নিহত নেতার চিঠিতে ছিল খুনে অভিযুক্ত ৭ জনের নাম
খুন হওয়ার আগের দিনই বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখেছিলেন নিহত সিপিএম নেতা প্রদীপ তা। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ ছিল, দেওয়ানদিঘি ও সংলগ্ন এলাকায় সিপিএমের কর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সেই চিঠিতে এমন সাত জনের নাম ছিল, যাঁদের নাম প্রদীপবাবুকে খুনের পরে দায়ের হওয়া এফআইআরেও রয়েছে। জেলা সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ওই চিঠি পাওয়ার পরেই পুলিশ একটু ‘তৎপর’ হলে হয়তো দেওয়ানদিঘিতে প্রদীপবাবু ও জেলা কমিটির সদস্য কমল গায়েনের মৃত্যু ঠেকানো যেত।
২১ ফেব্রুয়ারি তারিখের চিঠিটি ওই দিনই পুলিশ সুপারের দফতরে ‘রিসিভ’ করা হয়েছিল। ওই চিঠিতে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রদীপবাবু দাবি করেছিলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের প্রচারে এলাকায় বেরনো সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ‘হুমকি’ দিচ্ছে তৃণমূল। স্থানীয় মির্জাপুর (প্রদীপবাবুর গ্রাম) ও পালিতপুর গ্রামের কিছু ‘তৃণমূল আশ্রিত’ দুষ্কৃতী ওই ধর্মঘটের সমর্থনে লাগানো ফেস্টুন ও পতাকা ছিঁড়ে দিচ্ছে। দলের কর্মীদের ‘খুনের হুমকি’ও দেওয়া হচ্ছে দাবি করে চিঠিতে প্রদীপবাবু অভিযোগ করেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের ব্রিগেড সম্মেলনের পথে ৮-১০টি বাস ওই দুষ্কৃতীরা আটকে দিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ফেরত পাঠায়।
সিপিএম সূত্রের খবর, এর পরেও প্রদীপবাবুর নেতৃত্বে প্রচুর মানুষ ওই এলাকা থেকে ব্রিগেডে গিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে চিঠি দেওয়ার পরদিনই দেওয়ানদিঘিতে সেই পতাকা টাঙানোকে ঘিরেই বিবাদের পরিণতিতে খুন হন প্রদীপবাবু ও কমলবাবু। সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “পুলিশ চিঠি হাতে পেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে বা ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা সক্রিয় হলে আর যাই হোক না কেন, ওই দুই নেতা প্রাণে মারা যেতেন না।” তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লক সভাপতি দেবনারায়ণ গুহ অবশ্য বলেন, “এ রকম কত শত চিঠিই উনি লিখতেন! চিঠিতে যা বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা।”
মির্জাপুরের ঝন্টু ঘোষ, মন্টু ঘোষ, গোপাল গোস্বামী, বাপ্পা ওরফে সুরজিৎ তা, ছোটন চক্রবর্তী, শান্তনু গড়াই, উদয় মণ্ডল-সহ ১০ জনের নাম ছিল প্রদীপবাবুর চিঠিতে। আবার প্রদীপবাবুর ভাই প্রবীর তা ২২ তারিখ বর্ধমান থানায় যে এফআইআর করেন, তাতেও রয়েছে ওই সাত জনের নাম। এঁরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত। ওই সাত জনের মধ্যে ছোটন চক্রবর্তী ও সুরজিৎ তা খুনের দিন ঘটনাস্থল থেকেই ধরা পড়েন বলে পুলিশের দাবি। বস্তুত, জোড়া খুনের অভিযোগে যে চার জন গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা সকলেই মির্জাপুরের বাসিন্দা। যদিও ধৃত তৃণমূল নেতা পতিতপাবন তা-এর নাম প্রদীপবাবুর চিঠিতে ছিল না।
পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার দাবি, তিনি ওই চিঠি হাতে পাননি। কিন্তু চিঠিতে তাঁর দফতরের রাবার স্ট্যাম্প কী করে থাকল? এসপি-র জবাব, “সব চিঠিই কি আর এসপি-র কাছে আসে?” এক প্রাক্তন বিধায়কের চিঠি কেন হাতে আসবে না? তাঁর মন্তব্য, “আমি এ ব্যাপারে আর কথা বাড়াতে চাই না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.