ইস্কো সম্প্রসারণ বিতর্ক
আসানসোলে পুলিশ-জনতার খণ্ডযুদ্ধ, ধৃত ৩
বিবাদ মাত্র সাত মিটার জায়গায় পাঁচিল দেওয়া নিয়ে। সেই জটে এত দিন আটকে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। রবিবার সকালে ওই অংশে পাঁচিল তুলতে গিয়ে ফের পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বাধল আসানসোলের পুরুষোত্তমপুরে। তার জের গিয়ে পড়ল রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ির দোরগোড়াতেও। বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফের উপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত অবশ্য ইস্কো কর্তৃপক্ষ পাঁচিল তোলার কাজ শেষ করতে পেরেছেন। ইস্কোর সম্প্রসারণ নিয়ে মাসদুয়েক আগেও পুরুষোত্তমপুরের বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা বেধেছে। সম্প্রসারণ এলাকার মধ্যে থাকা একটি ধর্মস্থানের কাছে পাঁচিল তোলায় আপত্তি ও চাকরির দাবিতে দেড় বছর ধরে আন্দোলন করছেন স্থানীয় মানুষ। এ দিন সকালে পাঁচিল তুলতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়ে জনতা। জখম হন ৭ পুলিশকর্মী। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। পুলিশের লাঠির ঘায়ে মহিলা-সহ বেশ কয়েক জন জখম হন। ‘পুরুষোত্তমপুর গ্রামরক্ষা কমিটি’-র সম্পাদক চন্দ্রশেখর রায়-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক আরও চার জন।
খণ্ডযুদ্ধের পরে পুলিশি ‘নির্যাতনের’ প্রতিবাদে আসানসোল উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক মলয়বাবুর বাড়ির সামনে ঘণ্টা তিনেক বিক্ষোভ দেখান শ’পাঁচেক গ্রামবাসী। মলয়বাবু বলেন, “আগামী বুধবার ইস্কো ও গ্রামবাসীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মহাকরণে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে। তাতে সমাধানের চেষ্টা হবে।” আসানসোল পুরসভার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পবিত্র মাজি বলেন, “চাকরির দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” আহত গ্রামবাসীকে দেখতে এ দিন দুপুরে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালেও যান আইনমন্ত্রী। তাঁর আশ্বাস, “পুলিশ অন্যায় ভাবে লাঠি চালালে তদন্ত হবে।”
তিন দশক টানাপোড়েনের পরে ইস্কোর আধুনিকীকরণে হাত দিয়েছে স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। লগ্নি হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। এ জন্য হিরাপুর থানার নাকড়াসোতা, কুইলাপুর ও পুরুষোত্তমপুর মৌজার প্রায় ৩৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। জমির দাম বাবদ প্রায় ৪৮ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে দিয়েছেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। জমিদাতারা সেই টাকা পেয়েও গিয়েছেন। কিন্তু ওই ৭ মিটার অংশে ইস্কো কর্তৃপক্ষকে পাঁচিল তোলায় বারবার বাধা দিয়েছে ‘পুরুষোত্তমপুর গ্রামরক্ষা কমিটি’। বাসিন্দাদের দাবি, ওই অংশেই ‘ঝোড়াবুড়ির ধর্মস্থান’। বাস্তবে সেখানে নির্মাণ নেই। রয়েছে গাছ ও পাথর। পাঁচিল তোলার শর্ত হিসাবে জমিদাতাদের চাকরির দাবিও তুলেছিলেন এলাকাবাসী। আপাতত ওই ধর্মস্থানে নির্মাণ হবে না, মাস দু’য়েক আগে এই আশ্বাস দিয়ে বিতর্কিত ৭ মিটার ছেড়ে বাকি অংশে পাঁচিল তোলা হয়। ইস্কো কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রামে পাকা ধর্মস্থান গড়ে দেওয়া হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের সময়ে ক্ষতিপূরণের শর্তে চাকরির বিষয়টি না থাকলেও এখন তা আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.