আপত্তি অফিসারদের একাংশের
‘ওয়েভার স্কিম’ এ বার দেওয়া হবে বিধাননগরেও
লকাতা পুরসভার পরে এ বার বিধাননগর পুরসভায় অনাদায়ী করের সুদের উপরে ছাড় (ওয়েভার স্কিম) দিতে চলেছে রাজ্য। বিধাননগর পুর-প্রশাসনের প্রস্তাব ছিল, ১ মার্চ থেকে ওই ছাড় কার্যকর করার অনুমতি দিক সরকার। মন্ত্রিসভার গত বৈঠকে বিষয়টি পাশ হওয়ার কথা থাকলেও ছাড়ের প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু প্রশ্ন ওঠায় বিধাননগর পুরসভাকে তা স্পষ্ট করতে বলা হয়। সেই জবাব এখনও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পৌঁছয়নি বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
করের সুদে ছাড় দেওয়া নিয়ে অবশ্য আপত্তি তুলেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের একাধিক অফিসার। তাঁদের বক্তব্য, “একের পর এক পুরসভাকে সুদ ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হলে এক সময় এটাই প্রথা হয়ে দাঁড়াবে। বিধাননগরের দৃষ্টান্ত তুলে অন্য পুরসভাও সুদ ছাড়ের অনুমতি চাইলে সমস্যা তৈরি হবে। এ ছাড়াও নিয়মিত পুর-কর দেন যাঁরা, তাঁদের এ ব্যাপারে অনীহা দেখা দিতে পারে।” বিধাননগর পুর-এলাকায় অধিকাংশ সচ্ছল পরিবারের বাস। সেখানে কেন করের সুদে ছাড় দেওয়া হবে, অফিসাররা এই প্রশ্নও তুলেছেন।
মহাকরণ সূত্রের খবর, বিধাননগরে বকেয়া করের সুদের উপরে ৯৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কিন্তু জরিমানার উপরে কত ছাড় মিলবে তা পুরসভাকেই ঠিক করতে হবে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “একমাত্র কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রেই সরকার করের সুদ ও জরিমানার উপরে ছাড় নির্দিষ্ট করতে পারে। অন্য পুরসভার ক্ষেত্রে সরকার কেবল করের সুদে ছাড়ের পরিমাণটুকু ঠিক করতে পারে। জরিমানার উপরে ছাড় নির্দিষ্ট করার অধিকার দেওয়া আছে পুরসভাকেই।” বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, তারা অনাদায়ী করের উপরে জরিমানার এক শতাংশ নেবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছে।
কলকাতা পুরসভায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওয়েভার স্কিম চালু হয়েছে। সেই অনুমতি দেওয়ার আগে প্রশ্ন উঠেছিল, যাঁদের কর দেওয়ার ক্ষমতা আছে অথচ দেননি, কেন তাঁরা এই সুযোগ পাবেন? সুব্রত মুখোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন এক বার কলকাতা পুরসভায় ওয়েভার স্কিম কার্যকর করা হয়েছিল। পুর-অফিসারদের প্রশ্ন, যাঁরা তখন বকেয়া কর দেননি, কেন ফের তাঁদের একই সুযোগ দেওয়া হবে? যাঁরা দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধেই বা কী ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আছে পুর-আইনে? নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “কর বাবদ কলকাতা পুরসভায় বকেয়ার পরিমাণ ২১৫১ কোটি টাকা। যাঁদের এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর বাকি, ওয়েভার স্কিমে তাঁরাই বেশি বকেয়া মেটাচ্ছেন।” পুরসভার হিসেবে, ৫ লক্ষের বেশি কর বাকি এমন নাগরিকের সংখ্যা ৬১৮৯ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুরসভার কোষাগারে জমা পড়েছে ২১ কোটি টাকার কিছু বেশি।
বিধাননগর পুরসভা তৈরি হয়েছিল ১৯৯৫-এর অক্টোবর মাসে। কিন্তু বর্তমান পুর-কর্তৃপক্ষ তারও কয়েক মাস আগে থেকে করের সুদে ছাড়ের অনুমতি চেয়েছেন বলে মহাকরণ সূত্রের খবর। সেই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে সরকার জানতে চেয়েছে, বিধাননগর পুরসভা গঠনের আগে তো সেটি নোটিফায়েড অথরিটি হিসেবে কাজ করত। তা হলে তখনকার করের সুদের উপরে কেন ছাড় চেয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০০৫ পর্যন্ত যত কর বকেয়া আছে, কেবল তার সুদের উপরেই ছাড় দিতে চেয়েছে তারা। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের প্রশ্ন, যদি সুদে ছাড় দিতেই হয় তা হলে কেন তারা এর পরের অর্থবছরগুলিকেও ওয়েভার স্কিমের আওতায় আনতে চাইছে না। এ ব্যাপারে পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বিশদে কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “সব দিক খতিয়ে দেখেই করের সুদে ছাড় দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” পুরসভা সূত্রের খবর, ওয়েভার স্কিম তিন মাস চালু রেখে এক লপ্তে ২৫ কোটি টাকা বকেয়া কর তোলার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে তারা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.