|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সুরাহা কবে |
অবাধ দখলদারি |
দেবাশিস দাস |
দখলদারির দাপটে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন (ইএম) বাইপাস ও গড়িয়া-সোনারপুরের সংযোগকারী রাস্তাটি। কামালগাজি থেকে বৃজির ঢালাই ব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত এই রাস্তায় দখলদারি নিয়ে এলাকাবাসী এবং পথচারীদের অভিযোগের শেষ নেই। অভিযোগ, দিনের পর দিন এই রাস্তার দুই ধার দখল করে ক্রমশই বাড়ছে দোকানের সংখ্যা, গ্যারাজ, ছোট হচ্ছে রাস্তা। সারা দিন ধরে সারাইয়ের জন্য দু’-তিনটি সারিতে ট্রাক, লরি, ট্রেকার, বাস এবং অন্যান্য যানবাহন এই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। শুধু রাস্তাই নয়, দখলদারির হাত থেকে রেহাই পায়নি রাস্তার ডিভাইডারও। তবে এ নিয়ে কারও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ)। কেএমডিএ সূত্রের খবর, দখল সমস্যার জন্য বাইপাসের সঙ্গে এই রাস্তার সংযোগের কাজ এখনও কিছুটা বাকি রয়ে গিয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও সোনারপুর, গড়িয়ার অধিকাংশ বাসিন্দা বাইপাসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সারা দিন এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। তবে এত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার ধারে ক্রমশই বেড়ে চলেছে দখলদারি। |
|
মার্বেলের দোকান থেকে গ্যারাজ, ফল্স সিলিং থেকে আসবাবপত্রের দোকান, হোটেল, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় সবই এই রাস্তার দু’ধারে গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। রাস্তার ধার দখল করে প্রতি মাসেই দু’-তিনটি করে দোকান গজিয়ে উঠছে। কামালগাজি, উত্তর কুমড়োখালি, ফরতাবাদ, নরেন্দ্রপুর, বৃজি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার দুই ধারে অন্যান্য দোকানের চেয়ে গ্যারাজের সংখ্যাই বেশি।
এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় প্রামাণিকের কথায়: ‘‘দিনের ব্যস্ত সময়ে রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। যে কোনও সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই রাস্তার দুই ধার দখলের প্রক্রিয়া বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকেই শুরু হয়েছে। তবে রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তনের পরেও তা বদলায়নি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্যারাজের মালিক বলেন, “খরচ করেই এই রাস্তার পাশে গ্যারাজ করেছি। বিকল্প কোনও ব্যবস্থার প্রস্তাব এলে সরে যাওয়ার কথা ভাবব।’’ একই বক্তব্য অন্য দোকানদারদেরও।
কিন্তু শুধুমাত্র খরচ করলেই কি ইএম বাইপাসের সঙ্গে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধার দিয়ে এই ভাবে সার সার দোকান দেওয়া যায়? সারা দিন ধরে যানবাহন সারাইয়ের জন্য দু’-তিনটি সারিতে লরি দাঁড় করিয়ে রাখা যায়? এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এই দখলদারির জন্য রাস্তায় যানবাহনের গতিও ব্যাহত হয়। তা সত্ত্বেও বাইপাসের সংযোগকারী রাস্তাকে কেন্দ্র করে দিনের পর দিন এই সব কাজ চলছে। কেউ কিছু বলেন না।
|
|
এই সংযোগকারী রাস্তায় দখলদারির সমস্যা যে দীর্ঘ দিনের, তা কার্যত স্বীকার করে নেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান এবং বর্তমান পুরপ্রতিনিধি সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এই রাস্তার বেআইনি দখলদারি দ্রুত সরিয়ে ফেলা জরুরি। এই বিষয়ে কেএমডিএ-রও ভূমিকা রয়েছে।” সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক এবং পুরসভার উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগমের কথায়: “আমি কখনও কোনও রকম দখলদারি সমর্থন করিনি এবং এখনও করি না। তবে কে কোথায় কী করছে তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। এই রাস্তার পাশে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করেছি। কেএমডিএ বাইপাসের সংযোগকারী রাস্তার বাকি কাজ শেষ করলেই রাস্তার দুই ধার দখলমুক্ত হয়ে যাবে।” কেএমডিএ-র জনসংযোগ আধিকারিক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তাটির সমস্যা সর্ম্পকে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|