সাধারণ ধর্মঘটের দিন কেতুগ্রামে সিপিএম অফিসে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কান্দরা থেকে কাটোয়ামুখী এক দল লোক মোটরবাইক নিয়ে কাটোয়া-বোলপুর রাস্তা ধরে যাচ্ছিল। কেতুগ্রামের চড়খি গ্রামে ওই রাস্তার উপরে সিপিএমের একটি পার্টি অফিসে ঢুকে তারা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএমের অভিযোগ, প্রায় ষাটটি মোটারবাইক চড়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। ঘটনার সময়ে ওই কার্যালয়ে ছিলেন স্থানীয় ডিওয়াইএফ নেতা সুভাষচন্দ্র পাল, কৃষকসভার নেতা অরূপ ঘোষ-সহ জনা পাঁচেক। অরূপবাবুদের অভিযোগ, “আমরা অফিসের মধ্যে বসেছিলাম। দুষ্কৃতীরা প্রথমে দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দেয়। তার পরে ভিতরে ঢুকে আমাদের মারধর শুরু করে। আমরা ছুটে বেরিয়ে যাই। ভিতরে আলমারি, চেয়ার-টেবিল যথেচ্ছ ভাঙচুর করে রাস্তার উপরে ফেলে দেয় ওই সব দুষ্কৃতীরা।” |
এলাকার বাসিন্দা ইয়ার আলি শেখ, পূর্ণিমা মাজিদের দাবি, “যারা হামলা চালায় তারা বহিরাগত। হামলার পরে তারা আবার কান্দরার দিকে চলে যায়।” সিপিএমের কেতুগ্রাম ২ লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক তমাল মাজির অভিযোগ, “পুরো ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশের সামনে। এলাকার লোকজন বারবার বলা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” পুলিশ এমন অভিযোগ মানতে চায়নি।
তৃণমূল অবশ্য হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ মানতে চায়নি। কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতাদের পাল্টা অভিযোগ, চড়খি গ্রামে প্রথমে তাদের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে সিপিএমের লোকজন। পরে নজর ফেরাতে নিজেরাই নিজেদের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। সিপিএমের পাল্টা দাবি, কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর, মঙ্গলকোটের নতুনহাট-সহ বেশ কিছু এলাকায় বন্ধ সমর্থকদের মারধর করে দোকানপাট ভাঙচুর করেছে তৃণমূলের লোকজন। পুলিশ জানায়, সিপিএম অফিসে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এ দিন সকালে কালনার ধাত্রীগ্রাম, মালতিপুর, নিভুজিবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন ধর্মঘটের সমর্থকেরা। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে মিনিট পনেরোর মধ্যে অবরোধ উঠে যায়। কালনা থানার পুলিশ জোর করে রাস্তায় যানবাহন রুখতে যাওয়ার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করে। সকাল ৮টা নাগাদ অম্বিকা-কালনা স্টেশনে রেল অবরোধও করা হয়। প্রায় ২০ মিনিট পরে অবরোধ ওঠে। মন্তেশ্বরের ভাগরামূলগ্রাম পঞ্চায়েতের হাদাই মোড়ে অবরোধ হয়। মন্তেশ্বরের বাঘাসন পঞ্চায়েতের পুল গ্রামে একশো দিনের কাজে যাওয়ায় বন্ধ সমর্থকদের সঙ্গে কিছু খেতমজুরের বচসা বাধে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা মিটে যায়। |