মাধ্যমিকের প্রথম দিন প্রশ্ন বিভ্রাটের দায় নিজেদের ঘাড়ে নিল না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বদলে পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিল তারা।
নতুন পাঠ্যক্রমের পরীক্ষার্থীদের পুরনো পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন কিংবা এর ঠিক উল্টো ঘটনায় শুক্রবার মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই রাজ্য জুড়ে অনেক পরীক্ষাকেন্দ্রে নাকাল হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। এর জন্য যে পর্ষদ কোনও ভাবেই দায়ী নয়, শুক্রবারই তা জানিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। শনিবারও পর্ষদের সভাপতি চৈতালি দত্ত বলেন, “বারবার কর্মশালা করে সকলকে সব কিছু বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের উপরে মোটা হরফে লেখা আছে কোন পাঠ্যক্রমের পরীক্ষার্থীদের জন্য কোন প্রশ্নপত্র। তার পরেও ভুল হলে পর্ষদের কিছু করার থাকে না। একটু সতর্ক হয়ে কাজটা করলেই এই সব বিভ্রান্তি এড়ানো যায়।”
পর্ষদের তরফে এ দিন আবেদন জানানো হয়েছে, প্রশ্নপত্র হাতে পেলে সেটি তার ভাষা এবং পাঠ্যক্রমের কি না পরীক্ষার্থীরা যেন দেখে নেয়। লিখিত ওই আবেদনপত্রে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক প্রশ্নপত্রের উপরে পাঠ্যক্রমের উল্লেখ রয়েছে। তা দেখেই প্রশ্নের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে পরীক্ষার্থীদের। প্রশ্নপত্র বিলির সময় পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির আধিকারিক, পরিদর্শক ও শিক্ষাকর্মীকেও সতর্ক হওয়ার আবেদন জানিয়েছে পর্ষদ।
পরীক্ষায় কোনও গোলমাল ও বিভ্রান্তি এড়াতে এ বার প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্ষদের এক জন প্রতিনিধি রাখা হচ্ছে। তা হলে এমন ভুল হল কী ভাবে? চৈতালিদেবী বলেন, “যে কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে, প্রশ্নপত্র বিলির দায়িত্ব সেই স্কুলের। পর্ষদের প্রতিনিধিকে এ ব্যাপারে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হলে স্কুলের তরফে আপত্তি উঠতেই পারে।”
মাধ্যমিকের বাকি দিনগুলিতে যাতে আর এমন না ঘটে, সে জন্য কি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে পর্ষদ? চৈতালিদেবী বলেন, “কলকাতার সাউথ পয়েন্ট এবং রহড়ার একটি স্কুল রিপোর্ট দিয়ে ভুলের কথা জানিয়েছে। আর কোনও স্কুল কিন্তু কিছু জানায়নি। যা জানার সংবাদমাধ্যমে জেনেছি। তাই এমন ঘটনা অনেকগুলি কেন্দ্রে ঘটেছে, সেটা এখনই বলা যাবে না।” তবে ‘ধামাচাপা’ দিয়ে প্রশ্ন-বিভ্রাটের ঘটনা লুকোনো যাবে না, তা-ও জানান তিনি। সভাপতি বলেন, “যে সব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা অন্য পাঠ্যক্রমের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের উত্তরপত্রেই ভুলটা ধরা পড়বে। তাই স্কুলগুলিকে রিপোর্ট পাঠিয়ে এই কথা জানাতেই হবে। আশা করছি দু’-এক দিনের মধ্যে রিপোর্ট চলে আসবে।”
ভবিষ্যতে প্রশ্ন বিভ্রাট এড়াতে পুরনো ও নতুন পাঠ্যক্রমের পরীক্ষার্থীদের আলাদা ঘরে বসানোর ব্যবস্থা করার পরামর্শ শুক্রবারই দেন স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদও এ দিন প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীদের আসন পুনর্বিন্যাসের কথা জানিয়েছে ওই লিখিত আবেদনপত্রে। তবে পৃথক পাঠ্যক্রমের ছাত্রছাত্রীদের পৃথক ঘরে পরীক্ষা নেওয়া যে সব ক্ষেত্রে সম্ভব নয়, তাও পর্ষদ-সভাপতি জানান। |