|
|
|
|
পুলিশি হস্তক্ষেপে কারখানায় ইচ্ছুকরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কাজে যোগ দিতে এসে দেখেন কারখানার গেটে পিকেটিং চলছে। গেটে উড়ছে লাল পতাকা। বামপন্থী নেতা-কর্মীরা ধর্মঘটের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় বুঝতে পারছিলেন না একাংশ শ্রমিক। মুহূর্তেই পৌঁছে যায় পুলিশ। গেটে ঝোলানো পতাকা খুলে পুলিশকর্তারা জানিয়ে দেন, কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক কাউকে বাধা দেওয়া যাবে না। পুলিশের হস্তক্ষেপেই কাজে যোগ দেন ইচ্ছুক শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার সকালে এমনই ঘটল খড়্গপুরের টেলকন কারখানায়। শুধু এখানেই নয়, খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে অধিকাংশ কারখানাই এ দিন খোলা ছিল। তবে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল অন্য দিনের চেয়ে কম। এক শিল্প-কর্তার বক্তব্য, “ধর্মঘট মানেই উৎপাদন স্তব্ধ, সেই রুটিনটা অন্তত এ বার ধাক্কা খেল।” টাটা বিয়ারিংয়ে অবশ্য ধর্মঘটী ও কাজে যোগদানে ইচ্ছুকদের মধ্যে সামান্য অশান্তি হয়। শেষমেশ কাজে যোগ দেন ‘ইচ্ছুক’রা। |
|
খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলের কারখানায় কাজ চলছে জোরকদমে। |
এমনই এক জন সুজয় দোলুই বলেন, “কাজ না হলে তো আমাদেরই ক্ষতি। নির্দিষ্ট বেতন নেই। এক সপ্তাহ কাজ করে কেউ ৪০০, কেউ ৪৫০ টাকা পাই। এক দিন কাজ বন্ধ মানে তো আমাদেরই সমস্যা।”
খড়্গপুরে অধিকাংশ কারখানার গেট যে এ দিন খোলাই ছিল, তা মেনে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের দাবি, পুলিশ জোর করে কারখানার গেট খুলেছে। শ্রমিকেরা কিন্তু আমাদের পাশেই ছিলেন। এআইটিইউসি’র জেলা নেতা বিপ্লব ভট্টের প্রশ্ন, “পুলিশ গিয়ে কারখানা গেটেরা পতাকা খুলছে। এমনটা কেউ আগে দেখেছে!” তাঁর অভিযোগ, “কয়েকটি কারখানায় জোর করে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা হয়েছে।” এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল নেতা শশাঙ্ক পাত্রের পাল্টা দাবি, “কোথাও জোর করে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা হয়নি। শ্রমিকেরা স্বেচ্ছায় কাজে যোগ দিয়েছেন। ধর্মঘটে এই প্রথম খড়্গপুর শিল্পাঞ্চল সচল থাকল।” তবে, কারখানার গেট খোলা থাকলেও শ্রমিকদের কম হাজিরার জন্য অধিকাংশ কারখানাতেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম উৎপাদন হয়েছে। |
|
মেদিনীপুরে ডিএম অফিস। |
গোলবাজার-সহ খড়গপুর শহরের বড় বাজারগুলিতে প্রায় সমস্ত দোকানই বন্ধ ছিল। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রী-সংখ্যা ছিল খুব কম। বাস-অটো চলাচলও তেমন করেনি। তবু সরকারি অফিসে হাজিরা ছিল চোখে পড়ার মতো। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, খড়্গপুর মহকুমাশাসকের অফিসে ৬২ জনের মধ্যে ৫৮ জন কর্মীই উপস্থিত ছিলেন। ব্লক অফিসগুলিতেও উপস্থিতি ছিল মোটের উপর স্বাভাবিক। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদত্ত চৌধুরি বলেন, “সমস্ত সরকারি দফতরেই স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।” তবে, সে-সব অফিসে কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষ এসেছেন হাতেগোনা। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ডিউটি করেও ৪ জন হাজিরাখাতায় সই করেননি ধর্মঘটে ছুটি-রদের সরকারি নির্দেশনামার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। কেশিয়াড়ির সাঁতরাপুর হাইস্কুলে তৃণমূল-সিপিএম বচসা-সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৭ জন জখম হন। পুলিশ অবশ্য শুধু ৩ সিপিএম সমর্থককেই গ্রেফতার করে। এর বাইরে অশান্তি অন্তত তেমন হয়নি। |
— নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|