|
|
|
|
বদলি হলেন এগরার ওসি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
এক মহিলাকে গণধর্ষণ এবং ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনের গণ-প্রহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় গত কয়েক দিন ধরেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছিল। অবশেষে বদলি করা হল এগরার ওসি সুধাংশু লায়েককে। তাঁকে পাঠানো হয়েছে ডিআইবি-তে। তাঁর জায়গায় এগরা থানার দায়িত্বে আনা হল নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পুলিশের এক নির্দেশপত্রে দ্রুত দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে।
গত শনিবার রাতে এগরার দুবদা গ্রামে এক মহিলাকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত দু’জন গণপিটুনিতে মারা যায়। ওই রাতে এগরা থানার ওসি সুধাংশু লায়েক এলাকার বাইরে ছিলেন। ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এ দিকে, এগরা থানার পুলিশ ঘটনার সময়ে এলাকায় গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে না পাঠানোয় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন নিহতদের পরিবারের লোকজন। জেলা পুলিশের একাংশের ইঙ্গিত, এই সব কারণেই এগরার ওসিকে বদলি করা হয়েছে। তবে পুলিশ সুপার অশোক প্রসাদের বক্তব্য, “শাস্তিমূলক নয়, রুটিন বদলি। অনেককে ট্রেনিংয়ে পাঠানো হচ্ছে। এগরার ওসিকে ডিআইবি-তে বদলি করা হয়েছে।” জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার জেলার ৩৫ জন পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়। তাঁদেরই অন্যতম এগরার ওসি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম মাফিক ছুটির অনুমোদন না নিয়েই ঘটনার রাতে থানা এলাকার বাইরে ছিলেন এগরার ওসি সুধাংশু লায়েক। রাতে থানা থেকে বার বার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এ দিকে, ওসি না থাকায় ওই রাতে ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পারেননি থানার পুলিশকর্মীরা। যার ফলে আহতদের চিকিৎসার দায় পর্যন্ত গ্রামবাসীদের উপর চাপিয়ে দিয়ে চলে আসেন পুলিশকর্মীরা। তা ছাড়া, গণ-পিটুনির সময়ে গ্রামবাসীদের একাংশ বার বার থানায় ফোন করলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছতে অনেক দেরি করে।
এগরার পুলিশকর্মীদের একাংশের ব্যাখ্যা, কী করা উচিত তা জানতে ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাতেই অনেকটা সময় চলে যায়। তার পর ঘটনাটি জানানো হয় সিআই প্রদীপ সমাদ্দারকে। তাঁর নির্দেশে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। রবিবার থানার নথিপত্র দেখে ও পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছেন ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বিনীত গোয়েল ও পুলিশ সুপার অশোক প্রসাদ। বৈধ ছুটি বা অনুমতি না নিয়ে এলাকার বাইরে থাকা এবং মোবাইল পরিষেবা সীমার বাইরে থাকাএই দু’টি বিষয়কে কর্তব্যে গাফিলতি ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হিসেবেই দেখে ওসি-বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা পুলিশকর্তারা।
যদিও বদলির প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অপসারিত ওসি। তবে থানার পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, ওসির নাতনির শরীর খারাপ হওয়ায় তার চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা ও তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে ছুটি চেয়েও পাননি ওসি। কিন্তু বিষয়টি জরুরি বুঝে ‘মৌখিক’ ভাবে তাঁকে মেদিনীপুরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তারা। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ মেদিনীপুরে রওনা হয়েছিলেন সুধাংশুবাবু। রবিবার সকালে ঘটনার খবর পেয়ে থানার উদ্দেশে রওনা হন। তা ছাড়া তিনি এলাকা ছেড়ে বাইরে যাওয়ায় সাময়িক দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন থানার সেকেন্ড অফিসার বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। |
|
|
|
|
|