স্কুল খোলায় চাকদহে শিক্ষক ‘নিগ্রহ’
বন্ধে স্কুল বন্ধ থাকায় তালা হুড়ায়
ঙ্গলবার বন্ধের ঘটনার জের বুধবার অবধি গড়াল। হুড়া ও বরাবাজারে এ নিয়ে গোলমাল হয়। হুড়ার একটি স্কুলে শিক্ষকেরা বন্ধের দিন গরহাজির থাকার প্রতিবাদে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন অভিভাবকদের একাংশ। আবার মফস্সল থানা এলাকার একটি স্কুলে ধর্মঘটের দিন হাজির হওয়া স্কুল শিক্ষকদের নিগ্রহ করা হয়েছে বলে বন্ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বরাবাজারের বান্দোয়ান বানজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস মঙ্গলবার অল্প সময় খোলায় প্রতিবাদে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বাসিন্দারা।
আগাম না জানিয়ে বন্ধের দিন হুড়া ব্লকের রখেড়া হাই স্কুলে শিক্ষকেরা আসেননি। স্কুলে এসে হয়রান হয়ে ফিরতে হয়েছিল পড়ুয়াদের। এই আভিযোগে বুধবার ওই স্কুলের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিলেন অভিভাবকদের একাংশ। পরে অবশ্য তাঁরা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার পরে দরজার তালা খুলে দেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, মঙ্গলবার বন্ধের দিন স্কুলে শিক্ষকেরা গরহাজির ছিলেন। তাঁরা যে স্কুলে আসবেন না পড়ুয়াদের তা আগাম জানাননি। স্কুল বন্ধ ছিল। ফলে বন্ধের দিনে প্রায় দেড়শো ছাত্রছাত্রী স্কুলে এসে ফিরে যায়। মঙ্গলবারের ওই ঘটনার জেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল অভিভাবকদের মধ্যে। এ দিন সকালে স্কুল খোলার আগেই কিছু অভিভাবক স্কুলের দরজায় তালা দিয়েছিলেন। শিক্ষকরা এলে তাদেরকে বাইরে আটকে রেখে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। পরে শিক্ষকেরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। খোলা হয় স্কুলের তালাও।
প্রধান শিক্ষক সন্তোষ পতি বলেন, “আমাদের অনেকেই সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। তাই বন্ধ সমর্থন করেছিলেন। সে কারণেই স্কুল বন্ধ ছিল। তবে, আগাম না জানানোয় পড়ুয়াদের হয়রানি হয়েছে।” তিনি জানান, তাঁরা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের মধ্যের ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়েছেন।.স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু পতি বলেন, “শিক্ষকদের সবার গরহাজির থাকার বিষয়ে বিষয়ে পরে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”
অন্য দিকে, ধর্মঘটের দিন স্কুলে আসায় প্রধান শিক্ষক-সহ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের নিগ্রহের অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকার চাকদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। রাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ থানায় স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা স্থানীয় সিপিএম নেতা প্রফুল্ল কুমার সোনাইজুড়ি লোকাল কমিটির সদস্য শশধর কালিন্দী-সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানায়।
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র যাঁরা ধর্মঘটে যোগ দিতে চান না তাঁদের যোগ না দেওয়ার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করলেও দলের নেতা কর্মীদের নাম শিক্ষক নিগ্রহে জড়ানোয় দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুপ্রিয় মাহাতোর অভিযোগ, “সোমবার শশধর কালিন্দী ও আরও কয়েকজন বিদ্যালয়ে এসে আমাকে বন্ধের দিন স্কুলে না আসার জন্য বলেন। আমি তাঁদের জানাই স্কুলে বিদ্যালয়ে আসব। তাঁরা বাধা দিলে আমরা ফিরে যাব।” তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে স্কুলে গিয়ে দেখেন, স্কুলের দরজায় দলীয় পতাকা লাগানো এবং স্কুল চত্বরে সাইকেলের ভিড়। অবরোধকারীরা তাঁদের বিদ্যালয় খুলতে বাধা দেন। পাশাপাশি শুরু হয় অশ্রাব্য গালিগালাজ। রঞ্জিত সিংহ নামে এক শিক্ষকের অভিযোগ, “হঠাৎ আমাকে ওরা ঘুষি মারে। কোনও মতে আমরা ছুটে পালিয়ে যাই।”
ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রফুল্ল কুমার বলেন, “প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুল খুলতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু মারধর করা হয়নি।” আর দলের সোনাইজুড়ি লোকাল কমিটির সদস্য শশধর কালিন্দী বলেন, “এটা ঠিক যে আমরা ধর্মঘটের দিন স্কুল খুলতে অনুরোধ করেছিলাম। তবে গায়ে হাত তুলিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
বরাবাজারের বান্দোয়ান বানজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীরা মঙ্গলবার কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বংশীধর মাহাতো বলেন, “প্রধানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তালা খোলানো হয়। আধ ঘন্টা পরে কর্র্মীদের বাইরে বের করে তিনি ফের দরজায় তালা দিয়ে চলে যান। এই ঘটনার জেরে বাসিন্দারা গেটে আরও একটি তালা ঝুলিয়ে দেন।” বুধবার পঞ্চায়েত প্রধান সেখানে গিয়ে শাবল দিয়ে তালা ভেঙ্গে অফিসে ঢোকেন। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায়। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিস কি প্রধানের ইচ্ছা অনুযায়ী খোলা বা বন্ধ থাকবে? বান্দোয়ান বানজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের ভজু রুইদাস বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। অশান্তি ঘটার আশঙ্কায় ও অফিসের নথিপত্র খোয়া যাওয়ার ভয়ে মঙ্গলবার ছুটির খানিক আগে তালা দিয়েছিলাম। বুধবার অফিস খুলতে গিয়ে দেখি আরও একটি তালা ঝুলছে। অফিস খুলতে দেরি হয়ে যাবে এই ভেবে ওই তালা ভেঙেছি।” বরাবাজারের বিডিও দেবজিৎ বসু বলেন, “দু’পক্ষই আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের ডেকে পাঠিয়েছি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.