আপাতদৃষ্টিতে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন। কিন্তু নতুন সরকারের আমলে রাজ্যের ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) অফিসারদের সংগঠনের নির্বাচনকে ঘিরেই প্রশাসনের অন্দরমহল তোলপাড়। নির্বাচনকে ঘিরে ওরা-আমরা, বাম-ডান বিভাজনের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠেছে।
আজ, রবিবার সল্টলেকের পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে ওই নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বী দু’পক্ষের প্রার্থী তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৩ জন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী। এঁদের মধ্যে দু’জন আবার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অফিসার। সংগঠনের তরফে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে সংগঠন তৈরি হওয়ার পর এই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে। গত দশ বছর সর্বসম্মতি ক্রমেই সংগঠনের রাজ্য কমিটি তৈরি হয়েছে।
ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে শনিবার দু’পক্ষের সেনাপতিরা স্বীকার করেছেন, সর্বসম্মত কমিটি তৈরির পরিবর্তে এ বার নির্বাচন হওয়াতেই এই রাজনীতির রং লেগেছে। বাম আমলে যাঁরা কমিটির মাথায় ছিলেন, তাঁরা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। সেই কারণেই প্রায় একই অফিসারেরা বছরের পর বছর শীর্ষ পদে থেকে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ বার তাই নতুন কমিটির জন্য কোনও সর্বসম্মত প্যানেল তৈরি করা যায়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দের লোকেদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি হয়েছে। অন্যটি তার বিরুদ্ধে, যেটি ‘পরিবর্তনপন্থী’ বলে বিভিন্ন মহলে প্রচার হচ্ছে। যদিও দু’পক্ষই প্রকাশ্যে বলছে, এর মধ্যে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই।
এই প্রচারকে আরও উস্কে দিয়েছে একটি প্যানেলের সাধারণ সম্পদক পদের প্রার্থীকে সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসন ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করায়। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের ব্যক্তিগত সহায়ক ছিলেন তিনি। অভিযোগ ওঠে, তথাকথিত ‘বাম’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী হয়েও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ‘আস্থা’ পেতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের কাছে তদ্বির করেন। খবরটি মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছলে তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। এর পরেই ওই অফিসারকে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠিয়েছে রাজ্য।
দু’পক্ষেরই বক্তব্য, নির্বাচন তাদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা। তবে লড়াইয়ের ময়দানে কোনও পক্ষই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। |