হেরে গিয়ে ভারতের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওঠা ঘোর অনিশ্চিত হয়ে পড়লে কী হবে, সচিন তেন্ডুলকরের রান আউট নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক।
যখন ম্যাচ শেষে সচিনের বিতর্কিত রান আউট নিয়ে ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সাফ জানিয়ে দেন, সচিনের রান নেওয়ার রাস্তায় লি ও ভাবে কখনওই দাঁড়াতে পারেন না। “লি পয়েন্টের ফিল্ডারের দিকে যাচ্ছিল, এটা যুক্তি বলে আমি অন্তত মেনে নিতে পারছি না। ও ভাবে সচিনের রান নেওয়ার রাস্তায় লি-র দাঁড়িয়ে পড়া একেবারেই ঠিক হয়নি। সে জন্যই সচিনকে অনেক লম্বা রুটে রানটা নিতে হচ্ছিল। যে জন্য রান আউটটা হল।” ধোনি আরও জানাচ্ছেন, এভাবে রান আউট হওয়ায় সচিন হতাশ। “লি রান নেওয়ার রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও আউট দেওয়া নিয়ে হতাশ সচিন,” বক্তব্য ত্যঁর। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় হাত দিয়ে বল থামানোর জন্য ডেভিড হাসিকে আউট দেওয়া উচিত ছিল বলেও মনে করেন ধোনি। “দুটো ক্ষেত্রেই আমাদের ভুগতে হয়েছে,” রীতিমতো আক্রমণাত্মক মেজাজে বলেছেন ভারত অধিনায়ক।
|
সপ্তম ওভারের শেষ বলে পয়েন্টে ঠেলে সিঙ্গলসের জন্য নন স্ট্রাইকার সচিনকে ডাকেন গম্ভীর। সচিন যখন ক্রিজে পৌঁছনোর একেবারে শেষ পথে, তখনই সামনে আবিষ্কার করেন ব্রেট লি-র পিঠ। সামান্য ঘুরে রানটা শেষ করার আগেই ওয়ার্নারের সরাসরি থ্রো উইকেট ভেঙে দেয়। এ ক্ষেত্রে সচিনকে আউট দেন আম্পায়ার সাইমন টফেল, অথচ অন্য আম্পায়ার বিলি বাউডেন ঘটনার অনেক কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিলেন। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ধোনি বলছেন, “প্রায় এক গজ সচিনকে বাড়তি দৌড়তে হয়েছিল। বিলি কিছু বলতেই পারত, কারণ অনেক ভাল ভাবে ও ব্যাপারটা দেখার জায়গায় ছিল। সাইমনের পক্ষে বোঝা অসম্ভব সচিন কোন অ্যাঙ্গেলে দৌড়চ্ছিল আর কোথায় লি দাঁড়িয়ে পড়ে ওকে বাধা দিয়েছিল।”
|
রান নেওয়ার সময় গ্রেট ম্যান সচিনকে আমি কোনও দিনই ইচ্ছাকৃত ভাবে আটকাব না।
ব্রেট লি |
|
সচিনের রান নেওয়ার রাস্তায় লি-র দাঁড়িয়ে পড়া ঠিক হয়নি। যে জন্য রান আউটটা হল।
ধোনি |
|
দিনের শুরুটা অবশ্য সচিনের জন্য সম্পূর্ণ অন্য রকম ছিল। এর আগে কোনও বিদেশি ক্রিকেটারের ভাগ্যে যা জোটেনি, তা-ই পেলেন তিনি। প্রথম বিদেশি হিসেবে সচিন পেলেন সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড বা এসসিজি-র আজীবন সদস্য পদ। এ দিন অস্ট্রেলীয় বোর্ডের এক অনুষ্ঠানে সচিনের হাতে ডন ব্র্যাডম্যানের আবক্ষ মূর্তিও তুলে দেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মার্ক টেলর। এসসিজি-তে টেস্টে সচিনের ব্যাটিং গড় ১৫৭, এর মধ্যে আছে ২০০৪-এ টেস্টে করা ডাবল সেঞ্চুরি। সচিনকে সম্মানিত করতে গিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস-এর প্রধান ব্যারি ও’ফারেল বলেন, “সর্বকালের সেরাদের মধ্যে অন্যতম সচিন। আর সচিন নিজেই তো জানিয়েছেন, ভারতের মাঠগুলোর বাইরে এসসিজি-ই ওঁর প্রিয়তম মাঠ এবং এখানে ওঁর রেকর্ডও দুর্দান্ত।” এখানে পাঁচটি টেস্ট খেলে সচিন করেছেন ৭৮৫ রান, গড় ১৫৭ আর সাতটি ওয়ান ডে খেলে আছে ৩০১ রান, গড় ৬০.২০। কিন্তু সম্ভবত সিডনিতে জীবনের শেষ ইনিংসটা সচিনের জন্য আদৌ স্মরণীয় হয়ে থাকল না।
এ দিনের বিতর্ক শুধু সচিনেই থেমে থাকেনি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় বিতর্কে জড়ান ডেভিড হাসিও। হাসিকে আম্পায়ার বিলি বাউডেনের ‘হ্যান্ডলিং দ্য বল’ আউট না দেওয়া নিয়েও সরব ধোনি। বলেছেন, “ওকে আউট দেওয়া হয়নি বলে হাসি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতে পারে। ও মুখ বাঁচাচ্ছিল বলতে পারে, কিন্তু মুখের থেকে হাত অনেক দূরে ছিল। ওকে কেন আউট দেওয়া হয়নি আমি জানি না।” অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ২৪তম ওভারে ম্যাথু ওয়েডের কল-এ সাড়া দিয়ে রান নিচ্ছিলেন হাসি। রান শেষ করার সময় মুখ বাঁচাতে বলকে হাত দিয়ে থামান।
|