অফিসের বন্ধুদের সঙ্গে চড়ুইভাতিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি কোন্নগরের বাসিন্দা এক যুবক। ১২ দিন পরে, শনিবার তাঁর মৃতদেহ মিলল কলকাতার বাগবাজার ঘাটের কাছে গঙ্গা থেকে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অর্ণব বসু (২৬)। তিনি এটিএমে টাকা ভরার একটি সংস্থায় কাজ করতেন। সংস্থাটির অফিস হো চি মিন সরণিতে। পরিবারের লোকের সন্দেহ, ওই যুবক খুন হয়ে থাকতে পারেন।
অর্ণব কোন্নগরের অরবিন্দ রোড এলাকায় থাকতেন। ভাল ক্রিকেট খেলতেন। কোন্নগর অলিম্পিক ক্লাবের খেলোয়াড় ছিলেন। তাঁর বাড়ির লোকজন জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্র সরোবরে অফিসের বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন অর্ণব। আর ফেরেননি। নিখোঁজ-সংক্রান্ত ডায়েরি হয়। গত ১৯ তারিখ অর্ণবের অফিসের পাঁচ বন্ধুর নামে উত্তরপাড়া থানায় অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন তাঁর দাদা অভিষেক বসু। অভিষেকবাবুদের দাবি, নিখোঁজ হওয়ার সন্ধ্যায় ওই পাঁচ যুবকের সঙ্গে অর্ণবকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল বলে তাঁরা জেনেছেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানান, ওই যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও, বিশেষ কোনও সূত্র মেলেনি। শনিবার গঙ্গা থেকে দেহটি উদ্ধার করে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। ওই থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। রবিবার দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়।
পুলিশ ও যুবকের পরিবার সূত্রের খবর, দেহটি ফুলে গিয়েছিল। আপাতদৃষ্টিতে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। কোন্নগর অলিম্পিক ক্লাবের সম্পাদক বাপ্পা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মৃত্যু স্বাভাবিক বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। ওঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ ভাল করে তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করুক।”
এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিস্কার হবে। অপহরণ-সংক্রান্ত মামলাটি চলছে। ময়না-তদন্তে যদি অন্য কিছু পাওয়া যায়, সেই মোতাবেক আইনের নতুন ধারা যোগ করা হবে।”
এলাকায় ‘ভাল ছেলে’ বলে পরিচিত ছিলেন অর্ণব। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, নিখোঁজ হওয়ার দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এক বন্ধুকে ফোন করে তিনি বলেছিলেন, তিনি উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে আছেন। নৌকোয় গঙ্গা পার হবেন। ওই বন্ধু যেন বাইক নিয়ে কোন্নগর ঘাটে অপেক্ষা করেন।
সেই ফোন পেয়ে ওই বন্ধু কোন্নগর ঘাটে যান। কিন্তু অর্ণব আসেননি। পানিহাটিতেই অর্ণবের মোবাইলের ‘টাওয়ার’ শেষ বারের মতো পাওয়া যায়। এর পরে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। |