ডক্টর লাভ
তবু মনে রেখো
এই হরমোনটির নামটি খটমট। ডিহাইড্রোপিয়ানড্রোস্টেরন। তবে স্বভাবে বড় রোম্যান্টিক। প্রেমে হাবুডুবু খেলেই সে বেদম উৎসাহে শিরায়-উপশিরায় বইতে থাকে। মনটাও তখনই আহ্লাদে ভরে ওঠে। স্নায়ুরাও সতেজ, চনমনিয়ে ওঠে, কর্মক্ষমতাও বেড়ে যায়। আখেরে লাভ হয় স্মৃতিশক্তির। ওই যে! ‘এই ব্যাগটাই তুমি সরস্বতী পুজোর ভাসানের দিন, হলদে সালোয়ারটার সঙ্গে নিয়েছিলে না?’ ‘তুমি এটাও মনে রেখেছ? সো সুইটটট!!!’ সবই প্রেম-হরমোনের দয়া!

ক্যান্সারের অ্যান্সার
জানেন, বিবাহিতদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার, অবিবাহিতদের তুলনায় বেশ কম। আর আইওয়া ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। ফল বেশ চমকপ্রদ। জরায়ু’র ক্যানসারে আক্রান্ত কয়েক জন মহিলা চিকিৎসায় দারুণ সাড়া দিচ্ছেন। ঘটনাচক্রে এঁরা বিবাহিত জীবনে ভীষণ সুখী। তাতেই নাকি এঁদের শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদনের ক্ষমতা বেড়ে গেছে। এই রক্তকণিকাগুলিই ক্যান্সার কোষদের বাড়াবাড়ি তো বন্ধ করেই, একেবারে খতম করে দম নেয়।

স্ট্রেস গন কেস
ধরা যাক, আপনার ও আপনার সঙ্গী’র সম্পর্ক যারপরনাই মজবুত, অন্তরঙ্গ। নিজেদের নিয়েই মশগুল। তবে আর বাইরের দুনিয়ার টেনশন, চিন্তা-ভাবনায় আপনাদের কী আসে যায়? এক জনের জীবনে কোনও ঝামেলা এলেও সে একা নয়। সঙ্গী পাশে আছে সব সময়। ব্যস, স্ট্রেস বাছাধন জব্দ। আসল ব্যাপারটা বলি। ‘ইন আ রিলেশনশিপ’ হলেই, অ্যাড্রেনালিন গ্রন্থি ভেল্কি দেখায়, শরীরে জন্ম নেয় ডিহাইড্রোপিয়ানড্রোস্টেরন। এই প্রেম স্পেশ্যাল হরমোনই হল স্ট্রেসের যম। এরই আশীর্বাদে, দু’জনার এই একটাই প্রেমময় জীবন কিন্তু, পরম সুখময় হয়।

নো চিনচিন নো টনটন
প্রেম করলেই মস্তিষ্কের একটা বিশেষ অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই অংশটিই ব্যথা, বেদনা, যন্ত্রণাগুলোকে লাগাম পরিয়ে রাখে। কয়েক দিন আগে, প্রায় ১,২৭,০০ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছিল। জানা গেছে, বিবাহিত মানুষের মাথাব্যথা, পিঠে কোমরে যন্ত্রণা কম হয়। যার বিয়ে যত বেশি পরিতৃপ্তির, তার জীবনে যন্ত্রণা তত কম। এমন পুলকিত, হরষিত দাম্পত্যে, দুঃখ-চিন্তা-স্ট্রেসের জায়গা কই? তা নষ্টের গোড়াই যেখানে নাই, তখন ঘাড় ব্যথা, মাথা ব্যথা এ সব সমস্যাই বা আসবে কোত্থেকে?

চেঁচিয়ে মাত BP কাত
যাঁরা বিয়ে করে বেজায় সুখী, তাঁদের রক্তচাপটাও নাকি কখনও ঝামেলা করে না। নিজেরা যেমন সঙ্গীর শাসনে চলেন, তেমনি এঁদের রক্তচাপও সব সময়ে নিয়ন্ত্রণে বাঁধা থাকে। তবে যে সব অবিবাহিত মানুষ খুব মিশুকে, প্রচুর বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হল্লা করে দিন কাটান, তাঁদেরও ব্লাডপ্রেশার নিয়ে চিন্তা নেই, বলেছেন বিজ্ঞানীরা।

