|
|
|
|
|
রাঁধতে রাঁধতে ধুয়ে ফেলুন |
সময় বাঁচাতে শুধু রান্না কাটছাঁট করলেই চলবে? ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ শব্দটা আছে কী করতে?
জেনে নিন, কম সময়ে টিপটপ রান্নাঘর পেতে স্মার্ট শেফদের কী কী করা উচিত। |
ছুটির দিনে বাড়িতে থাকলেন, অথচ দিনটা কেটে গেল রান্নাঘর নিয়ে, কেমন লাগে বলুন তো? আর অফিসের দিনে তো কথাই নেই। রান্না করে অফিস বেরোতে হলে, বা ফিরে এসে হাতা-খুন্তি ধরার নামেই গায়ে জ্বর আসে। তা হলে? বাড়ির রান্না ভুলে যাও, বাইরে থেকে খাবার আনাও? মুখরোচকও হল, সময়ও বাঁচল। কিন্তু এ ভাবে চললে আপনার স্বাস্থ্য বেশি দিন টিকবে তো? বরং দেখা যাক রান্নাঘরে কাজের সময়টা কী ভাবে কমিয়ে আনা যায়।
|
|
• অগোছালো কিচেন-এ অহেতুক সময় নষ্ট হয়। যে জিনিসগুলো প্রতি দিনের রান্নায় লাগে, যেমন তেল, নুন, চিনি, মশলাপাতি ইত্যাদি আলাদা আলাদা স্বচ্ছ কৌটোয় ভরে লেবেল করে হাতের কাছেই গুছিয়ে রাখুন। রান্নার সময় প্রতি বার ঢাকনা খুলে দেখতে হবে না কোন কৌটোয় কী আছে।
• মাঝারি আঁচে যতটা সম্ভব ঢাকনা চাপা দিয়ে রান্না করার চেষ্টা করুন। এতে গ্যাসও বাঁচে, আবার চট করে কড়ার গা পুড়ে ওঠে না। পোড়ার দাগ তুলতে কিন্তু প্রচুর সময় নষ্ট হয়।
• সারা সপ্তাহে যতটা পেঁয়াজ আপনার লাগে, তার একটা মোটামুটি হিসেব করে নিন। এ বার আপনার প্রিয় সিরিয়াল দেখতে দেখতে চটপট ওটা কুচো করে ফেলুন। ব্যাস, সারা সপ্তাহে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানো নিয়ে আপনাকে আর মাথা ঘামাতে হবে না। ঠিক এই ভাবেই রসুন, আদা, কিছু সবজি কেটেকুটে এয়ারটাইট পাত্রে ভরে ফ্রিজে রেখে দিলে পরিশ্রম প্রচুর কমে যাবে।
• কিছু কিছু উপকরণও আগে থেকেই তৈরি করে রাখতে পারেন। যেমন অনেকটা টমেটো পিউরি বানিয়ে আইস ট্রে-তে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। ঠান্ডায় জমে এগুলো কিউব-এর মতো হয়ে যাবে। পরে প্রয়োজন মতো কিউবগুলো বের করে আনলেই হবে।
• রান্নার সময় গুরুত্ব অনুযায়ী পদগুলি ভাগ করে ফেলুন। যেমন সকালে অফিস বেরোনোর আগে আমাদের মোটামুটি ভাত, ডাল আর একটা তরকারি প্রয়োজন হয়। শুরুতেই এই তিনটে পদ রেঁধে ফেলুন। তার পর হাতে সময় থাকলে বাকিগুলো রান্না করবেন, না থাকলে করবেন না। সঙ্গে তৈরি হতে হতে মাছটা যদি ভেজে রাখতে পারেন বা চিকেনটা ম্যারিনেট করে রেখে যেতে পারেন, রাতে তা হলে চটপট ঝোল বা স্যুপ বানিয়ে নিতে পারবেন।
• খাবার অতিরিক্ত হলে তা ফেলে দেবেন না। পরের দিনের রান্নায় এটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন রবিবারে মাংসের কোনও পদ রান্না করা হল। মাংসের অতিরিক্ত টুকরোগুলো দিয়ে পরের দিন বাচ্চাদের টিফিনের জন্য চিকেন নুডল্স তো বানিয়ে ফেলাই যায়। অথবা আগের দিন লুচির সঙ্গে যে আলুর তরকারি করেছিলেন, তার কিছুটা নিয়ে একটু চটকে পেঁয়াজ, শসার টুকরো আর সামান্য লঙ্কা দিয়ে মেখে নিন। রুটির মধ্যে এটিকে পুরে ওপরে একটু সস ছড়িয়ে রোল করে নিন। খেতেও ভাল হবে, আর টিফিনের ঝকমারি কিছুটা হলেও কমবে।
• সমস্ত রান্না হয়ে গেলে তার পর কিচেন পরিষ্কার করব এই মানসিকতা মোটেই ভাল নয়। ক্লান্ত শরীরে অনেক সময়ই কিচেন পরিষ্কার করতে ইচ্ছে করে না। তাই রান্না যখন শেষের দিকে, তখনই কিচেন গোছাতে আরম্ভ করে দিন। যে মশলাগুলো আর প্রয়োজন নেই, সেগুলো ঢাকা দিয়ে সরিয়ে রাখুন, অতিরিক্ত সবজি ফ্রিজে পুরে দিন। কোনও একটা পদ গ্যাসে বসিয়ে যে সমস্ত বাসন আর ব্যবহার করবেন না, সেগুলো ধুয়ে ফেলুন। এতে সময়ের অপচয় কমবে।
• রান্না করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কিন্তু সময় অনেক বেশি লাগে। এই ক্লান্তির বেশির ভাগই মানসিক, যার মূল কারণ সেই থোড় বড়ি খাড়ার রান্না। মাঝেমধ্যেই পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে থাকুন। নতুন ধরনের সবজি বা রান্নার উপকরণ নিজেই কিনে নিয়ে আসুন। এ বার চেষ্টা করুন, তাই দিয়েই তাক লাগিয়ে দিতে। নতুন রান্নার উদ্দীপনাই আপনার ক্লান্তিকে সরিয়ে দেবে।
• প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে জিনিসপত্র মজুত না থাকলে প্রচুর সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই কিচেনে একটা রাইটিং প্যাড আর পেন রেখে দেওয়ার অভ্যেস করুন। যখন যেটা ফুরিয়ে যাবে এতে লিখে রাখুন। সারা সপ্তাহের ব্রেকফাস্ট মেনু ঠিক করে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও এতে লিখে রাখতে পারেন। এর সুবিধে হল, কোন কোন জিনিস আপনার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, সেটা চোখের সামনে থাকবে। এ বার প্রয়োজন মতো বাড়ি ফেরার সময় জিনিসগুলো কিনে আনতে পারবেন। এই প্যাডে পরের দিনের মেনুও পরিবারের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে লিখে রাখতে পারেন। চোখের সামনে মেনু ঝোলানো থাকলে পর পর রান্না সেরে ফেলতে সুবিধে হয়।
• অফিস যাওয়ার তাড়ায় অনেকেই সময় মতো আনাজের খোসা জঞ্জাল ফেলার গাড়িতে ফেলতে পারেন না। বরং প্রতি দিন খোসাগুলো এক জায়গায় জড়ো করে বারান্দায় রাখা টবে বা বাগানে গাছের গোড়ায় ঢেলে দিন। সারের কাজ করবে, আবার জমে দুর্গন্ধও ছড়াবে না। |
|
|
|
|
|