অবিলম্বে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ভারতের অধিনায়কত্ব থেকে সরানো উচিত। শুধু টেস্টে নয়, ওয়ান ডে-তে এবং টি-টোয়েন্টিতেও। ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থেই এটা করা দরকার। এশিয়া কাপ দল নির্বাচন বুধবার। সে দিনই নতুন অধিনায়ক হিসেবে গম্ভীর বা কোহলিকে বেছে নেওয়া হোক। গম্ভীরের উপর বিদেশে সফল হওয়া নিয়ে যদি আস্থা না থাকে, তা হলে বিরাট। ২০১৫-র বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হওয়ার সময় ওকে দেওয়া দরকার।
টেস্ট সিরিজে বিদেশে টানা আটটা হার ছেড়েই দিলাম। ত্রিদেশীয় সিরিজে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এ কি হাল! কপিলের টিম তিরাশিতে বিশ্বকাপ জিতেছিল। তার পর দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ০-৫ হেরেছিল। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ্টেন্সি গিয়েছিল কপিলের। তা হলে ধোনিরই বা যাবে না কেন? তা ছাড়া এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, সিনিয়রদের ওর প্রতি আর সেই শ্রদ্ধা নেই। ক্রিকেট ‘রিদম’-এর খেলা। সেটাই ধোনি ভেঙে দিল। সচিন ৪৮ করল, পরের ম্যাচটা বসিয়ে দিল। গম্ভীরের ক্ষেত্রেও তাই। তার পর বলল, টপ অর্ডারের কেউ ছ’নম্বরে পারে না বলে ধোনি নিজে তিনে যায় না। আর সিনিয়ররা খেললে ২০ রান বাড়তি যায় এটা বলেও ও টিমের কোনও উপকার করেনি। দ্বিতীয়ত, রায়না কী করে দিনের পর দিন ব্যর্থ হয়েও খেলে গেল, তার জবাবদিহি ধোনিকে করতে হবে। ১৪২-টা ওয়ান ডে খেলেছে রায়না। কোহলি-রোহিতকেও বলা যায় না সুযোগ পায়নি। সেখানে কী অপরাধ মনোজ তিওয়ারির? যে শেষ ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরি করেও অস্ট্রেলিয়ায় সাতটা ম্যাচের একটাতেও সুযোগ পেল না? ফর্মে থাকা একটা ছেলে দেড় মাস বসে রইল, কারণ ক্যাপ্টেন ধোনি কিছুতেই রায়না বা রোহিতের বাইরে ভাবতে পারে না।
|
আমি বুঝতে পারছি না পার্থিব পটেল ওখানে, আর ঋদ্ধিমান এখানে কেন? ঋদ্ধি এখন দেশের এক নম্বর উইকেটকিপার। কেন ওয়ান ডে-তে ওকে ভাবা হবে না? দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অশোক দিন্দা কোথায় বিনয় কুমারদের চেয়ে পিছিয়ে? এশিয়া কাপ দলে অবশ্যই দিন্দার থাকা উচিত। আমি দেখতে চাই এই বিপর্যয়ের পরে এশিয়া কাপের দলেও রায়না থাকে কি না। তিন নির্বাচক অস্ট্রেলিয়ায় বসে কী করছে? আমার মতে, রঞ্জি ট্রফি খেলা কারওর জাতীয় নির্বাচক হওয়ার অধিকার থাকা উচিত নয়। কারণ তার পক্ষে ভারী ভারী নামের সামনে কথা বলতে অসুবিধে হয়। একজন টেস্ট ক্রিকেটার যে ভাবে বলতে পারে, সেটা রঞ্জি খেলা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। এখন নির্বাচকেরা বছরে ৪০ লক্ষ টাকা পান, টিম এ ভাবে ডোবালে শ্রীকান্তের কমিটি কেন দায় নেবে না? নিজে নির্বাচক ছিলাম বলে জানি, ওখানে নিজেদের ছেলেদের জন্য ঝগড়া করতে হয়, যুদ্ধ করতে হয়। তবে না একটা জায়গা আসে।
