বিদেশের মাঠে ভারতীয় ক্রিকেটের কুৎসিৎতম বিপর্যয়ের প্রথম বলি যিনি হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে, তিনি অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নন। কোচ ডানকান ফ্লেচার নন। তাঁর নাম বীরেন্দ্র সহবাগ। অধিনায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলে যিনি ক’দিন আগে মহাবিতর্ক বাধিয়েছিলেন।
আগামী বুধবার মুম্বইয়ে এশিয়া কাপের দল বাছতে বসছে শ্রীকান্তের জাতীয় নির্বাচক কমিটি। বাংলাদেশে ১২-২২ মার্চ অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টে যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে চলেছে ভারত। তরুণ রক্তে উজ্জীবীত পাকিস্তানকে খেলতে হবে। শ্রীলঙ্কাকে খেলতে হবে। এ দিকে বিশ্বজয়ী টিমের এমন বিপর্যস্ত অবস্থা! রাতারাতি অভাবনীয় কোনও নাটক ঘটে না গেলে এশিয়া কাপে ধোনিই টস করতে নামছেন। সহ-অধিনায়ক সহবাগকে নিয়ে ঠিক ততটাই অনিশ্চয়তা। রবিবার বল হাতে তিনটে উইকেট পেলেও ব্যাট হাতে করলেন মাত্র ৫। ত্রিদেশীয় সিরিজে পাঁচ ম্যাচে তাঁর মোট সংগ্রহ ৩৫। গড় ১০-এরও কম। কারও কারও মনে হচ্ছে, সহবাগ পুরো ফিট নেই। কে বলবে দেশের মাটিতে শেষ সিরিজে সহবাগ ডাবল সেঞ্চুরি করে নয়া রেকর্ড গড়েছেন! বিদেশে টানা বিপর্যয়ের ধাক্কায় সে সব এখন অতীত। তার ওপর অধিনায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিতর্ক তৈরি করায় বোর্ড কর্তারা খুব প্রসন্ন হননি। চোট থাকা সত্ত্বেও জাহির খানকে কেন অস্ট্রেলিয়ায় রেখে দেওয়া হল তা নিয়েও সভা উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা। নির্বাচকেরা বোর্ডকে বলতে পারেন ফিটনেস নিয়ে স্বচ্ছতা দেখাক টিম ম্যানেজমেন্ট। ধরে নেওয়া হচ্ছে সচিন তেন্ডুলকর এশিয়া কাপে যাবেন না। তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলার মতো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হবে না।
প্রশ্ন উঠছে সুরেশ রায়নার মতো তরুণদের মনোভাব নিয়েও। ধোনি মুকুট রক্ষা করলেও তাঁকে নিয়ে শ্রীকান্তের কমিটির সবাই খুব গদগদ এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং অনেকেরই ভাল লাগছে না যেভাবে বার-বার ব্যর্থ হওয়ার পরেও রায়নাকে তিনি খেলিয়ে যাচ্ছেন। মনোজ তিওয়ারিকে যে ভাবে অবজ্ঞা করে যাচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে, সহবাগের বদলি হিসেবে অজিঙ্ক রাহানেকে না হয় নেওয়া গেল। জাহিরকে বিশ্রাম দিয়ে পাঠানো গেল অশোক দিন্দাকে আসন্ন আইপিএলে সৌরভের পুণে ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলা যাঁর মোটামুটি পাকা হয়ে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু রায়না-রোহিত শর্মাদের ঢালাও বাদ দিলে খেলানো হবে কাদের? গুরু গ্রেগের জমানায় ২০০৭ বিশ্বকাপ-বিপর্যয় মনে পড়ে যাচ্ছে কারও কারও। এক বোর্ড কর্তা এ দিন মনে করিয়ে দিলেন, “বিপর্যয়ের পর আমাদের একটা বাংলাদেশ সফর থাকে। আর তাতে কঠিন কঠিন সব সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” তফাত হচ্ছে, এটা দশ মাস আগে মুম্বইয়ে বিশ্বকাপ হাতে তোলা টিম!
|