দক্ষিণ কলকাতা
কসাইখানা
পরিবেশবান্ধব
লকাতা পুরসভার উদ্যোগে ট্যাংরায় আধুনিক মানের কসাইখানার কাজ শুরু হল। পুর স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে এই প্রকল্প নির্মাণে প্রায় ২৮ কোটি টাকা খরচ করা হবে পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। পরিবেশ দফতরের সমস্ত বিধি মেনেই এই প্রকল্প নির্মাণ করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “পরিবেশ দূষণ রোধ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে শহরের বাজারে মাংস বিক্রি করা যায় সে জন্যই পুর স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগ। শুধু তাই নয়, কসাইখানার বেশির ভাগ কাজই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে হবে। গত পুরবোর্ডের আমলে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা কার্যকরী করা হয়নি।” গত পুরবোর্ডের আমলে ২০০৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা পুরসভাকে আধুনিকমানের একটি কসাইখানা নির্মাণ করার কথা বলে। এর পরই তৎকালীন পুরবোর্ড এই কসাইখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।
ট্যাংরায় পুরনো কসাইখানা
বর্তমানে ট্যাংরায় পুরসভা নিয়ন্ত্রিত একটি কসাইখানা থাকলেও সেটি উন্নতমানের নয়। কয়েক বছর আগেই রাজ্য পরিবেশ দফতর এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ প্রাণীদেহের বর্জ্য থেকে কসাইখানা সংলগ্ন খালে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ করে। সেই সমস্যা দূর করতে অবশ্য পুরনো কসাইখানায় পুরসভা একটি ‘ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ বসায়। নতুন প্রকল্পেও উন্নতমানের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থাকবে যাতে প্রাণীদেহের বর্জ্য পরিশোধিত হয়ে খালে পড়ে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আধুনিকমানের এই কসাইখানা নির্মাণের জন্য ২০০৭-এ প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করে তা কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের কাছে পাঠানো হয়। এই রূপরেখা পর্যালোচনার পরেই কেন্দ্রী পুরসভাকে এই প্রকল্পের জন্য ২০০৮ সালে অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রকল্পের মোট বরাদ্দের অর্ধেক অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি অর্থ দেবে পুরসভা। পুরসভার জমিতেই এই প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত সেই সময়ে নেওয়া হয়। ২০১০-এ প্রথম লপ্তে কেন্দ্র এক কোটি ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। এই কাজের জন্য পুরসভা দরপত্রও দেয়। কিন্তু তার পরেও পুরসভা কাজ শুরু করতে পারেনি।
এই প্রকল্প শুরু করতে দেরি হওয়ার কারণ কী?
পুরকর্তৃপক্ষ জানান, আধুনিক মানের এই প্রকল্প করতে গেলে যে পরিমাণ জমি প্রয়োজন তা খুঁজতে সময় লাগে। বর্তমানে ট্যাংরায় দেবেন্দ্র চন্দ্র দে রোডে যেখানে কসাইখানা রয়েছে তার কিছুটা দূরে পুরসভারই প্রায় দশ বিঘা জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও পুনর্বাসন সংক্রান্ত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যে জায়গায় এই কসাইখানা নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে সেখানে খেলার মাঠ ছিল। সেই নিয়েই বিতর্ক ওঠে। যদিও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরে এই সমস্যার সমাধান হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের টাকাও পেয়েছি। এই প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প পুরোপুরি রূপায়ণ করা সম্ভব হবে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.