পাঁচটি পৃথক পথ দুর্ঘটনায় দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলায় ৮ জনের মৃত্যু হল। আহত অন্তত ১৯ জন। শনিবার দুপুরে একটি দুর্ঘটনা ঘটে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার খলিসানিতে মুম্বই রোডে। মন্দারমণি বেড়িয়ে গাড়ি করে আড়িয়াদহে বাড়ি ফিরছিলেন চার বন্ধু তাপস বিশ্বাস (৪০), সমর মুখোপাধ্যায় (৭০) শ্যামল দাস (৫৩) এবং সমীর বাগ। গাড়িটি তাপসবাবুর। তিনিই চালাচ্ছিলেন। কিন্তু খলিসানির কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কালভার্টে ধাক্কা মেরে গাড়িটি কার্যত গুঁড়িয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাপসবাবু এবং সমরবাবুর। শ্যামলবাবু এবং সমীরবাবুকে উদ্ধার করে পুলিশ উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানেই মারা যান শ্যামলবাবু। গুরুতর জখম সমীরবাবুকে পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
শনিবার চার বন্ধু মন্দারমণি গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সকলের পরিবারের লোকজন উলুবেড়িয়া হাসপাতালে হাজির হন। হতাহতেরা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী তথা কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা। পরিবহণমন্ত্রী নিজে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে যোগাযোগ করে আহত সমীরবাবুর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে তাঁরই উদ্যোগে সমীরবাবুকে স্থানান্তরিত করানো হয়। |
অন্য দিকে, শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের খোলাপোতার টাকি রোডে একটি অটোরিকশার সঙ্গে ম্যাটাডরের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় শেলি মণ্ডল (৩৭) নামে এক মহিলার। তাঁর বাড়ি বসিরহাটের হরিশপুরে। বেড়াচাপাঁয় একটি নিমন্ত্রণ সেরে তিনি সাত-আট জনের ওই অটো করে ফিরছিলেন। দুর্ঘটনায় জখম হন তিন অটোযাত্রী। তাঁদের বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ওই রাতেই বাঁকুড়া সদর থানার নবান্দায়, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর সড়কে একটি ধান বোঝাই লরি চাপা দেয় স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব মাল (২১) এবং তাপস মাল (২২)-কে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বন্ধু রাস্তার পাশে গল্প করছিলেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জয়দেবের। তাপসকে গুরুতর জখম অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হলে শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ লরিটি আটক করলেও চালক পালায়।
এ দিন সকালে আর একটি দুর্ঘটনা ঘটে বীরভূমের মহম্মদবাজারের শেওড়াকুড়িতে, মোড়গ্রাম-রানিগঞ্জ জাতীয় সড়কে। একটি ম্যাটাডর পর পর দু’টি গাড়িকে ধাক্কা মারলে মর্জিনা বিবি (৫৫) নামে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের পাঁচগ্রামে। তিনি পাথরচাপুড়ির একটি মাজার থেকে ফিরছিলেন। দুর্ঘটনায় জখম হন দু’টি গাড়ির ১৩ জন যাত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
বর্ধমানের জামুরিয়ায় সাতগ্রাম ফটকের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে এ দিন বিকেলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। গুরুতর জখম হন গাড়ি-চালক দক্ষিণেশ্বর মল্লিক (৬৫)। তাঁর বাড়ি হিরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে। জখম হন গাড়ির তিন আরোহী। স্থানীয় লোকজন দুর্ঘটনার পরে মিঠাপুর (আর) কোলিয়ারির কয়লা বোঝাই একটি অ্যাম্বুল্যান্সকে আটকান। কয়লা নামিয়ে ওই চার জনকে আসানসোল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক চালককে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। |