সাম্প্রতিক কালের কোনও ধর্মঘটে এমন ছবি নজরে আসেনি হাইকোর্টের পোড় খাওয়া আইনজীবীদের।
ধর্মঘটে দিন হাইকোর্টের কাজ বন্ধ থাকবে এত দিন এটাই ছিল দস্তুর। অনেক ক্ষেত্রে সরকার পক্ষের আইনজীবীরা এজলাসে হাজির থাকলেও বিপক্ষের আইনজীবীদের পাওয়া যেত না। ফলে মামলা হত না। ধর্মঘটের দিন আইনজীবী ও কর্মীদের উপস্থিতির হার দেখে শেষ পর্যন্ত বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিচারপতিরাও আদালত ছেড়ে চলে যেতেন। বিচারপ্রার্থীরাও জেনে নিয়েছিলেন, এটাই ভবিতব্য।
এ বার কিন্তু অনেকটাই পাল্টেছে সেই রীতি। কী রকম? রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ দিন সরকারি এবং সরকারি প্যানেলভুক্ত সমস্ত আইনজীবীরাই হাইকোর্টে হাজির ছিলেন। তাঁর পেশাগত জীবনে তিনি কোনও ধর্মঘটের দিন হাইকোর্টে আইনজীবী ও কর্মীদের এত হাজিরা দেখেননি বলে দাবি করেন তিনি। আদালত সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে দশটাতেই প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে নির্ধারিত মামলার শুনানি শুরু হয়। সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুরু হয় বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি অসীম রায়ের (দু’জনেরই এক নাম) ডিভিশন বেঞ্চ-এ জামিন পাওয়ার আবেদনের শুনানিও। যাঁরা জামিন চান, তাঁরা এমনিতেই তাঁদের আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তি চান। কারণ, এই আবেদনকারীরা জেল বা পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। ধর্মঘটের জন্য এজলাস বন্ধ থাকলে বিপাকে পড়তে হয় তাঁদের। এজলাসের কাজও সাড়ে তিনটে পর্যন্ত চলে। বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও বিচারপতি শুক্লা কবীরের ডিভিশন বেঞ্চেও মামলা হয়েছে। অবসরকালীন ভাতার জন্য মুর্শিদাবাদের এক বৃদ্ধের দীর্ঘদিনের মামলার নিষ্পত্তিও হয়েছে।
মামলা চলে আরও কিছু এজলাসেও। কোনও কোনও বিচারপতির এজলাসে কর্মীর অভাবে সাময়িক ভাবে কাজ বিঘ্নিত হলেও পরে অন্য এজলাস থেকে কর্মী এনে কাজ হয়েছে বলে আদালত সূত্রের খবর। |