সাধারণ ধর্মঘট ব্যর্থ করার আবেদন জানিয়ে রবিবার বর্ধমানে মিছিল করল তৃণমূল। ছিলেন দলের রাজ্য যুব সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
গত সপ্তাহেই বর্ধমানের উপকণ্ঠে দেওয়ানদিঘি এলাকায় খুন হয়েছেন সিপিএমের দুই জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ তা ও কমল গায়েন। এ দিন শুভেন্দুবাবুর দাবি, “দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন প্রদীপ তা। আমাদের দলের কিছু কর্মী-সমর্থককে পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। এই সিপিএমকে আপনারা বয়কট করুন। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে সেটাই বলতে পাঠিয়েছেন। আপনারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি শহর তথা জেলা সচল রাখুন।” |
এই মিছিলের জন্য এ দিন দুপুর আড়াইটে থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জিটি রোড। যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। এমনকী থমকে দাঁড়াতে হয় অ্যাম্বুল্যান্সকেও। বিকেল ৪টে নাগাদ যখন শুভেন্দুবাবু জিটি রোডের উপরে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সামনে আসেন তখন প্রচন্ড বিশৃঙ্খলা চরমে ওঠে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দলীয় দুই নেতা খুনের পরে সিপিএম জেলা পার্টি অফিস থেকে উত্তর ফটক পর্যন্ত মিছিল করেছিল। এ দিন সেই মিছিলের অন্তত দ্বিগুন ভিড় হয়েছিল বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। প্রদেশ তৃণমূল নেতা অলোক দাসের কথায়, “আমাদের মিছিলে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছেন।”
মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে শুভেন্দুবাবু বলেন, “এত মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মিছিলে যোগ দিয়েছেন। এতে প্রমাণ হচ্ছে, মানুষ সিপিএমকে জায়গা ছাড়তে নারাজ। গত ৩৪ বছর ধরে ওরা বন্ধকে একটা বাৎসরিক উৎসবে পরিণত করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে মানুষ ২৮ তারিখের বন্ধ ব্যর্থ করবেন, এটাই আমার আশা।” শুভেন্দুবাবুর আরও অভিযোগ, “সিপিএম কাশীনাথ তা-কে খুন করেছে। সাঁইবাড়ির গণহত্যা ঘটিয়েছে। ওদের মুখে আর যাই হোক, সন্ত্রাসের অভিযোগ শোভা পায় না। সিপিএমের উদ্দেশ্য, এই শহরকে অশান্ত করা। তা আমরা হতে দেব না।” এ দিন মিছিলে হাঁটেন তৃণমূল নেতা বনমালী হাজরা, উজ্জ্বল প্রামাণিক, সমীর রায়, খোকন দাস, স্বপন দেবনাথ প্রমুখ।
সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “প্রদীপবাবুকে তৃণমূলের লোকেরাই খুন করেছে। আমাদের শোক মিছিলে অন্তত ১৪ হাজার মানুষ ছিলেন। আজ ওদের মিছিলে হাজার দশেক লোক ছিল। মানুষের তৃণমূল সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে। সেটা ২৮ তারিখেই প্রমাণ হবে।” |