এক দিকে জমির সমস্যা। অন্য দিকে বিশ্ব বাজারে মন্দার ধাক্কা। এই দুইয়ের জাঁতাকলে অনিশ্চিত রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের লগ্নি। সঙ্গে আটকে ২৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান।
রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ‘শো-কেস’ সেক্টর ফাইভে জমি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। রাজারহাটে জমি অধিগ্রহণ
বন্ধ। তাই প্রস্তাবিত ‘অ্যাকশন-এরিয়া ফোর’-এ জমি দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল। ফলে এজিস, আইটিসি ইনফোটেক-এর মতো সংস্থার প্রকল্প এখনও ঝুলেই রয়েছে।
এ বার জমি সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্ব বাজারে মন্দার প্রভাব। নোনাডাঙায় ১০ একর জমির উপর এইচ এস বি সি, রোল্টা ও এইচ সি এল-এর প্রকল্প আপাতত স্থগিত রয়েছে। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে এখানে জমি নেয় ওই তিন সংস্থা। প্রকল্প নির্মাণের প্রাথমিক কাজও শুরু করে দেয় তারা। কিন্তু সে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে বাধা এখন বিশ্ব বাজারের মন্দা। সেই কারণ দর্শিয়ে প্রকল্প তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সময় চেয়েছে তারা।
নোনাডাঙায় সাড়ে তিন একর জমির উপর প্রস্তাবিত তথ্যপ্রযুক্তি ক্যাম্পাসে প্রায় ৪ হাজার কর্মী নিয়োগ করার পরিকল্পনা ছিল এইচ এস বি সি-র। ভারতে জমি কিনে নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরির এটাই প্রথম পদক্ষেপ ছিল সংস্থার। ৩৫টি দেশে ব্যবসা করা রোল্টাও এই কেন্দ্রে ৫০০০ কর্মী নিয়োগ করবে বলে জানিয়েছিল।
রাজারহাটে ২০ একর জমি চেয়েছিল ১৩টি দেশে ছড়িয়ে থাকা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সংস্থা এজিস। ৬৫ হাজার কোটি টাকার এসার গোষ্ঠীর সংস্থা এজিস এ রাজ্যে নয়া মডেলের ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে চায়। বিনিয়োগের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি। বিগত সরকারের আমলে এই প্রস্তাব এসেছিল। জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সরকার দিলেও নির্বাচনী ডামাডোলে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। নতুন সরকারের কাছেও সংস্থা কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের জন্য জমি চেয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রাজারহাটে জমি অমিল। তাই সংস্থাকে জেলায় জমি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলায় যাওয়ার প্রস্তাবে এখনও বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেনি সংস্থা।
জমি সমস্যার জেরে আইটিসি ইনফোটেকের মতো সংস্থার পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা এখনও খাতায় কলমেই থেকে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বিগত বাম সরকারের আমলে ১৫ একর জমি চেয়েছিল তারা। কিন্তু দামের কারণে পিছিয়ে যায় সংস্থা। এর পরে প্রকল্প নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করেনি আইটিসি ইনফোটেক। এখন সরকারের কাছে নতুন করে জমির জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থা। এ বার অবশ্য আরও বেশি জমি চেয়েছে তারা। ৫০ একর জমি চেয়েছে সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এর অর্ধেকেরও কম জমি দিতে পারে সরকার। কিন্তু সংস্থা তা মেনে নেবে কি না, এখন সেটাই দেখার। |