মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতেই আরও একটি ৫০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করবে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। এ জন্য মোট ২৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে, যার ৩০ শতাংশ দেবে নিগম নিজে। বাকি ৭০ শতাংশ বাজার থেকে ঋণ হিসাবে নেওয়া হবে বলে সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে এক লপ্তে অনেকটা জমি পাওয়া সমস্যা। সরকারও নতুন জমি অধিগ্রহণের পক্ষপাতী নয়। সে কারণেই নতুন ইউনিটটি সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অব্যবহৃত জমিতে গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এক বিদ্যুৎ কর্তা জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন প্রকল্পের জমির জন্য রাজ্য সরকারের মুখ চেয়ে বসে থাকতে হবে না। নিগম সূত্রে খবর, নতুন প্রকল্পটির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। সরকার অনুমোদন দিলে প্রকল্পের ‘ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট’ বানানো হবে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বলেন, “নিগম নতুন আরও একটি ৫০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়বে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খুব শীঘ্রই প্রকল্প শুরুর প্রাথমিক কাজগুলি সেরে নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হবে।”
সাগরদিঘিতে এখন ৩০০ মেগাওয়াটের দু’টি, অর্থাৎ মোট ৬০০ মেগাওয়াটের ইউনিট রয়েছে। ওই দু’টি ইউনিটই চালু রয়েছে। এ ছাড়াও ৫০০ মেগাওয়াট করে মোট ১০০০ মেগাওয়াটের নতুন দু’টি ইউনিটের নির্মাণ কাজ চলছে। যার জন্য লগ্নি হচ্ছে প্রায় ৫৫০০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ সালের মধ্যেই নির্মীয়মাণ ওই ইউনিট দু’টি চালু হওয়ার কথা। ৫০০ মেগাওয়াটের সর্বশেষ প্রস্তাবিত ইউনিটটি চালু হলে সাগরদিঘিতে ইউনিটের সংখ্যা হবে পাঁচ, যার সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে দৈনিক প্রায় ২১০০ মেগাওয়াট। নিগম কর্তাদের দাবি, সাগরদিঘিতে প্রায় ১২০০ একর জমিতে এখন যে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে, তাতে একসঙ্গে পাঁচটি ইউনিট চালাতে সমস্যা হবে না। পর্যাপ্ত কয়লা সঞ্চয় করে রাখার মতো গুদাম, জল সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন এবং ছাই ফেলার ব্যবস্থা থাকবে।
সাগরদিঘির প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ছাড়াও সাঁতালডিহিতে আরও একটি ৫০০ মেগাওয়াটের ইউনিট এবং বক্রেশ্বরে কেন্দ্রীয় ঋণে ৫০০ মেগাওয়াটের ছয় নম্বর ইউনিটটি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে নিগমের। এর মধ্যে সাঁতালডিহির প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই রাজ্যের অনুমোদন পেয়েছে। এটি’র পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। তবে বক্রেশ্বরের প্রকল্পটি আপাতত বিশ বাঁও জলে, কারণ কেন্দ্র এখনই কোনও ঋণ দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে। তবে নিগম কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সাঁওতালডিহির আগেই সাগরদিঘি প্রকল্পের কাজ শেষ করে ফেলা হবে। তাই এখন থেকেই সাগরদিঘি প্রকল্পের ঋণের জন্য তারা বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কোলাঘাট, ব্যান্ডেল, বক্রেশ্বর, সাঁওতালডিহি এবং সাগরদিঘিতে নিগমের যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি রয়েছে, তাদের এখন দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩৮৬০ মেগাওয়াট। সব কটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র মিলিয়ে এখন গড়ে প্রায় ৩২০০-৩৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। নতুন ইউনিট তিনটি যোগ করলে নিগমের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হবে ৫৩৬০ মেগাওয়াট, যা রাজ্যের আগামী কয়েক বছরের চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট বলেই মনে করছেন নিগমের কর্তারা।
|
মাদ্রাসা পরীক্ষায় নম্বর নিয়ে বিভ্রান্তি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রশ্নপত্রের উপরে লেখা: পূর্ণমান ১০০। অথচ প্রশ্নপত্রে আছে মোট ৯১ নম্বরের প্রশ্ন। শনিবার মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ আয়োজিত ফাজিলের (দ্বাদশ শ্রেণির যে পাঠ্যক্রমে ধর্মতত্ত্ব পড়ানো হয়) আরবি ভাষার পরীক্ষায় এই ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নপত্রে বিভ্রাটের কথা মেনেছেন পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা বিষয়ক কমিটি বিষয়টি আলোচনা করে ‘ছাত্রস্বার্থে’ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তাঁরা। ফাজিল পরীক্ষা দিচ্ছেন হাজার দুয়েক ছাত্রছাত্রী। মাদ্রাসা পর্ষদের সচিব সৈয়দ নুরুস সালাম এ দিন বলেন, “পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে খবর আসে, ১০০ নম্বরের জায়গায় ৯১ নম্বরের প্রশ্ন রয়েছে ওই প্রশ্নপত্রে।” তিনি জানান, ছাত্রছাত্রীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তাদের স্বার্থ মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত হবে। |