কমবে আলুর ফলন, আশঙ্কা কৃষি দফতরের
লুর ফলন এ বার কমতে পারে কালনা মহকুমা এলাকায়, এমনই আশঙ্কা মহকুমা কৃষি দফতরের।
জেলার ‘কৃষিপ্রধান’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত কালনা মহকুমার ‘আলু-জোন’ হল কালনা ১ ও কালনা ২ ব্লক। মহকুমায় এ বার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর আলুর চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ৯ হাজার হেক্টরই হয়েছে কালনার ওই দুই ব্লকে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলু বসানো থেকে তোলা পর্যন্ত সময় লাগে প্রায় ৯০ দিন। ইতিমধ্যেই ৮০ দিন অতিক্রান্ত। মহকুমায় আলুর কাঠা প্রতি গড় ফলন ২০০ কিলোগ্রাম। সম্প্রতি মহকুমার কৃষি দফতরে পাঁচ ব্লকের কৃষি প্রযুক্তি সহায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ওই পাঁচটি ব্লকের কৃষি আধিকারিকেরা ছাড়াও মহকুমা কৃষি দফতরের অন্য কয়েক জন আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ফলন কমার ব্যাপারে সকল প্রযুক্তি সহায়কেরাই একমত হন। মহকুমা কৃষি দফতরের কৃষি বিশেষজ্ঞ নিলয় কর বলেন, “এই মহকুমায় সাধারণত কাঠা পিছু চার বস্তা ধান হয়। এবারে সেখানে ফলন কমে তিন বস্তায় দাঁড়াতে পারে।’’
কালনায় আলুখেতে চলছে কীটনাশক ছড়ানোর কাজ। ছবি: কেদারনাথ ভট্টাচার্য।
কিন্তু কেন কমছে আলুর ফলন? কৃষি দফতর এর কারণ হিসেবে অকালবৃষ্টিকেই চিহ্নিত করেছে। দফতর জানায়, বেড়ে ওঠার সময়ে আলু গাছের যে অংশটি মাটির নীচে থাকে, তার জন্য পর্যাপ্ত আলগা, ঝুরো মাটির প্রয়োজন হয়। এতেই মাটির নীচে আলুর বৃদ্ধি হয়। আলু গাছের ভেলিতে উঁচু করে ঝুরো মাটি দেওয়ার পদ্ধতিকে চাষিরা ‘সারা মাটি দেওয়া’ বলেন। কৃষি দফতরের দাবি, ‘ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে চাষিরা এ বছর ভেলিতে ঠিক করে ‘সারা মাটি’ দিতে পারেননি। অন্য দিকে, বৃষ্টির কারণে মাটির নরমভাব উধাও হয়ে গিয়েছে। শক্ত মাটির ভেলির আকারও স্বাভাবিকের থেকে কমে গিয়েছে। তাই অধিকাংশ জমিতেই আলুর বেড়ে ওঠার জন্য মাটির তলায় পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না।’
পাশাপাশি, আলু ওঠার মুখে বহু এলাকাতেই মারাত্মক চেহারা নিয়েছে আলুর নাবিধসা রোগ। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলু ওঠার মুখেই মহকুমার বহু জায়গাতেই আলুর নাবিধসা রোগের প্রকোপ বেড়েছে। কালনা ১ ব্লকের কয়া, নদুক, বাইজিপাড়া, বাঘলাপাড়ার মতো গ্রামগুলিতে ধসা রোগে আলু গাছগুলির কাণ্ড শুকিয়ে গিয়েছে। কিছু কিছু জমিতে সব গাছই মরে গিয়েছে। চাষিদের আশঙ্কা, নাবিধসা আক্রান্ত জমিতে ফলন কমে স্বাভাবিক ফলনের অর্ধেকেরও কম হয়ে যাবে। কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তি চাল বলেন, “কালনা ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নাবিধসা রোগে আলুগাছ নষ্ট হয়েছে। আমাদের আশঙ্কা, অনেক আলুগাছ মরে যাওয়ায় আলুর ফলন অনেক কম হবে।”
তবে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে সহমত নয় কৃষি দফতর। নিলয়বাবুর দাবি, ‘যে সব গাছের ৮০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে, নাবিধসা রোগের প্রকোপে সেগুলির ফলনে খুব বেশি তারতম্য হবে না। কারণ ওই সময়ের মধ্যেই আলুর বৃদ্ধি শেষ হয়ে যায়।’ তাঁর পরামর্শ, ৮০ দিন পেরিয়ে গেলেই চাষিদের আলু গাছ কেটে ফেলা উচিত। এই পদ্ধতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘হাম কাটিং’। এর পরেই প্রতি লিটার জলে ৪ গ্রাম কপারফানজিসাইট ‘স্প্রে’ করলে বীজবাহিত রোগের আশঙ্কা কম থাকে। গাছ কাটা অবস্থায় কিছু দিন মাটির নীচে থাকলে আলুর ছালও মোটা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.