হুমকি, পাল্টা হুমকির অভিযোগ কলেজে
প্রাণনাশের হুমকি, পাল্টা হুমকির অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর কলেজে। বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের অধ্যক্ষ ক্ষেত্রমোহন সরকার পুলিশের কাছে সাংসদ দীপা দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ জানান। শুক্রবার রাতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য রামকৃষ্ণ সরকার। ওই ঘটনার পর থেকে কলেজে যাওয়া বন্ধ করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি প্রণব ঘোষ বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করা হবে।” ঘটনার সূত্রপাত ২২ ফেব্রুয়ারি হরিরামপুর কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। অভিযোগ, নির্বাচনের পরে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার অধ্যক্ষ পুলিশের কাছে শুভাশিস ওরফে সোনা পাল, রামকৃষ্ণ সরকার, তাজিমুল হোসেন, মোবারক হোসেন সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা প্রত্যেকে কংগ্রেস নেতা শুভাশিসবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। পরিচালন সমিতির সদস্য রামকৃষ্ণবাবুও কংগ্রেস কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিপিএমের হয়ে কাজ করেন। যদিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কেন কোনও দলের হয়ে কাজ করব! নির্বাচনের পরে সোনা পালের নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা প্রায় ৩ ঘন্টা আমাকে ঘেরাও বিক্ষোভ দেখায়। সিপিএমের দালাল বলে গালমন্দ করে। প্রাণনাশের হুমকি দেয়।” এ দিকে শুক্রবার রাতে কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য রামকৃষ্ণবাবু অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানান, নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলে অধ্যক্ষ খারাপ ব্যবহার করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বার করে দেন। অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা শুভাশিসবাবুও অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “অধ্যক্ষ বরাবর সিপিএমের হয়ে কাজ করেন। এসএফআই-র পক্ষে ছাত্র সংসদের নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। অনিয়ম ধরা পড়লে অধ্যক্ষের কাছে বিচার চাওয়া হয়। তাকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।” কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ১৮ টি আসনের প্রতিটি এসএফআই দখল করে। এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি রাকেশ কুণ্ডু বলেন, “এলাকার কংগ্রেস নেতারা ধমকে চমকে ছাত্র সংসদ দখলের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। ছাত্রপরিষদ একটি আসন পায়নি। সেজন্য কংগ্রেস নেতারা নির্বাচনে কারচুপির মিথ্যা অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।” যদিও ঘটনায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব জানান, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণের কাজ দেখতে ছাত্র পরিষদের প্রার্থী ও এজেন্টদের এক তরফাভাবে অধ্যক্ষ ঘরে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন। বিষয়টি জানতে গেলে অধ্যক্ষ তাঁদের হেনস্তা করেন। হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা ক্ষেত্রমোহনবাবু ১৯৯৭ সাল থেকে হরিরামপুর কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনি প্রতিদিন বাসে যাতায়াত করেন। ঘটনার পর থেকে ভয়ে কলেজে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন। এ দিন টেলিফোনে অধ্যক্ষ বলেন, “পুলিশকে সবই জানিয়েছি। কিন্তু থানার আইসি ছুটিতে থাকায় কলেজে যেতে ভরসা পাচ্ছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.