বাড়তি বয়স, মেক আপ চয়েস
য়সটি পঁয়তাল্লিশের কাছাকাছি পৌঁছালেই আমরা তাঁকে বানপ্রস্থে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ফেলি। আমাদের ভাবভঙ্গিটি থাকে, ‘সে মানুষ অবশ্যই, কিন্তু অন্য গোত্রের।’ তিনি যদি স্নানের সময়টা বেশি নিয়ে ফেলেন বা আয়নার সামনে বেশি ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন, তা হলেই সেটা দোষের হয়ে যায়। বিয়েবাড়িতে যদি বলেন, ‘দেখ তো, শাড়িটা ঠিক আছে কিনা’, প্রশ্নটি দু’বার জিজ্ঞাসা করলেই সমস্ত বাড়িতে তিনি হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়ান। আর কমবয়সী, আধুনিকা হিসাবে যাঁরা বিশেষ পরিচিত, তাঁরাই এই ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে থাকেন। মোটামুটি ভাবে একটা বয়স এসে গেলে শাড়ি বা পোশাকের রং, চুলের স্টাইল, সাজগোজ সমস্ত কিছু ঠিক করে দেয় চার পাশের লোকজন। আপনার মনের ভিতরে ইচ্ছেটি কী, সে কথা কেউ জানতে চায় না। আপনি নিজে প্রকৃত সম্মান না দিলে, এই গোপন বাসনার মর্ম কেউ বুঝবে না।
বয়স এবং ম্যাচিয়োরিটি, দু’টি পারস্পরিক সমান্তরাল রেখার মতো চলে। একটির সঙ্গে অন্যটির কোনও দিনই মিল হয় না। বেশির ভাগ লোক যদিও দুইয়ে দুইয়ে চার করেছেন, অর্থাৎ, মনে করেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ম্যাচিয়োরিটি আসতে বাধ্য। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা ঘটে না। অনেকে বয়সে প্রবীণ হলেও মনটি কাঁচা থাকে। আবার অনেক কমবয়সীরা ‘কনজারভেটিভ মত’কে আঁকড়ে ধরতেই ভালবাসেন।
মানুষ সাধারণত মেক আপ এবং সাজগোজের সঙ্গে বয়সের হিসেবনিকেশ শুরু করে দেন। এটিই তাঁদের স্বভাব। আসলে কিন্তু যে কোনও বয়সেই নিজেকে সুন্দর রাখার অধিকার আপনার আছে। বিশেষ একটি বয়সের ঘেরাটোপ দিয়ে সৌন্দর্যকে আটকে রাখা যায় না। ছবি বিশ্বাসকে দেখলে আমরা তাঁর বয়স নিয়ে আলোচনা করি না, তাঁকে দেখতে কতটা সুন্দর লাগছে সেটাই বলি। এক জন মহিলার যখন বয়স বেড়ে যায়, তখন তাঁর কাছে নিজেকে সুন্দর দেখানোর ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কম বয়সে বেশি সাজতে হয় না, সব পোশাকেই সুন্দর লাগে। কিন্তু যখন স্বাভাবিক সৌন্দর্যটি চলে যেতে থাকে, তখন বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যাও দেখা যায়। এক জন মহিলা, যিনি তিন বছর আগে পর্যন্ত কথা প্রসঙ্গে বলতেন, ‘আমি সাজতে ভীষণ ভালবাসি,’ হঠাৎই এই বাক্যটিই তাঁর মুখে অন্য রকম শোনায়। একই ব্যক্তি যখন বলেন, ‘আমি মেক আপ করতে ভালবাসতাম,’ একটা বয়সের পরে তাঁর এত দিনের চেনা আয়নাটিতে প্রতিচ্ছবিটি অন্য রকম ভাবে প্রতিফলিত হয়। বয়ঃসন্ধিক্ষণ যেমন একটি পরিবর্তনের সময়, এই বয়সটিও কিন্তু একটি সন্ধিক্ষণের সূচনা দেয়। পুরনো চেহারাটিকে খোঁজার অভ্যেসটি পাল্টে ফেলুন। নিজেকে নতুন করে চিনতে চেষ্টা করুন। পুরনো আমি’কে দেখার চেষ্টা বন্ধ করুন। বর্তমান বয়সের সঙ্গে মানানসই ভাবে সাজগোজ আরম্ভ করুন। নিজেকে আবিষ্কার করুন নতুন রূপে।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের স্বাভাবিক চিকন ভাব ও পেলবতা চলে যায়। ত্বক স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা রুক্ষ হয়ে যায় ও ত্বকের টানটান ভাবটা কমে আসে। সুতরাং প্রথমে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরে আপনার ত্বকে ফাউন্ডেশন লাগান। ফাউন্ডেশন ব্যবহারের সময় দেখবেন, সেটি যেন বেশি ঘন বা ডার্ক শেড-এর না হয়। চেষ্টা করবেন ওয়াটার বেসড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে। বেসটিকে সুন্দর ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। খেয়াল রাখবেন, মেক আপ যেন কখনও বেশি ফুটে না ওঠে। ফাউন্ডেশন লাগানোর পরে কমপ্যাক্ট বুলিয়ে নেবেন। কিন্তু যদি ত্বক শুষ্ক হয়, তবে পাউডার জাতীয় কিছু না লাগানোই ভাল।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চোখের চার পাশে টান ধরতে শুরু করে এবং ‘রিঙ্কল’ দেখা যায়। বয়স এখানেই প্রথম চাক্ষুষ জানান দেয়। এ ছাড়া দেখা দেয় ডার্ক সার্কল-এর সমস্যাও। সুতরাং কখনও ডার্ক শেড-এর কোনও আইশ্যাডো ব্যবহার করবেন না। চোখে কোনও গাঢ় আই মেক আপ করা যাবে না। গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই কোনও ন্যাচরাল আইশ্যাডো ব্যবহার করুন। সবুজ, নীল এই রংগুলি বাদ দিন।
যাঁদের কোল পেন্সিল বা কাজল ব্যবহারের অভ্যেস আছে, তাঁরা এ সব ব্যবহার করতে পারেন। কাজল সব বয়সেই মানানসই। তবে বেশি ঘন কাজল ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি স্মাজ করলে খুবই খারাপ লাগে। মাস্কারা লাগানো ভাল।

ব্লাশ অন কখনও কোনাকুনি স্ট্রোক-এ লাগাবেন না। ব্লাশ অন-এর স্ট্রোকগুলি যেন রাউন্ড শেপ-এর (গোলাকৃতি) হয় এবং অবশ্যই ‘চিক’-এর ওপর লাগাবেন। আপনার গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই কোনও শেড বাছবেন।

মহিলাদের বিশেষ করে গাঢ় রঙের লিপস্টিক লাগানোর প্রবণতা থাকে। যেমন, লাল বা মেরুন রং দু’টি খুবই কমন। এই দু’টি রংই বাদ দিন। যাঁরা ফরসা, তাঁরা হালকা গোলাপি অথবা বেজ বা ল্যাভেন্ডার ব্যবহার করুন। শ্যামবর্ণারা ব্রাউন অথবা ওয়াইন কালার। গ্লস লাগানো বন্ধ করুন। ক্রিম ম্যাট লিপস্টিক লাগানো সব থেকে ভাল। পরিণত বয়সের মেক আপ সম্পর্কে বলা যায় যে, ‘লো কনট্রাস্ট’ মেক আপ করুন। এতে বলিরেখা বোঝা যায় না। আপনার মুখও যথেষ্ট উজ্জ্বল দেখাবে।

সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.