উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে এখনও বাকি ১২ দিন। তার আগেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়ে দিলেন, এ বার পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা নেওয়া হবে ‘দ্বিতীয়’ সেটের প্রশ্নে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে খোদ ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে’।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার অনেক আগেই এমন সিদ্ধান্ত কেন? প্রাথমিক ভাবে এ বার পদার্থবিদ্যার যে-প্রশ্নপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছিল, তার গোপনতা নিয়ে সংসদ-কর্তৃপক্ষই সংশয়ে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই প্রশ্নপত্র বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। তার পরিবর্তে ‘দ্বিতীয়’ সেটের প্রশ্নে পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা হবে বলে জানায় সংসদ।
প্রথম দফায় চূড়ান্ত করা প্রশ্নপত্রের গোপনতা নিয়ে হঠাৎ সংশয়ই বা দেখা দিল কেন?
পদার্থবিদ্যার এক মডারেটর সম্প্রতি অভিযোগ জানান, তিনি যে-প্রশ্নপত্র চূড়ান্ত করেছেন, তা বাতিল করে অন্য প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তাঁর উপরে ‘চাপ’ সৃষ্টি করছেন সংসদেরই এক আধিকারিক। সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “তদন্ত চলছে। সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজখবর করেন। তাঁরই নির্দেশে প্রথম সেটের প্রশ্নপত্রের বদলে অন্য প্রশ্নে পরীক্ষা হবে।”
কোনও পরীক্ষার প্রশ্নকর্তা, মডারেটর, পরীক্ষক-সহ সংশ্লিষ্ট সকলেরই পরিচয় গোপন রাখার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চারুচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক, অভিযোগকারী ওই মডারেটর সেই গোপনতা রক্ষা করেননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন মুক্তিনাথবাবু। কিন্তু সংসদের আধিকারিকদের একাংশই প্রশ্ন তুলেছেন, পরীক্ষা যে দ্বিতীয় সেটের প্রশ্নে হবে, সেটা ঘোষণা করার আদৌ কোনও দরকার ছিল কি? এক আধিকারিক বলেন, “এই তথ্য জেনে তো ছাত্রছাত্রীদের কোনও লাভ হবে না। বরং তাদের মধ্যে একটা আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তারা ভাবতেই পারে যে, প্রথম সেটের প্রশ্ন অপেক্ষাকৃত সহজ। দ্বিতীয়টি হয়তো তুলনামূলক ভাবে একটু কঠিন হবে!” মুক্তিনাথবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। তিনি বলেন, “পদার্থবিদ্যার প্রশ্নপত্র নিয়ে তো একটা অভিযোগ উঠেছে। তাই দ্বিতীয় সেটের কথা জানিয়েছি। আচমকা কোনও ঘটনা ঘটলে তার মোকাবিলার জন্য প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট তৈরি করেই রাখে সংসদ। সব ক’টি প্রশ্নপত্রের মান একই।”
এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ১৪ মার্চ। শেষ ৭ এপ্রিল। গত বারের থেকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লক্ষেরও বেশি বেড়েছে। এ বার পরীক্ষা দিচ্ছেন সাত লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৬৭ জন। কাল, রবিবার ৪৯টি ক্যাম্প থেকে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট-সহ সাতটি জরুরি নথি বিতরণ করা হবে। ওই দিনেই স্কুলগুলিকে তা সংগ্রহ করতে হবে বলে জানান সভাপতি। |