বিবাদের মূলে আদতে রয়েছে একটি জমি। সেই জমি দখলকে কেন্দ্র করেই দু’টি পরিবারের গোলমালে জড়িয়ে গেল তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুরে। জমি-বিবাদের জেরে রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে দু’পক্ষে দফায় দফায় বোমাবাজি ও সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, এ দিন সকালে প্রথমে পুলিশও গ্রামে ঢুকতে পারেনি। সংঘর্ষে তিন মহিলা-সহ ছ’জন জখম হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে।
পুলিশ জানায়, কাশীপুরের কানজারা মানিকচকে চার বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে বন্দে আলি এবং রফিকুল ইসলাম নামে দুই বাসিন্দার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গোলমাল চলছে। শনিবার তা সংঘর্ষের চেহারা নেয়। বন্দে আলিকে মারধর করে রফিকুলের দলবল। গুরুতর আহত অবস্থায় বন্দে আলিকে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় এবং পুলিশি সূত্রের খবর, বন্দে এবং রফিকুল দু’জনেই তৃণমূলের সমর্থক। সেই সূত্রেই তাঁদের গোলমাল ক্রমশ তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর কাজিয়ায় পরিণত হয়। শনিবার রাত থেকেই গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম এবং মুচা হকের সমর্থকেরা। মুচা হক স্থানীয় শোনপুর পঞ্চায়েতের প্রধান। দফায় দফায় সংঘর্ষে গ্রামের চার-পাঁচটি বাড়ি ভাঙচুর হয়। দু’পক্ষই পরস্পরকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে। কাশীপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে। |
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুলিশ ফিরে যেতেই ফের গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। দু’পক্ষেরই হাতে ছিল শাবল, লোহার রড, চপার। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়তে থাকে। সোমবার সকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পুলিশি সূত্রের খবর, এ দিন সকালে পুলিশ প্রথমে ওই গ্রামে ঢুকতেই পারেনি। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। দুপুর নাগাদ বিরাট পুলিশবাহিনী গ্রামে ঢোকে। রাত পর্যন্ত গ্রামে দফায় দফায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ দিন যারা গোলমাল করেছিল, তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, এ দিন দু’পক্ষের ১৫ জনের নামে এফআইআর করা হয়েছে। তাদের সবাই তৃণমূলের সমর্থক। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পুলিশ জানান, এই গোলমালে তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠী জড়িত। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তা মানতে চাননি। আরাবুল ইসলাম বলেন, “এটা পারিবারিক গোলমাল। এটাকে তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব বলে প্রচার করা হচ্ছে।” আরও এক ধাপ এগিয়ে মুচা হক আঙুল তুলেছেন সিপিএমের দিকে। তিনি বলেন, “এই মারামারির সঙ্গে সিপিএম জড়িত।” |