লক্ষ্মী-সঞ্জীবের দাপটে সহজ ম্যাচে কঠিন জয়
কান ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে যাওয়া বোধহয় একেই বলে!
একে পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিপক্ষ, তায় ‘দুধুভাতু’ ত্রিপুরা। পূর্বাঞ্চলের দরবারে যারা বরাবরের অজ্ঞাতকুলশীল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধেই কি না কেঁদেকেটে একশা হতে হল বাংলাকে! ৩০ রানে জয় শেষ পর্যন্ত এল বটে, কিন্তু এই জয় কষ্টার্জিত জয়। বিজয় হাজারের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিটও হাতে এল ঠিকই, কিন্তু একরাশ অশনিসঙ্কেত জুড়ে থাকল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিমের সঙ্গে।
ব্যাটিং অর্ডারে একটু ওলট-পালট এবং ভরাডুবি। ওড়িশা-ঝাড়খণ্ড ম্যাচে যে সব বাংলা ব্যাটসম্যানকে পরীক্ষায় বসতে হয়নি, তাঁরাই রবিবার টপ অর্ডারে নামলেন। পরিণাম, ডাহা ফেল। তবু ত্রিপুরার মতো টিমের বিরুদ্ধে মাত্র ১৯৮ তুলে বাংলা ব্যাটিংয়ের সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার যুক্তি কোথায়? আর বিপক্ষকে ৮০-৮ করে দেওয়ার পরেও কেন তৈরি হবে অহেতুক রক্তচাপ? স্কোর কেন যাবে ১৬৮-তে? বাংলার জাহাজ আজ ডুবতেও পারত। ডুবল না, দু’টো কারণের জন্য। এক, হাজার হলেও দলটার নাম ত্রিপুরা। যাদের কি না মাঝে-মধ্যে ছোটখাটো ঝড় তোলার শক্তি থাকলেও তাকে ঘুর্ণিঝড়ে বদলানোর সাধ্য নেই। আর কারণ নম্বর দুই, বাংলার জোড়া নায়ক।
এ বার জেতালেন বোলার লক্ষ্মী। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
এক জনকে গোটা বাংলা চেনে। দু’দিন আগেই যিনি ইডেনে দুর্ধর্ষ ১৫১ করে শিরোনামে। তিনি লক্ষ্মীরতন শুক্ল। এ দিন ব্যাট চলল না, কিন্তু বল হাতে ঠিক এল চার উইকেট। আর দ্বিতীয় জনকে তো ভুলতেই বসেছিল বাংলা। ক’জনের আর মনে পড়ে সঞ্জীব সান্যালের নাম? বাংলার জার্সিতে নামলেন বছর পাঁচেক বাদে, আর নেমেই কিস্তিমাত। নামের পাশে তাঁরও চারটে উইকেট এবং ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্রেক থ্রু’-টা তাঁরই দেওয়া। শেষ দিকে ত্রিপুরার মোরা সিংহ (৬৬) যে ভাবে চেপে বসেছিলেন সৌরাশিসদের উপর, ভয় ক্রমশ বাড়ছিল।
হাতে একে পুঁজি কম। দলের দুই নিয়মিত পেসার অশোক দিন্দা এবং সামি আহমেদ বিশ্রামে। কাজটা সহজ ছিল না লক্ষ্মী-সঞ্জীবের। কিন্তু বাংলার আকাশে যখন ‘শুক্লপক্ষ’ চলছে, তখন লক্ষ্মীকে আর রোখে কে? ওভারে নিয়ম করে একটা-দু’টো উইকেট। সঙ্গে পাল্লা দিলেন আবার সঞ্জীব। এক, দুই করে দেখতে-দেখতে ত্রিপুরা ৮০-৮! ওই অবস্থা থেকেও যখন বাংলা ফের বিপদে, তখন আবার সঞ্জীব ফিরলেন। সঙ্গে ‘সঞ্জীবনী’ মন্ত্র নিয়ে।
তবে তাতেও ঢাকা পড়ছে না ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন। বরং আওয়াজ উঠছে, ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডার একটু বদলে দিতেই এই দশা? শুভময় দাস দিনের প্রথম বলে বোল্ড। সৌরভও ফিরলেন তাড়াতাড়ি (৮)। লক্ষ্মী-ঋদ্ধির আগে পাঠানো হল দেবব্রত দাস (২৪), অর্ণব নন্দীকে (৮)। কিন্তু তাঁরা শুধু হতাশাই বাড়ালেন। সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠের উইকেটে যে ভয়ঙ্কর কিছু ছিল না, সেটা ঋদ্ধিমানের (৬৬) দাপুটে হাফসেঞ্চুরি থেকে স্পষ্ট। ম্যাচ শেষে লক্ষ্মী বলছিলেন, “ব্যাটিংয়ে উন্নতি না করলে পরে বিপদ আছে।”
ভুল বলেননি লক্ষ্মী। নক আউটের ময়দানে কিন্তু কোনও ত্রিপুরা নেই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলা: ১৯৮ (ঋদ্ধি ৬৬, শ্রীবৎস ২৯, রানা দত্ত ৩-৪০)
ত্রিপুরা ১৬৮ (মোরা সিংহ ৬৬, লক্ষ্মী ৪-৩৭, সঞ্জীব ৪-৩৩, সৌরভ ১-১৪)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.