শতাধিক চিকিৎসক পদ শূন্য, সমস্যা পশ্চিমে
জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এই পরিস্থিতিতে ‘গোদের উপর বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে চিকিৎসকের শূন্যপদের বিষয়টি। যেখানে নতুন পদ সৃষ্টির আশু প্রয়োজন, সেখানে আগের অনুমোদিত বহু পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য! প্রশাসনিক-স্তরে এই সব শূন্যপদ পূরণের তেমন উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পরিষেবা আরও ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একশোরও বেশি চিকিৎসক-পদ শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। এর ফলে মাঝেমধ্যেই পরিষেবা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। সমস্যার কথা মেনেই পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবেন।” পাশাপাশি, তাঁর বক্তব্য, “কর্মীর অভাবে যাতে পরিষেবা ব্যাহত না হয়, সে দিকে সব সময়েই নজর রাখা হয়।”
এমনিতেই ‘পিছিয়ে পড়া’ তকমা এই জেলার। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জঙ্গলমহল। এখানে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যেই নানা অভিযোগ ওঠে। অনেক জায়গায় গ্রামীণ স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাও ‘দুর্বল’ বলে অভিযোগ। ফলে, রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরেরও বক্তব্য, পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যার জন্যই সব জায়গায় প্রয়োজনীয় পরিবেষা মেলে না। ওই দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “পরিকাঠামোর অভাব তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে রয়েছে কর্মীর অভাব। ফলে, চাইলেও গ্রামীণ হাসপাতালে সব পরিষেবা চালু করা সম্ভব নয়।” জেলার ৪টি মহকুমায় ২৯টি ব্লক রয়েছে। এই ব্লকগুলিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সব মিলিয়ে ৮২টি। মেদিনীপুরে (সদর) ১৫টি, ঝাড়গ্রামে ২৫টি, খড়্গপুরে ২৭টি ও ঘাটালে ১৫টি। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে ২০টি। অন্য দিকে, গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে ৯টি। এর মধ্যে মেদিনীপুরে ৩টি, ঝাড়গ্রামে একটি, খড়্গপুরে ৩টি এবং ঘাটালে দু’টি।
ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালকেও জেলা হাসপাতালে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। যদিও এ সব ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত সমস্যা সেই রয়েই যাচ্ছে। নানা রকম ঘোষণা হচ্ছে, কিন্তু পরিকাঠামোগত উন্নতির বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না বলেই অভিযোগ। চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকলে যে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তেই হবে, তা বলছেন একাংশ স্বাস্থ্য-কর্তাই। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “খড়্গপুরের মতো মহকুমা হাসপাতালে এখনও চিকিৎসকের অভাবে সমস্যা দেখা দেয়। এক জন চিকিৎসক ছুটিতে থাকলে সপ্তাহে এক দিন বহির্বিভাগ বন্ধ রাখতে হয়, এমন ঘটনাও ঘটে।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ৩৮৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা (মেডিক্যাল কলেজ বাদে)। রয়েছেন ২৭৯ জন। অর্থাৎ ১০৮টি পদ শূন্য। একই পরিস্থিতি নার্স, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর ক্ষেত্রেও। নার্স থাকার কথা ৫৭৭ জন। রয়েছেন ৫০১ জন। ফার্মাসিস্ট থাকার কথা ১৩৮ জন। রয়েছেন ১২৪ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অনুমোদিত পদ ৯১৮টি। কর্মী রয়েছেন মাত্র ৬৫৭ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “পরিস্থিতি যা তাতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু শূন্যপদই তো পূরণ হচ্ছে না!” এ জন্য স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ অবশ্য দুষছে বামফ্রন্ট সরকারকেই। তাদের অভিযোগ, ওই সরকারের উদ্যোগের অভাবেই এই পরিস্থিতি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কোন ক্ষেত্রে কত পদ শূন্য রয়েছে, তার তালিকা নতুন সরকারের আমলে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে আপাতত যা পরিকাঠামো রয়েছে তার মধ্যেই কাজ করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.