শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘট
উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতি বেসরকারি ক্ষেত্রে
সাধারণ ধর্মঘটে উৎপাদন ব্যাহত হল রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের বেসরকারি সংস্থাগুলির। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত কল-কারখানায় প্রায় স্বাভাবিক উৎপাদন হয়েছে। কাজ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত খনিগুলিতে। স্বাভাবিক ছিল কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরও। ধর্মঘট সফল করার জন্য শাসক এবং ব্যর্থ করার জন্য বিরোধীদু’পক্ষের বিরুদ্ধেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় সব রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানায় এ দিন উৎপাদন স্বাভাবিক ছিল। বার্নপুরের ইস্কো কারখানায় কর্মী-উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল বলে কারখানা সূত্রের খবর। সিটু এবং আইএনটিইউসি নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূলের ‘হুমকি’তে আগের রাতে কারখানায় থেকে গিয়েছেন শ্রমিক-কর্মীরা। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে স্বাভাবিক উৎপাদন হয়েছে। ৮০%-র বেশি কর্মী হাজির ছিলেন। দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডে হাজির ছিলেন ৭০% কর্মী। অন্য দিনের মতো হাজিরা ছিল মিশ্র ইস্পাত কারখানাতেও।
আসানসোলের রাষ্ট্রায়ত্ত কোলিয়ারিগুলিতে ধর্মঘটের বিশেষ প্রভাব পড়েনি। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “কর্মী-উপস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক ছিল। কয়েকটি খনিতে সকালের দিকে সামান্য উৎপাদন ব্যাহত হলেও পরে ঠিক হয়ে গিয়েছে।” স্বাভাবিক কাজ হয়েছে ফরাক্কা, কোলাঘাট ও বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রেও। ডুয়ার্স ও তরাইয়ে মোট চা বাগানের প্রায় অর্ধেক খোলা ছিল বলে প্রশাসনের দাবি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, “বেলা বাড়ার পরে বেশির ভাগ চা বাগানে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন।”
হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েলে কর্মী-উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালে হাজিরায় সামান্য ঘাটতি থাকলেও উৎপাদন ব্যাহত হয়নি বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি। হলদিয়া বন্দরে সকাল ৬টার শিফ্টে তুলনামূলক কম কর্মী থাকলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়। তৃণমূলের রাজ্য যুব সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “আগে লক্ষ্মণ শেঠরা হলদিয়ায় গা-জোয়ারি ধর্মঘট করতেন। এ বার তা ব্যর্থ হয়েছে।” সিটুর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতা সুদর্শন মান্নার বক্তব্য, “ধর্মঘটে বাস চলেনি। রাস্তাও ফাঁকা ছিল। তা হলে কারখানায় কী ভাবে হাজির হলেন কর্মীরা!”
কল্যাণী শিল্পাঞ্চলে হাজিরা কম থাকায় উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষগুলি। এই অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি চালু বেসরকারি কারখানা রয়েছে। ‘কল্যাণী চেম্বার অফ কমার্স’-এর সম্পাদক মদন সিংহের দাবি, “এ দিন স্বাভাবিকের থেকে ২০ শতাংশ কম উৎপাদন হয়েছে।” হাওড়া, ব্যারাকপুর ও খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে এ দিন অধিকাংশ কারখানা খোলা থাকলেও কর্মী-উপস্থিতি ছিল কম। তবে হাওড়া ও ব্যারাকপুরের অধিকাংশ জুটমিলে কাজ হয়নি। নৈহাটির হুকুমচাঁদ জুটমিলের মুখপাত্র এস কে চন্দ্র জানান, তাঁদের এক-একটি শিফ্টে প্রায় পাঁচ হাজার করে শ্রমিক থাকেন। এ দিন বিভিন্ন শিফ্টে সব মিলিয়ে জনা পঞ্চাশ এসেছিলেন। তাই উৎপাদন সম্ভব হয়নি। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী তথা সিটু নেতা রণজিৎ কুণ্ডুর অভিযোগ, “তৃণমূলের লোকজন শ্রমিকদের কাজে আসার জন্য হুমকি দিলেও মিলগুলিতে কাজ হয়নি।” ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ অবশ্য হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে মোটের উপরে দক্ষিণবঙ্গের বেসরকারি শিল্প সংস্থাগুলিতে কর্মী কম আসায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে দাবি ‘সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর। ওই বণিকসভার সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, “বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া ও হাওড়াদক্ষিণবঙ্গের এই পাঁচটি জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েকশো শিল্প সংস্থা রয়েছে। যাতায়াতের অসুবিধা থাকায় বেশির ভাগ শ্রমিক-কর্মী আসতে পারেননি। সব মিলিয়ে এ দিন একশো কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.