ইন্দিরা গাঁধীর বিশ দফা কর্মসূচি নতুন ভাবে ফিরে আসতে চলেছে রাজ্যে।
কৃষি ও গ্রামীণ এলাকায় স্থায়ী পরিকাঠামোগত সম্পদ গড়া এবং বেকারদের হাতে কাজ পৌঁছে দিতে ১৯৭৫ সালে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। পরে ১৯৮২ সালে বিশ দফা কর্মসূচিকে ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। রাজ্যে ওই প্রকল্পগুলির কাজ করার দায়িত্ব পেয়েছিল কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্র। এ বার পশ্চিমবঙ্গ-সহ মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো মোট ছ’টি রাজ্যে ওই প্রকল্প নতুন করে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্রকে অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইউপিএ সরকার।
ইউপিএ সরকারের দ্বিতীয় পর্বে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যসভায় ও লোকসভায় বারবার সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সাংসদরা। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কৃষি বিকাশ কেন্দ্রগুলি যাতে আবার খোলা সম্ভব হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় রাশিবিজ্ঞান ও প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ওই প্রকল্পের রূপায়ণের দায়িত্বে থাকবে কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্রই।
ওই সংস্থার কর্ণধার তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এর ফলে ওই সাড়ে ছ’হাজার কর্মী কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী হিসাবে গণ্য হবেন। আর যে কর্মীদের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারের এক জনকে সেই জায়গায় নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।” এক সময়ে রাজ্যের প্রায় ২০৪টি ব্লকে তাদের দফতর থাকলেও বাম সরকারের অসহযোগিতায় ধীরে ধীরে কাজ বন্ধ হয়ে যেতে থাকে বলে অভিযোগ তরুণবাবুর । তাঁর অভিযোগ, “হরিয়ানা, মেঘালয়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পঞ্জাবের মতো কংগ্রেসি সরকারের রাজ্যে বিশ দফা কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা স্বেচ্ছাসেবকদের রাজ্য সরকারের কর্মচারী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ রাজ্যে তা কিছুই হয়নি। চরম দুর্দশায় পড়তে হয় প্রায় ৬৫০০ কর্মীকে।”
এ রাজ্যে বিশ দফা কমর্সূচি রূপায়ণ কে করবে, সেই দাবি নিয়ে এক সময়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্র-সহ একাধিক সংস্থা। হাইকোর্ট হয়ে সেই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। তরুণবাবুর দাবি, “আমাদের সংস্থাই প্রকৃত সংস্থা। সুপ্রিম কোর্টও সেই কথাই জানিয়েছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সমস্ত বৈঠকে আমাকেই ডাকা হয়ে থাকে। এ বারেও তাই হয়েছে।” |