এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে অশান্তি হল কেতুগ্রামের চড়খি গ্রামে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। চড়খি গ্রামে বোলপুর-কাটোয়া রোডের উপরে সিপিএমের একটি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবাশিস মণ্ডল ও মলয় ঘোষের নেতৃত্বে শতাধিক দুষ্কৃতী ওই দফতরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন সিপিএম নেতা দেবনাথ মল্লিক। তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ করে, তাদের সমর্থক মলয় ঘোষ, আনন্দময় মণ্ডল-সহ সাত জনের পরিবারের উপরে সিপিএমের লোকজন হামলা চালিয়েছে। তার পরেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একটি পুলিশ পিকেটও বসানো হয় সেখানে।
এর পরেই রাতে স্থানীয় তৃণমূল সমর্থক উরেসা বিবির বাড়িতে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। তিনি বুধবার সকালে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, মঙ্গলবার গ্রামে ঝামেলা হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে সিপিএমের লোকজন তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্য দিকে, এ দিন বিকেলে কেতুগ্রাম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ চড়খি গ্রামে ‘আক্রান্ত’ ওই সাত তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি বলেন, “সিপিএমের দুষ্কৃতীরা মহিলাদের উপরে চড়াও হয়েছে। ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের থেকে সিপিএম যত বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, ততই তারা তৃণমূলের উপর আক্রমণ করছে। আমরা ওই পরিবারগুলিকে সাহায্য করার ব্যবস্থা করব।”
সিপিএমের কেতুগ্রাম ২ লোকাল কমিটির সম্পাদক তমাল মাজির পাল্টা অভিযোগ, “পুলিশের সামনেই দলীয় কার্যালয় ভাঙা হল। আমরা অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করল না। অথচ মিথ্যা অভিযোগে আমাদের পাঁচ জন কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ বুঝিয়ে দিল, তারা পক্ষপাতদুষ্ট।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে ধৃতেরা হলেন দেবনাথ মল্লিক, বিকাশ মাঝি, অসীম ঘোষ, রাধাকান্ত মণ্ডল ও পরিতোষ মণ্ডল। ধৃতদের এ দিন কাটোয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। কাটোয়ার এসডিপিও ধ্রুবজ্যোতি দাস বলেন, “ইতিমধ্যে ঘর পোড়ানোর ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য ঘটনায় অভিযুক্তদেরও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।” |