ম্যাচ নিয়ে লেখার মতো বিশেষ কিছু নেই। সেই জঘন্য হার। বলার শুধু সচিনের আউটটা নিয়ে। শুনলাম, ধোনি নাকি বলেছে লি-এর ওখানে দাঁড়ানোর অধিকার নেই। আমার অন্তত টিভি দেখে মনে হয়নি, লি-র কোনও দোষ আছে। ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। ক্রিকেটে এ রকম হতেই পারে। এ সব নিয়ে না বলে ধোনির উচিত ব্যর্থতার দায় নিয়ে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো।
|
এর পরেও কী ভাবে ফাইনালে |
•• ভারতকে মঙ্গলবার বোনাস পয়েন্ট-সহ জিততে হবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। আর শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হবে শ্রীলঙ্কাকে।
•• এই দুটো অঙ্ক মিললে ভারত-শ্রীলঙ্কা শেষ করবে ১৫ পয়েন্টে। এবং সে ক্ষেত্রে ভারত বেশি (২) শ্রীলঙ্কাকে হারানোয় ফাইনালে চলে যাবে। •• বোনাস পয়েন্ট পেতে গেলে শ্রীলঙ্কার থেকে ১.২৫ রান রেট বেশি রেখে ম্যাচ জিততে হবে ভারতকে। |
|
|
লিগ টেবল |
|
ম্যাচ |
জয় |
হার |
টাই |
পয়েন্ট |
অস্ট্রেলিয়া |
৭ |
৪ |
৩ |
— |
১৯ |
শ্রীলঙ্কা |
৬ |
৩ |
২ |
১ |
১৫ |
ভারত |
৭ |
২ |
৪ |
১ |
১০ |
|
|
সিডনির স্কোর |
অস্ট্রেলিয়া: |
ওয়ার্নার ক রায়না বো জাডেজা ৬৮,
ওয়াটসন ক যাদব বো প্রবীণ ১,
ফরেস্ট বো প্রবীণ ৭,
মাইক হাসি রান আউট ১০,
ডেভিড হাসি ক ধোনি বো যাদব ৫৪,
ওয়েড ক ধোনি বো যাদব ৫৬,
ক্রিশ্চিয়ান ক জাডেজা বো সহবাগ ২৪,
ম্যাককে স্টাঃ ধোনি বো সহবাগ ১,
লি ক কোহলি বো সহবাগ ৪,
ডোহার্টি নঃআঃ ১৩,
অতিরিক্ত ১৪,
মোট ৫০ ওভারে ২৫২-৯।
পতন: ৫, ২৬, ৫৭, ১০৭, ২০১, ২১২, ২১৭, ২৩২, ২৫২।
বোলিং: প্রবীণ ১০-১-৩৭-২, ইরফান ৫-১-২৮-০, অশ্বিন ১০-০-৪৫-০,
যাদব ৬-০-৩৯-২, জাডেজা ১০-০-৫১-১, সহবাগ ৯-০-৪৩-৩।
|
ভারত: |
সহবাগ ক ও বো হিলফেনহস ৫
সচিন রান আউট ১৪,
গম্ভীর বো ম্যাককে ২৩,
কোহলি ক ক্রিশ্চিয়ান বো ওয়াটসন ২১,
রায়না ক ওয়েড বো ওয়াটসন ৮,
ধোনি এলবিডব্লিউ হিলফেনহস ১৪,
জাডেজা ক ওয়াটসন বো ক্রিশ্চিয়ান ৮,
অশ্বিন ক ওয়াটসন বো ডোহার্টি ২৬,
ইরফান ক মাইক হাসি বো লি ২২,
প্রবীণ বো ডোহার্টি ১,
যাদব নঃআঃ ০,
অতিরিক্ত ২৩,
মোট ৩৯.৩ ওভারে ১৬৫ অলআউট।
পতন: ৭, ৩৫, ৭৯, ৮৩, ৮৯, ১০৪, ১২৬, ১৫৬, ১৬৩, ১৬৫।
বোলিং: লি ৮-০-২৬-১, হিলফেনহস ৮-১-৫০-২, ম্যাককে ৬-০-২৭-১,
ডেভিড হাসি ২-০-৭-০,
ক্রিশ্চিয়ান ৩-০-৮-১, ওয়াটসন ৫-২-৯-২, ডোহার্টি ৭.৩-০-২৬-২। |
|
|