শিল্প সূচকে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা
পরিকাঠামোয় বৃদ্ধি নেমে ০.৫ শতাংশ
লানিতে এসে ঠেকল দেশের পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধির হার। সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারিতে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.৫%। যেখানে ডিসেম্বরে তা ছিল ৩.১%। আর আগের বছরের একই সময়ে ৬.৪%। জানুয়ারির ওই হার প্রকৃত অর্থে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি মন্থর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকেই জোরালো করছে বলে মত শিল্পমহলের। পরিকাঠামোয় বৃদ্ধি এতটা নীচে নামার জেরে জানুয়ারিতে দেশের শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হারেও পতন দেখার আশঙ্কা করছেন প্রায় সকলেই। কারণ সামগ্রিক ভাবে শিল্পোৎপাদন সূচকের ৩৭.৯০ শতাংশই দখল করে আছে পরিকাঠামো শিল্পগুলি। যার মধ্যে পড়ছে আটটি ক্ষেত্র অশোধিত তেল, পেট্রো পণ্য, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার, কয়লা, বিদ্যুৎ, সিমেন্ট ও ইস্পাত।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে সব থেকে শোচনীয় অবস্থা প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের। এর উৎপাদন কমেছে ৮.৯%। অশোধিত তেল, পেট্রো পণ্য ও ইস্পাতের উৎপাদনও কমেছে যথাক্রমে ২%, ৪.৬% ও ২.৯%। যা সামগ্রিক ভাবে টেনে নামিয়েছে পরিকাঠামোয় বৃদ্ধির হারকে। তবে শুধু এই একটি মাসই নয়, গত এপ্রিল থেকে জানুয়ারি, অর্থাৎ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ১০ মাসের পরিকাঠামো বৃদ্ধিও পিছলে গিয়েছে। আগের বছরে একই সময়ের ৫.৭% থেকে ৪.১ শতাংশে।
স্বাভাবিক ভাবেই পরিকাঠামোয় বৃদ্ধির এই ধাক্কা খাওয়া শিল্পমহলের পাশাপাশি চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকেও।
এমনিতেই হাজারো সমস্যায় জেরবার তারা। সাম্প্রতিক কালে মূল্যবৃদ্ধিতে কিছুটা রাশ টানা সম্ভব হলেও, রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না-পারা বা আর্থিক বৃদ্ধির হারে আরও শ্লথতার সম্ভাবনার মতো একাধিক বিষয় এখনও তাদের অনেকটাই উদ্বেগে রেখেছে। গত বছর অক্টোবরেই শিল্পোৎপাদনের হার শূন্যের থেকে ৪.৭% (সংশোধিত পরিসংখ্যান) নীচে নেমে যাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে উঠেছিল সমস্ত পক্ষই। শিল্পমহল দাবি জানিয়েছিল, এর পর অন্তত ক্রমাগত সুদ বাড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের পথ থেকে সরে আসুক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বৃদ্ধির হারে ধস নামা রুখতে একই মতের শরিক হয়েছিল কেন্দ্রও। তার পর গত ডিসেম্বরেই অবশ্য কিছুটা শুধরে শিল্প বৃদ্ধির হার ছোঁয় ১.৮%। ওই মাসে পরিকাঠামো বৃদ্ধির হারও ৩.১% হওয়ায় পরিস্থিতি শোধরাবে বলে আশা করেছিল কেন্দ্র থেকে শুরু করে সকলেই। কিন্তু জানুয়ারিতেই ফের পরিকাঠামোর বৃদ্ধি দু’মাসের মধ্যে নীচে নেমে যাওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে তারা। কারণ ১২ মার্চ জানুয়ারির শিল্প বৃদ্ধির খতিয়ান প্রকাশ হওয়ার কথা। যেখানে পরিকাঠামোয় বৃদ্ধি হ্রাসের প্রতিফলন দেখা যেতে পারে, ইঙ্গিত সংশ্লিষ্ট মহলের।
শিল্পমহল মনে করছে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তাও এ বার এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ল। যেমন, বণিকসভা ফিকি-র সেক্রেটারি জেনারেল রাজীব কুমারের আশঙ্কা, জানুয়ারিতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার এতটা নীচে নেমে যাওয়া এক অর্থে আগামী দিনে আর্থিক বৃদ্ধি আরও কমারই ইঙ্গিত। ইতিমধ্যেই জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, এই তিন মাসে জাতীয় আয়ের বৃদ্ধির হার ঠেকেছে ৬.৯ শতাংশে। গত ন’টি ত্রৈমাসিকের মধ্যে যা ন্যূনতম। কুমার বলেন, “অর্থনীতির আরও অবনতি আটকাতে যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটা উচিত।”
তবে এই হতাশাজনক পরিসংখ্যানের মধ্যেও আশা জাগিয়ে উৎপাদন বেড়েছে পরিকাঠামো শিল্পের চারটি ক্ষেত্রে। এগুলি হল, বিদ্যুৎ, সিমেন্ট, কয়লা ও সার। এই ক্ষেত্রগুলি নিয়েও এ যাবৎ যথেষ্ট উদ্বেগে ছিল শিল্পমহল ও কেন্দ্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.