টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় শনিবার তিন জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সামন্ত গঙ্গোপাধ্যায়, তাঁর শ্যালক বিট্টু এবং সামন্তবাবুর গাড়ির চালক ছোটু। আদালত ধৃতদের পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন সকালে বানতলা চর্মনগরীর হাতিশালার চড়ুইশ্বর এলাকায় রাস্তা থেকে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের পকেটে পাওয়া এটিএম স্লিপ থেকে তাঁর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বার করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানতে পারে, মৃতের নাম শান্তি অধিকারী (৩৭)। দক্ষিণ শহরতলির উস্তির বাসিন্দা শান্তিবাবু মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর ঠিকাদার ছিলেন। ময়না-তদন্তে জানা যায়, গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী তদন্তকারীদের জানান, ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন শান্তিবাবু। ওই দিন রাত ৯টা নাগাদ বাড়িতে ফোন করে শান্তিবাবু জানান, তিনি তাঁর বন্ধু ‘গাঙ্গুলিদা’র সঙ্গে রয়েছেন। পুলিশ জানায়, সামন্ত গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই ব্যক্তিরও মোবাইল টাওয়ার বসানোর ব্যবসা। সামন্তবাবু নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা। সেখানে গিয়ে জানা যায়, ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনিও নিখোঁজ।
শান্তিবাবু এবং সামন্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের মোবাইল ফোনের অবস্থান (ফোন ট্র্যাকিং) থেকে পুলিশ জানতে পারে, ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁরা দু’জন একই জায়গায় ছিলেন। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, রাজারহাটের বিভিন্ন এলাকায় ছিল তাঁদের মোবাইল ফোনগুলি। তা থেকেই পুলিশের সন্দেহ হয়, শান্তিবাবুকে খুনের ঘটনায় ওই ব্যক্তি জড়িত। শনিবার ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে এক পরিজনের চিকিৎসা করাতে এসে গ্রেফতার হন সামন্তবাবু। জেরায় তিনি নিজের দোষ কবুল করেন বলে পুলিশের দাবি। ধৃত ওই ব্যবসায়ীকে দিয়েই মদ খাওয়ার ‘টোপ’ ফেলে ডেকে এনে গ্রেফতার করা হয় ছোটু এবং বিট্টুকে।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে শান্তিবাবুর সঙ্গে সামন্তবাবুর কয়েক দিন ধরে বিবাদ চলছিল। ৩ তারিখ রাতে তাঁরা গাড়ি করে বেরিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কোনও এক জায়গায় সবাই মিলে মদ খান। তখন দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে ঝামেলা বাড়লে গাড়ির মধ্যেই গলায় ফাঁস দিয়ে শান্তিবাবুকে খুন করা হয়। গভীর রাতে রাজারহাটের মধ্যে দিয়ে গিয়ে চর্মনগরীর চড়ুইশ্বরে পৌঁছে তাঁর দেহ রাস্তায় ফেলে দিয়ে পালায় অভিযুক্তেরা। |