ব্রিগেড, ধর্মঘটের পর এখন
বামেদের চোখ বিধানসভায়
ব্রিগেড সমাবেশ এবং সাধারণ ধর্মঘটে ‘সাফল্যে’র পর বামেদের পরবর্তী লক্ষ্য বিধানসভার আসন্ন বাজেট অধিবেশন। সাম্প্রতিক কালে একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকারকে যে ‘অস্বস্তি’তে পড়তে হয়েছে, তারই ফায়দা আসন্ন বাজেট অধিবেশনে তুলতে চায় বিরোধী বাম শিবির। বিগত শীতকালীন অধিবেশনেই সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে চিড় ধরেছিল। এ বার বিরোধীরা আরও ‘আক্রমণাত্মক’ হলে আগামী অধিবেশন ‘উত্তপ্ত’ হওয়ার সম্ভাবনা।
বিধানসভা ভোটে হারের পর কোণঠাসা সিপিএম ‘উজ্জীবিত’ হওয়ার রসদ পেয়েছে ব্রিগেড সমাবেশে। তার পিঠোপিঠিই ছিল মঙ্গলবারের সাধারণ ধর্মঘট। রাজ্য সরকার এবং প্রধান শাসক দলের ‘প্রতিরোধমূলক’ মনোভাব সত্ত্বেও ধর্মঘটে ‘ভাল সাড়া’ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। এই আবহেই তাদের লক্ষ্য, বিধানসভার অন্দরে এ বার সরকার পক্ষকে ‘কোণঠাসা’ করা। বাম পরিষদীয় সূত্রের খবর, রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কের সময় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা তুলতে চান বিরোধী বিধায়কেরা। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির উপরে বিরোধী বিধায়কদের প্রশ্ন তো থাকবেই। বিশেষত, আগের দু’টি অধিবেশনেই বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্যে ‘বিভ্রান্তি’ এবং সরকারের ‘অস্বস্তি’ বেড়েছিল। সেই ‘ধারা’ই বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবে বিরোধীরা। সেই মর্মে প্রশ্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, আগামী ১৪ মার্চ বিকাল ৩টেয় রাজ্যপালের ভাষণে সূচনা হবে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের। রাজ্যপাল ওই তারিখ নিয়ে বিধানসভাকে প্রথামাফিক ‘সম্মতি’ দিয়েছেন। রাজ্য বাজেট পেশ হওয়ার কথা ২৩ মার্চ। নতুন সরকার আসার পর গত আর্থিক বছরে কাজ চালানো হয়েছিল বার্ষিক অর্থনৈতিক বিবৃতি এবং ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট দিয়ে। সিপিএমের এক বর্ষীয়ান বিধায়কের কথায়, “এ বার বলছেন পূর্ণাঙ্গ বাজেট করবেন ওঁরা। কী করেন, দেখা যাক!” রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি সঙ্গিন করে তোলার পিছনে বাম জমানা দায়ী, এ কথা বারেবারেই বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাম জমানার ঠিক কত বকেয়া এই সরকারকে মেটাতে হচ্ছে এবং মমতার নেতৃত্বাধীন সরকার কত টাকা আয় করেছে, এর পরিষ্কার হিসাব গত অধিবেশনে দিতে চাননি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। প্রশ্ন তুলেছিল বাম শিবির। এ বার বাজেট নিয়ে আলোচনায় সেই প্রশ্নের আবার উত্তর চায় বিরোধীরা। কর্মসংস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর খতিয়ানের
খাতায়-কলমে হিসাব নিয়ে প্রায়শই সভা-সমাবেশে প্রশ্ন তুলছেন বাম নেতৃত্ব। বিধানসভার অন্দরে এই যাবতীয় বিষয়েই তাঁরা সরকারের বক্তব্য ‘নথিভুক্ত’ করাতে চান। যেমন, বিষ মদ-কাণ্ডে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সিপিএমকে দোষারোপ করার পরেও তদন্তে তেমন কিছু ধরা পড়েছে কি না, জানতে চাইতে পারেন বিরোধী বিধায়কেরা।
কৃষক আত্মহত্যা, পরিবহণ শ্রমিকদের বেতন-পেনশনের সমস্যার মতো কিছু বিষয়কে প্রত্যাশিত ভাবেই ‘হাতিয়ার’ করবে বিরোধী ফ্রন্ট। পাশাপাশি, আরও একটি ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে নজর রাখছে তারা। গোর্খা আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ) বিল বিধানসভায় পাশ হয়েছিল ৬০টিরও বেশি সংশোধনী-সহ। পরে সংশোধনী-সহ যে বিল ছেপে আসে, তাতে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী যে বিষয়গুলি মেনে নিয়েছিলেন, সেগুলিরও উল্লেখ সংশোধিত বিলে নেই। কী ভাবে বিধানসভায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে রাজ্যপালের কাছে ‘গুরুতর’ প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী ফ্রন্ট। মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের দার্জিলিং সফরের পরে জিটিএ-প্রশ্ন কোথায় দাঁড়ায়, তার উপরে ভিত্তি করেই বিরোধীদের রণকৌশল ঠিক হবে। তবে সরকারকে সার্বিক ভাবে ‘কোণঠাসা’ করতে চাইলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে তাদের যে হাত-পা বাঁধা থাকবে, তা-ও মেনে নিচ্ছে বিরোধী শিবির। প্রাক্তন মন্ত্রী, এক সিপিএম বিধায়কের কথায়, “অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন বিচারাধীন। তা ছাড়াও, আমাদের সব প্রশ্ন গৃহীত হবে না। তবু তার মধ্যেই চেষ্টা করতে হবে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.