দেশব্যাপী ধমর্ঘটে স্বাভাবিক ছন্দে কাটল বাগডোগরা বিমানবন্দর। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে বাগডোগরাগামী একটি বিমান বাতিল হয়। কলকাতা, দিল্লি, গুয়াহাটি-সহ আন্তর্জাতিক বিমানও চলাচল করেছে। তবে বাতিল হওয়ার কারণ হিসাবে বিমানসংস্থার তরফে ‘টেকনিক্যাল প্রবলেম’ বলে এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়াকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পরে অবশ্য সংস্থার তরফে অন্য বিমানে ওই বাতিল হওয়ার যাত্রীদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এদিন বিমানবন্দরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের অধিকাংশ চালক ধমর্ঘট করতে পারেন তা আগেই বুঝে যান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত সোমবারই উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি) কর্তৃপক্ষকে বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ির মধ্যে বিশেষ বাস চালানোর অনুরোধ করেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই মতন প্রথমে একটি পরে দুটি বাস দিনভর বিমানবন্দর থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এবং শিলিগুড়ির মধ্যে যাতায়াত করে। ট্যাক্সি সকালের দিকে বন্ধ থাকলেও ৫০-৬০ প্রাইভেট নম্বরের গাড়ি বিমানবন্দরে ছিল। পরে বেলা বাড়তেই কিছু ট্যাক্সি নম্বরের ছোট গাড়ি চলাচল করে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণ কিশোর ভৌমিক বলেন, “একজনও যাত্রীর কাছ থেকে কোনও রকমের অভিযোগ পাইনি। এনবিএসটিসিকে বাস চালানোর জন্য বলায় তাঁরা সেই ব্যবস্থা করেছে। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে কিছু গাড়িও ছিল। একটি মাত্র দিল্লির বিমান আসেনি। বাকি সব স্বাভাবিক ছিল। ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি।” ভুটানের পারো থেকে বাগডোগরা হয়ে ব্যাংককের বিমানটি ঠিকঠাক চলেছে। এই বিমানটি ছাড়াও এদিন বহু বিদেশি পর্যটক উত্তরবঙ্গ, সিকিমে আসেন। দেশের পর্যটকদের সংখ্যাও কম ছিল না। তবে সমস্যা নিয়ে কেউ কোথাও অভিযোগ জানাননি। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “বিমানবন্দরে অবস্থা স্বাভাবিক ছিল। প্রচুর বিদেশি পর্যটক এদিন এসেছেন। সিটি বাসের ব্যবস্থা ছাড়াও ছোট গাড়ির সংখ্যা ভালই ছিল। যাত্রীদের কোনও সমস্যা হয়নি।” বাগডোগরায় ১৪ জন ধমর্ঘট সমর্থনকারীকে পুলিশ সকালে গ্রেফতার করে। বিমানবন্দরে যাতে কোনও রকম সমস্যার আঁচ না পরে সেইদিক থেকে সচেষ্ট ছিল পুলিশ-প্রশাসন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিমানবন্দরে বিরাট পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়ার বিষয়টি দেখা ছাড়াও সিটি বাসের আসার যাওয়া সুনিশ্চিত করতে পুলিশ কর্মীরা তৎপর ছিলেন। সকালে ট্যাক্সি চালকেরা গাড়ি না চালালেও বেলা বাড়তেই স্বাভাবিক বিমানবন্দর থেকে তাঁরাও গাড়ি একের পর এক এনে স্ট্যান্ডে দাঁড় করানো শুরু করে দেন। প্রি-প্রেড ট্যাক্সি বুথও স্বাভাবিকভাবে খোলা হয়। বিমানবন্দরের একাংশ অফিসার, কর্মীরা জানিয়েছেন, ডান বা বাম প্রতিটি ধমর্ঘটে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের। বিমানবন্দরে আসা যাওয়া ছাড়াও ট্যাক্সি, সিটি বাস বিমানবন্দর থেকে চলত না। পাশাপাশি, কর্মীদেরও দফতরে আসতে সমস্যায় পড়তে হত। পুলিশ-প্রশাসন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই সচেষ্ট থাকায় এবারবারেই একেবারেই উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে। ট্যাক্সি চালকেরাও পরিস্থিতি নিয়ে আশ্বস্ত হয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘বাগডোগরা বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাস, স্টেশন এলাকায় বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছিল।” |