ভোট পর্বে ছবি তোলায় বিস্তর বেনিয়মের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলেও মণিপুরে ফের ভোট নেওয়া হবে না। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার পি সি লাউমকুংগা এই কথা জানান। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানায়নি রাজ্যে বিরোধী দলগুলিও। ঘটনা হল, মণিপুরে বিরোধীরা গোড়ায় ভুয়ো ভোট ও রিগিং-এর অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিল। কিন্তু তারাই পরে মিলিত ভাবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানায় ফের ভোট না করার জন্য।
ভুয়ো ভোটে রাশ টানতে নির্বাচন কমিশন এই প্রথম বার মণিপুরের সব বুথে ডিজিট্যাল ক্যামেরা রাখার নির্দেশ দেয়। তাতে, সব ভোটারের ছবিও তোলা হয়। কিন্তু, বুথে সস্তার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ভাল ছবি ওঠেনি। চান্ডেল, তামেংলং, সেনাপতি, কাংপোকপি, উখরুল, চূড়াচাঁদপুর থেকে ছবি তোলার ক্ষেত্রে বিস্তর অভিযোগ আসতে থাকে। লামফেলপাতে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতরে দুই দিন ধরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার লাউমকুংগা ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্য ভোটদাতার নাম ও ছবি মেলান। সব মিলিয়ে ২৮৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭৭টি বুথে, গরমিলের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পরিদর্শকরা দিল্লিতে রিপোর্ট দেওয়ার পরে, ফের ভোটগ্রহণ অবশ্যম্ভাবী বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছিল, মার্চ মাসের ১ বা ২ তারিখ ভোট হতে পারে।
কিন্তু, ফের ভোট নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হতেই বিরোধীরা আপত্তি তোলেন। এনসিপি, এনপিএফ, সিপিআই, তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, জেডিইউ, সিপিএম, এনপিপি, এমপিপি, মণিপুর স্টেট কংগ্রেস পার্টি-সহ দশটি দল গত কাল বৈঠক করে সর্বসম্মতভাবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে আবার ভোট না করার আবেদন জানায়। দলগুলির যুক্তি , সময় ও অর্থ নষ্ট না করে যে ভোটগুলি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, সেগুলিকে বাতিল বলে ঘোষণা করে দেওয়া হোক।
শেষ অবধি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন তাতেই সম্মত হয়েছে। তবে, যে নির্বাচনী অফিসারদের গাফিলতিতে ছবিতে গরমিল হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আগামী ৬ মার্চ ভোট গণনা। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, কংগ্রেস-বিরোধী দলগুলি যে ভাবে জোট বাঁধছে, তাতে মণিপুরে পরবর্তী সরকার গড়া নিয়ে রাজনৈতিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। |