দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
ভোগান্তি চলছেই
বাদুড়ঝোলা যাত্রা
নসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে যাত্রীর সংখ্যা। নতুন রাস্তাও তৈরি হয়েছে। কিন্তু নতুন রুটের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বাড়েনি বর্তমান রুটে বাসের সংখ্যাও। ফলে ব্যস্ত সময়ে নিত্যযাত্রীদের জুলপিয়া মোড়, ঠাকুরপুকুর এবং বেহালা থেকে মূল বা দক্ষিণ কলকাতায় কার্যত বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অসুবিধা হয় অন্য সময়েও। রুটে কম বাস চলায় জুলপিয়া রুটে স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ কয়েক বার রাস্তা অবরোধও করেন।
৪০বি, ২৫৭ এবং কালীতলা-হাওড়া মিনিবাস জুলপিয়া মোড় ও ঠাকুরপুকুরের সঙ্গে মূল কলকাতার যোগাযোগের ভরসা বলতে এই। টালিগঞ্জ মেট্রো থেকে জোকা পর্যন্ত একটি সরকারি বাস চললেও সেটি বেশ অনিয়মিত। ৪০বি বাবুঘাট থেকে ঠাকুরপুকুর বাজার পর্যন্ত, ২৫৭ কলকাতা স্টেশন থেকে জুলপিয়া পর্যন্ত চলে। বছরখানেক আগে ২৫৭ রুটটি চালু হয়। অভিযোগ, নিত্যযাত্রীদের অনুপাতে বাসের সংখ্যা অত্যন্ত কম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস পাওয়া যায় না। বাস মিললে ভিড়ে ঠাসা। প্রতি দিনই কার্যত ঝুলতে ঝুলতে যেতে হয়।
একই অবস্থা দক্ষিণ কলকাতা-বেহালা রুটেরও। অভিযোগ, সেখানেও বাসের সংখ্যা খুব কম। যেমন, এসডি৪/১, শীলপাড়া-বেলেঘাটা মিনি এবং সরকারি বাস এস ৩১। ফলে যাঁরা টালিগঞ্জ হয়ে বেহালা চৌরাস্তা কিংবা সখেরবাজার, শীলপাড়া যেতে চান তাঁদেরও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “জেলার আরটিও-র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমি দফতরকে পুরো বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি। শীঘ্র না হলেও অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাস কম থাকায় অটোর উপরে নির্ভর করতে হয়। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, তাতে খরচ বেড়ে যায়। যেমন, জুলপিয়া মোড় থেকে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই পথ যেতেই তিন বার অটো পাল্টাতে হয়। সেখান থেকে বাসে গন্তব্যে যেতে হয়। নিত্যযাত্রী শ্রীমন্ত সর্দার বললেন, “টালিগঞ্জ মোড়ে আসতেই ৪০ টাকা খরচ হয়ে যায়।” অনেক সময়ে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরেও অটো মেলে না। রাত বাড়লে অটো বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে, সন্ধ্যার পর শাট্ল গাড়ি কিংবা ট্যাক্সি ধরার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। একই পরিস্থিতি বেহালার ক্ষেত্রেও। অভিযোগ, আলিপুরে জেলার সদর অফিসে আরটিও-র কাছে বাসের রুট এবং সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। নেপালগঞ্জ মোড় থেকে পৈলান হাট যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে নতুন পিচের রাস্তা। কিন্তু সেখানেও ভরসা বলতে অটো ও সাইকেল ভ্যান।
আলিপুর আরটিও সূত্রে খবর, এই অঞ্চলে দু’টি রুট। একটি জুলপিয়া, অন্যটি ঠাকুরপুকুর। জুলপিয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর ঠাকুরপুকুর কলকাতার মধ্যে পড়ে। কিন্তু কলকাতার এলাকাই অনেক বেশি। ফলে কলকাতা আরটিও-ই বাসরুটিগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, “নতুন রুট এবং বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।” কলকাতা আরটিও-র সচিব সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী বলেন, “বাস কম থাকার অভিযোগ এসেছিল। এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে বলেছি খোঁজখবর নিতে। যদি খবরটি ঠিক হয়, আমরা সেই রুটের বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.