আজ যাদবপুরে বুদ্ধ
সাংবাদিক নিগ্রহে ভিন্ন মত মুখ্যমন্ত্রী-পুলিশের
গাঙ্গুলিবাগানে সাংবাদিক-নিগ্রহের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের বক্তব্যের সঙ্গে ফের তাঁরই অধীন কলকাতা পুলিশের লিখিত বিবৃতির ফারাক প্রকাশ্যে এল।
মঙ্গলবার সকালে গাঙ্গুলিবাগানে সিপিএমের জোনাল কার্যালয়ে হামলা এবং ওই তল্লাটে সাংবাদিক-নিগ্রহের অভিযোগ নিয়ে দুপুরে মহাকরণে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মিথ্যে কথা। সাজানো ঘটনা। সব পরিকল্পিত। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কিচ্ছু হয়নি।” এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যায় লালবাজারে কলকাতা পুলিশের তরফে ছাপানো বিবৃতিতে ভিন্ন বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। সিপিএমের পার্টিঅফিসে হামলার বিষয়টি পুলিশ না-মানলেও গাঙ্গুলিবাগানের অশোক রোডে ওই অফিসের বাইরে বন্ধ-সমর্থক ও বন্ধ-বিরোধীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষ ঘটে বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, পুলিশের বক্তব্য, ‘সাংবাদিক-নিগ্রহের ঘটনায় অপরাধীদের খোঁজার চেষ্টা চলছে’।
গাঙ্গুলিবাগানের ঘটনা নিয়ে ডিসি (সাউথ সাবার্বন) বিশ্বরূপ ঘোষ বলেন, “তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা ও স্টার আনন্দের তিন জন সাংবাদিক-আলোকচিত্রী আলাদা ভাবে নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রথম অভিযোগে বেশ কয়েক জনের নাম থাকলেও কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বলা হয়নি। দ্বিতীয় অভিযোগটি হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া, তৃণমূলের তরফে পুলক চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি সিপিএম সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছেন। তিনটি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” বিরোধী সিপিএম কী ভাবে এই পরস্পর-বিরোধী প্রশাসনিক বক্তব্যের সুযোগ নেয়, সেটাই দেখার।
সিপিএম অবশ্য তাদের জোনাল কার্যালয়ে তৃণমূলের ‘হামলা’ এবং সাংবাদিক-নিগ্রহের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে নিজের পুরনো কেন্দ্র যাদবপুরে এই প্রথম রাস্তায় নামতে দেখা যাবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। আজ, বুধবার যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিবাদ-মিছিলের আয়োজন করেছে প্রধান বিরোধী দল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুরই ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। সাধারণ ধর্মধট যে হেতু বিভিন্ন দলের অনুমোদিত ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন একসঙ্গে ডেকেছিল, তাই প্রতিবাদ মিছিলে সব রাজনৈতিক দলকেই যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী। তবে সিপিএমের তরফে গাঙ্গুলিবাগানের ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন।
যাদবপুরে মণীশ গুপ্তের কাছে হেরে যাওয়ার পরে তাঁর পুরনো কেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি বুদ্ধবাবুকে। বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে যাদবপুর এলাকায় তিনটি কলেজে হিংসার ঘটনায় এসএফআইয়ের ছাত্রছাত্রীরা আহত হওয়ার পরেও প্রাক্তন বিধায়ক হিসাবে বুদ্ধবাবু কেন ‘পাশে দাঁড়াতে’ যাননি, প্রশ্ন উঠেছিল সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে। তার পরে পরেই গাঙ্গুলিবাগানের ঘটনাকে ‘উপলক্ষ’ করে যাদবপুরের পথে নামতে চলেছেন বুদ্ধবাবু। তবে ভবানীপুর বিধানসভা এবং দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচারে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে রোড-শো করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুরে আজ বুদ্ধবাবুরা মুখ খোলেন কি না, সেই দিকে নজর রয়েছে তাঁর দলেরই কর্মী-সমর্থকদের।
গাঙ্গুলিবাগানের ঘটনার খবর পাওয়ার পরে এ দিন আলিমুদ্দিন থেকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য গৌতম দেব ও রবীন দেবকে। গৌতমবাবু দাবি করেন, “কলকাতা শহরে এই রকম ঘটনা ঘটিয়ে চলে যাবে! সন্ধ্যার মধ্যে ক্ষমা না-চাইলে এই নিয়ে অনেক দূর যাওয়া হবে! বুদ্ধদা’র নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার মিছিল হবে।”
তৃণমূলের জোট শরিক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী যে বলেছেন, সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা সাজানো, তা একেবারেই ঠিক নয়। ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, সাংবাদিকদের মারা হচ্ছে। এই নিন্দাজনক ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করা হোক।” তৃণমূলের প্রাক্তন জোটসঙ্গী এসইউসি-র শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা গাঙ্গুলিবাগানে হামলার নিন্দা করেছেন। নিন্দা করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.