ও সুইটহার্ট
হিউম্যান কমিউনিকেশন রিসার্চ বলছে, বন্ধু, আত্মীয় বা জীবনসঙ্গীকে নিয়ে সময় কাটান। তাদের সঙ্গে দু’টো ভালবাসার মিষ্টি মিষ্টি কথা বলুন। তাতে কোলেস্টেরল লেভেল বাড়বে না। ফলে হার্ট অ্যাটাক বা অন্যান্য কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ-ব্যাধিও ধারে কাছে ঘেঁষবে না।

ভাইরাস ভেগে যা
খিটখিটে মনমরা দম্পতিদের থেকে হাসিখুশি সুখী যুগলদের জীবনটাই বেশি আরামের। বলে কী? আরে হ্যাঁ, ওদের চোট-আঘাত লাগলেও নাকি দ্বিগুণ তাড়াতাড়ি সেরে যায়। এমন কী ঠান্ডা লাগা, ফ্লু ভাইরাসও সহজে কাবু করতে পারে না ওদের। সব রকম ‘অসুখ’ ভ্যানিশ। প্রেমের এমনি মহিমা। জানতেন?

ফুটন্ত রক্ত ছুটন্ত রক্ত
কারওর সঙ্গে থাকতে, তার সঙ্গে কথা বলতে দারুণ ভাল লাগছে? মস্তিষ্ক বুঝলেই হৃদয়ে সঙ্কেত পাঠিয়ে দেয়। ওই জন্যেই তো হৃদ্পিণ্ডটি ধকধক করে, খুশিতে বুকের খাঁচায় হার্টটি তুড়ুক তুড়ুক লাফায়। আর বুকের ধুকপুকুনি বাড়লে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। সব জায়গায় রক্ত পৌঁছায় ভাল ভাবে, দৌড়ে দৌড়ে, তাড়াতাড়ি। তখন শরীরের সব কলকব্জাও তেড়ে-ফুঁড়ে কাজ করে।

চিরগ্রিন সভা
ডিহাইড্রোপিয়ানড্রোস্টেরন বা প্রেম হরমোন ‘অ্যান্টি এজিং’-এর কাজটাও সামলে দেয়। মনে প্রেম থাকলেই শরীরে যৌবন থাকবে। ভালবাসলে এন্ডরফিন হরমোন ক্ষরণ হয় একটু বেশি। তাতে ত্বকে রক্ত চলাচল হয়। ত্বক নরম, মসৃণ থাকে। ফলে বলিরেখা, কুঁচকানো চামড়া থেকেও রেহাই মেলে। ‘ওর’ চোখে সুন্দর থাকতে হবেই, এই মনের জোরটুকু থাকলেই বার্ধক্য হেরে ভূত।

একা বোকা থাকব না
প্রেম নইলে বিমর্ষ চিত্ত। মানুষটি নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে। সমাজের মূল স্রোত থেকে দূরে সরে যায়। আর একা একা থাকলে, মৃত্যুও সময়ের আগেই হানা দেয়। সত্যি! এতে অকালমৃত্যুর সম্ভাবনা পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, একা বোকাদের তুলনায়, জোড়ায় জোড়ায় মানুষ অনেক দিন হেসে-খেলে বেঁচে থাকে। তাদের জীবনে কত ভালোবাসা, খালি পরস্পরকে আঁকড়ে থাকা! সেই সুন্দর ভুবনে বাঁচার ইচ্ছেটাই সব অসুখকে হারিয়ে দেয়। সেই ১৯৭৯ সাল থেকে ন্যাশনাল লঙ্গিটিউডিনাল মর্টালিটি স্টাডি এই বিষয়ে গবেষণা করছে। দেখা গেছে, বেশি দিন বেঁচে থাকার রেসে, বিবাহিতরাই চ্যাম্পিয়ন। আর একটি রিসার্চ বলছে, কোনও হাসপাতাল এদের বেশি দিন আটকে রাখতে পারে না, ডাক্তার-বদ্যিও তেমন দরকার লাগে না। একে-অপরকে এরা যত্ন করে, ভালবাসে, ভাল রাখে। তাই অসুখ-বিসুখের বালাই নেই। কম বয়সে ড্রাগের নেশায় চুর হয়ে থাকত, সকাল-বিকেল বারে গিয়ে বসে থাকত, এ রকম লোকজনও বিয়ের পর শুধরে যায়। স্বাভাবিক জীবন কাটায়। এমন নজিরও চার পাশেই প্রচুর পাবেন।

ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.