বেজে উঠেছে বাজেটের বাজনা
মার্চ মাসকে করের মাস বলেই আমরা জানি। এ বারের মার্চ মাস কিন্তু একটু আলাদা। এ যেন একই মাসে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো এবং কালীপুজো। এ বারের বাজেট মার্চ মাসে। মার্চ মাসেই ঘোষিত হবে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ ঋণনীতি পর্যালোচনা মার্চ মাসেই। অর্থাৎ লগ্নিকারী ও করদাতা তো বটেই, একদম সাধারণ মানুষের কাছেও এ বারের মার্চ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাজেটের বাজনা এরই মধ্যে বেজে উঠেছে। শুরু হয়েছে আশা-আশঙ্কার আলোচনা। সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে ১২ মার্চ। এ বারের বাজেটে খুশির খবর থাকতে পারে সব করদাতার জন্যই। করমুক্ত আয়ের সীমা ১.৮ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করার সুপারিশ করতে পারে সংসদের স্থায়ী কমিটি, যারা প্রত্যক্ষ কর বিধি (ডিরেক্ট ট্যাক্স কোড বা ডি টি সি) পর্যালোচনা করে দেখছে। কর সাশ্রয়ের জন্য সঞ্চয়ের সীমা ১.২ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২.৫ লক্ষ টাকা করার সুপারিশ আসতে পারে। এই দুটি প্রস্তাব যদি গৃহীত হয়, তবে ভাল রকম লাভবান হবেন সব শ্রেণির করদাতাই। আয়করের আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন বহু ছোট মাপের করদাতা। যাঁদের আয় ৩ লক্ষ টাকার বেশি, তাঁদের সাশ্রয় হতে পারে অন্তত ১২ হাজার টাকা বা মাসে ১ হাজার টাকা। এ ছাড়া রেহাই পাওয়া যেতে পারে কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে বাড়তি লগ্নির উপরেও। এই প্রস্তাব দু’টির ব্যাপারে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একমত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং টাকার মূল্যপতনের কারণেই সবাই এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রেল বাজেট কেন্দ্রীয় বাজেট
১৪ মার্চ ১৬ মার্চ
সরকার এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে আগের তুলনায় বেশি টাকা থাকবে মানুষের হাতে। বাড়বে তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা, ফলে বাড়বে পণ্যের চাহিদা। অন্য দিকে বাড়বে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ। অর্থাৎ এই দুই প্রস্তাব গৃহীত হলে তা অত্যন্ত সদর্থক হবে শেয়ার বাজারের কাছে। মার্চ মাসের ২ তারিখে স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট চূড়ান্ত হওয়ার কথা।
যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক, তা হবে আগামী বছরের জন্য। চলতি আর্থিক বছরে (২০১১-’১২) কর সাশ্রয়ের কাজটি কিন্তু সেরে ফেলতে হবে ৩১ মার্চের মধ্যেই। আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্পে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় এবং সঞ্চয়ের উপর পাওয়া যায় কর সাশ্রয়ের সুবিধা। এ ছাড়া কর রেহাই পাওয়া যেতে পারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকাঠামো বন্ডে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লগ্নি করে। হাতে সময় আর এক মাস। অতি দ্রুত সারতে হবে লগ্নি।
এ বার আসা যাক বাজারের কথায়। যেমন আমরা আশঙ্কা করেছিলাম গত সপ্তাহে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি মাঝারি মাপের সংশোধন হয়েছে অনেকটা উঠে আসা বাজারে। এই পতন লাভ ঘরে তোলার তাগিদেই হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বাজার ওঠার মূল কারণ ছিল বিদেশি লগ্নি প্রবাহ বেড়ে ওঠা। এই লগ্নি প্রবাহ চলতে থাকলে বাজার আবার উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডলারের দামও।
চিন্তার বিষয় হল, নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়া। এর প্রভাবে ভারতেও তেলের দাম আর এক প্রস্ত বাড়ানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টু-জি কেলেঙ্কারিতে জড়িত বিভিন্ন কোম্পানি এবং কিংফিশার-কে দেওয়া ঋণের পাহাড় বিপদের মধ্যে রেখেছে কিছু ব্যাঙ্ক শেয়ারকে। আশঙ্কা, বাড়তে পারে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের জমতে থাকা অনুৎপাদক সম্পদ বা এনপিএ। মূল্যবৃদ্ধি সাময়িক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হলেও তা বাগে থাকবে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। এই কারণে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখনই সুদ কমানোর পথে হাঁটবে, এ কথা ধরে নেওয়ার কারণ নেই। টাকার জোগান বাড়ানোর লক্ষ্যে নগদ জমার অনুপাত বা সিআরআর যে আর এক দফা কমানো হতে পারে, তার ইঙ্গিত অবশ্য মিলেছে। তবে এটা হলেও তা বাজারের পক্ষেই যাবে। সুদ কমলে তার ভাল প্রভাব পড়বে ব্যাঙ্ক এবং বড় আকারের ঋণনির্ভর কোম্পানির শেয়ারে।
অনেক দিন পর নিস্তরঙ্গ নতুন ইস্যুর বাজারে স্পন্দন দেখা গেল। ইক্যুইটি ইস্যুতে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে এম সি এক্স। কোম্পানির ইস্যুতে আবেদন এসেছে ৫৪ গুণ, যার মূল্য ৩৬,০০০ কোটি টাকা। যা সব থেকে বেশি লক্ষণীয় তা হল, যে পরিমাণ শেয়ার খুচরো লগ্নিকারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল, তার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ২৪ গুণ। এই ইস্যুর বড় সাফল্য অনেক সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিকে উদ্বুদ্ধ করবে নতুন ইস্যু বাজারে আনতে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.