পর্যটন উন্নয়ন নিগমের গা-ছাড়া মনোভাবে অসন্তুষ্ট বহরমপুর পুরসভা ইকো ভিলেজ গড়ার পরিকল্পনায় দাঁড়ি টানতে চাইছে। এ ব্যাপারে সরকারি ওই দফতরকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে বহরমপুর পুরসভা। বছর তিনেক আগে ২০০৯ সালে বহরমপুরের অদূরে ওই ইকো-ভিলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী আড়াই বছরের মধ্যে ওই ইকো-ভিলেজ নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত পঁচিশ শতাংশ কাজও হয়নি বলে অভিযোগ পুরসভার। কাজের ঢিলেমিতে ক্ষুব্ধ পুর-কতৃর্পক্ষ এই অবস্থায় চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছে। |
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “ইকো-ভিলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে প্রায় ১১ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করেছিল পর্যটন উন্নয়ন নিগম। তৎকালিন পর্যটনমন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায় বৈঠক করে ওই ১১ কোটি টাকার মধ্যে ৫ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকার দেবে বলেও সম্মতি দিয়েছিলেন। সেই মত রাজ্য সরকার ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা মঞ্জুরও করে।” কলকাতার এক এজেন্সিকে কাজের ভার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিন বছরে ৮০ লক্ষ টাকার কাজ করেও ওই ঠিকাদার সংস্থা মাত্র ৩২ লক্ষ টাকা পাওয়ায় কাজ থামিয়ে দিয়েছে তারা। পুরপ্রধান বলেন, “পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধিকর্তাকে ফোন করে কাজের গতি বাড়ানোর কথা জানিয়েছি। ঢিমেতালে কাজ হলে আমরা ওই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসব বলেও তাঁকে জানিয়ে দিয়েছি।” পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধিকর্তা পৃথা সরকার বলেন, “এজেন্সি যে পরিমাণ অর্থে দাবি করেছে, সেই অনুপাতে কাজ করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।”
নতুনগ্রামের কাছে ৫৫ বিঘে জায়গা কিনে ইকো-ভিলেজ নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বহরমপুর-লালবাগ রাজ্য সড়ক থেকে ৫০০ মিটার দূরে ভাগীরথীর পাড় লাগোয়া ওই ৫৫ বিঘে জায়গার মধ্যে ১৯ বিঘে বিস্তৃত জায়গা জুড়ে রয়েছে একটি জলাশয়ও। ‘রিভার ফ্রন্ট ডেভলপমেন্ট আন্ডার দ্য সার্কিট ট্যুরিজম’-এর আওতায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই ইকো-ভিলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়।
পুরপ্রধান বলেন, “২৭টি কটেজ নির্মাণের পাশাপাশি গোটা এলাকা সবুজে মুড়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের জন্য পার্ক ও জলাশয়ে বোটিং করার ব্যবস্থা থাকবে। সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে গোটা এলাকা আলোকিত হবে। এমনই পরিকল্পনা ছিল।”
সে সবই এখন বিশ বাঁও জলে। |