জিটিএ
আশার কথা শোনাবেন মুখ্যমন্ত্রী, ভাবছে মোর্চা
চুক্তি সইয়ের পরে কেটেছে সাত মাস। কিন্তু ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) গড়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের ছাড়পত্র মেলেনি। পড়ে আছে পাহাড়ের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ হওয়া প্রায় ২৫০ কোটি টাকাও। তা নিয়ে অনবরত প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে মোর্চা নেতা-কর্মীদের। জিটিএ গঠনের ব্যাপারে কবে কেন্দ্রের ছাড়পত্র মিলবে, তা এখনও স্পষ্ট জানেন না মোর্চা নেতৃত্ব। এই ‘পরিস্থিতি’তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দার্জিলিং সফরের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন মোর্চার শীর্ষ নেতারা।
আজ, বুধবার দার্জিলিঙে পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রীর। মোর্চা নেতাদের অনেকেরই আশা, ‘জিটিএ’ এবং পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এমন কোনও বার্তা দেবেন, যা পাহাড়বাসীদের (মোর্চা কর্মী-সমর্থকদের) ‘বাড়তি অক্সিজেন’ জোগাবে। মোর্চা নেতৃত্বের এই ‘প্রত্যাশা’র ব্যাপারে ওয়াকিবহাল রাজ্য সরকারও।
সরকারি সূত্রের খবর, আজ সন্ধ্যায় দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে সাধারণ পাহাড়বাসীর সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানেই ‘জিটিএ’ গঠনের ব্যাপারে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়টিও বিশদে জানাতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, দার্জিলিঙে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের বাসভবনে নবনির্মিত মিউজিয়ম, ম্যালে টি-মিউজিয়ম, রোপওয়ে ও আইটি হাবের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে তাঁর। রাতে তাঁর সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পাহাড়ের নানা খাতে বরাদ্দ হয়ে পড়ে থাকা টাকা যাতে দ্রুত খরচ করা যায়, সেই রূপরেখাও তৈরি হতে পারে।
গত ১৮ জুলাই দার্জিলিং পাহাড়ে ‘জিটিএ’ গঠনের ব্যাপারে চুক্তি সই হয়। সেই চুক্তির ভিত্তিতে আইন করার জন্য বিল বিধানসভায় অনুমোদিত হয়েছে। তা এখন কেন্দ্রের বিবেচনাধীন। ‘জিটিএ বিল’টি যাতে দ্রুত রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায়, সে জন্য মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্ব এবং ‘দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল’ (ডিজিএইচসি)-এর প্রশাসক অনিল বর্মা মহাকরণ ও দিল্লিতে দরবার করছেন। কিন্তু কবে কেন্দ্র ছাড়পত্র দেবে, তা নির্দিষ্ট না জানানোয় ‘উদ্বিগ্ন’ অনেক মোর্চা নেতাই।
মোর্চার ‘উদ্বেগের’ অন্যতম কারণ, ‘ডিজিএইচসি’র কাছে আগের বরাদ্দ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা পড়ে আছে। সম্প্রতি পাহাড়ের তিন মহকুমায় গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পেও ১০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু ওই টাকা জেলা প্রশাসন না ‘ডিজিএইচসি’ কার মাধ্যমে খরচ হবে তা নিয়ে প্রশাসন ও মোর্চা নেতৃত্ব একমত হচ্ছেন না।
মোর্চার এক অন্যতম শীর্ষ নেতার ‘আশঙ্কা’, “ডিজিএইচসি দিয়ে উন্নয়ন হবে না বলেই তো জিটিএ চুক্তি হয়েছে। তা হলে ডিজিএইচসি-র মাধ্যমে ২৫০ কোটি টাকার কাজ করানো হলে, পাহাড়ের বিরোধী দলগুলি নানা প্রশ্ন তুলে আমাদের বিপাকে ফেলার চেষ্টা করতে পারে। আবার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ওই টাকা খরচ হলে, মোর্চা রাজ্য সরকারের অধীনে কাজ করছে বলেও প্রচার হতে পারে।” দলের অন্দর সূত্রের খবর, টাকা থাকা সত্ত্বেও জোরকদমে কাজ না হওয়ায় পাহাড়ের শ্রমিক, বেকার যুবক-যুবতীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। মোর্চার আন্দোলনের সময়ে তৈরি ‘গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল’ (জিএলপি)-এর প্রায় ৫ হাজার তরুণ-তরুণীও মুষড়ে পড়েছেন। মোর্চার ওই নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী গত সাত মাসে একাধিক বার পাহাড়ে এসেছেন। তিনি নানা ঘোষণা ও অর্থ বরাদ্দ করায় পাহাড়বাসীর প্রত্যাশার পারদ চড়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা রূপায়ণের কাজটাই তো ঠিকঠাক করা যাচ্ছে না। সে জন্যই অনেকে মুষড়ে পড়ছেন।”
মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির কথায়, “জিটিএ নিয়ে পাহাড়বাসীর প্রত্যাশা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ নিয়ে যেন কারও কোনও ক্ষোভ-হতাশা না থাকে। আশা করি, এ বারের সফরে মুখ্যমন্ত্রী তা নিশ্চিত করবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.