকার কিছু সচেতন বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলাম পুলিশকে।”
পুলিশ সূত্রেই জানা যাচ্ছে, ওই এলাকার কিছু দরিদ্র পরিবারের কয়েকটি মেয়ের বিয়ে হয়েছে উত্তরপ্রদেশের ওই এলাকাতেই। বিয়ের পর থেকে বাপের বাড়ির সঙ্গে কিছু মেয়ের কার্যত কোনও যোগাযোগও নেই। দুলালবাবুও ওই সূত্র ধরেই মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ করেছিলেন। মানবাজারের তৃনমূল বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়ের নাম করে পাচার করা পাচারকারীদের পুরানো পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা বিশদে খোঁজ নিতে প্রশাসনকে বলব।” দুলালবাবুর দাবি, ধুমধাম করে ভাল জায়গায় মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সামর্থ তাঁর নেই বলে কম বয়েসেই মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন “পুলিশ এসে বলার পরে ভুল বুঝতে পেরে বিয়ে বন্ধ করে দিই। তবে পাত্র কেন পালাল বলতে পারব না।” তড়িঘড়ি সম্বন্ধ ঠিক হওয়ায় পাত্র সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারেননি বলেও দুলালবাবুর দাবি।
শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক জানান, বিয়ের নাম করে মেয়ে পাচারের নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত হবে। একই বক্তব্য পুলিশের। |