গাফিলতিতে মৃত্যু শিশুর, তদন্ত শুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
আট মাসের এক শিশুর মৃত্যুর পরে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকাল দশটার সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অংশুমান সাহা নামে এই শিশুটিকে। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল। ওই শিশুর বাবা নবদ্বীপ পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদিক পাড়ার বাসিন্দা বিমল সাহা হাসপাতালের কয়েকজন নার্সের বিরুদ্ধে তাঁদের সঙ্গে দুর্বব্যহারের অভিযোগও করেছেন। ওই দিন বিকেল চারটে নাগাদ ওই শিশুটির মৃত্যু হয়। তারপরেই অংশুমানের বাড়ির লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে অন্য রোগীর আত্মীয়স্বজনের মধ্যেও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিমলবাবু বলেন, “আমার ছেলেকে ভর্তি করানোর দু’ঘণ্টা পরেও তার চিকিৎসা করা হয়নি। নার্সদের কেউ কেউ দুর্ব্যবহার করেছেন আমাদের সঙ্গে।” তাঁর দাবি, “আমার ছেলেকে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। নার্সরা এসে অক্সিজেনের সিলিন্ডারের নলটা আমাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। আমরা তখন বাধ্য হয়ে ওই অক্সিজেনের নলটি কোনও রকমে ব্যবহার করতে পেরেছি।” তাঁর বক্তব্য, “আমার ছেলেকে শেষপর্যন্ত ডাক্তারবাবুরা যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা মানতেও ঢিলেমি করেছেন নার্সেরা। তাঁরা অভব্য আচরণ করেছেন আমাদের সঙ্গে।” অংশুমানের দিদিমা অণিমা সাহা বলেন, “ভর্তি করানোর পরে দু’ঘণ্টা কেটে গিয়েছে কিন্তু কেউ আমার নাতির প্রয়োজনীয় চিকিৎসাটুকু করেননি। তারপরে স্যালাইন চালু করা হয়। কিন্তু আমরা চিকিৎসকদের কাছে যেতে চাইলেও কোনও লাভ হয়নি।”
হাসপাতালের সুপার স্বপনকুমার দাস বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন হাসপাতালের নার্সিং সুপার এবং দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁদের রিপোর্ট পেলে বলতে পারব কেন এমন হল।” তিনি বলেন, “ওই শিশুটিকে জরুরি বিভাগে দেখানোর পরে শিশু চিকিৎসক মৃন্ময় সেনের তত্ত্বাবধানে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। পরে তাকে দেখেন আর এক শিশু বিশেষজ্ঞ নির্মলকুমার ইন্দ্র।”
নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা সদর মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, “সোমবার আমি ওই শিশুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। তারপরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।”
|