দশ দিন পরেই শিলিগুড়িতে আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের খেলায় মুখোমুখি নামার কথা ওঁদের। মহমেডান এবং কালীঘাট মিলন সংঘের হয়ে। তার আগেই বড় রকমের ঝামেলায় জড়িয়ে জেলে যেতে হল তিন নাইজিরিয়ান ফুটবলার মহম্মদ হাসান আদেলা, মাইকেল টায়ো এবং ওয়াহিদ আদিকুনলে-কে। আলিপুর আদালত তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে তাঁদের দুটো ম্যাচ খেলা কঠিন। কর্তারা সোমবার আবার জামিনের আবেদন করছেন।
হাসান মহমেডানের এক নম্বর স্টপার। বাকি দু’জন এ বার রয়েছেন কালীঘাট মিলন সঙ্ঘে। টায়ো এর আগে খেলে এসেছেন মুম্বইয়ের এয়ার ইন্ডিয়া, গোয়ার স্পোর্টিংয়ে। ওয়াহিদি প্রচুর গোল করেছেন এ বছর। কালীঘাটের জার্সি গায়ে।
ক’দিন আগেই এ আই এফ এফ দফতরে আলোচনা হয়েছিল ভারতে খেলা নাইজিরিয়ান ফুটবলারদের নিয়ে। বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন এঁরা। জাল পাসপোর্ট থেকে শুরু করে, নানা ধরনের জালিয়াতির অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ক্লাবের নাইজিরিয়ানদের সম্পর্কে মাসিক রিপোর্ট নেওয়া যায় কি না, এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়। তার মধ্যেই এই ঘটনা।
দক্ষিণ শহরতলির গড়ফা পূর্বাচলের একটি ফ্ল্যাট থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ওই তিন ফুটবলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন জন একসঙ্গে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ওঁদের সঙ্গে একই ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয় এক মহিলাকেও। স্থানীয় মানুষেরাই থানা থেকে পুলিশ ডেকে এনে চার জনকে ধরিয়ে দেন। তিন ফুটবলারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, নিয়মিত রাতে নানা ধরনের ঝামেলা করার।
শুক্রবার থেকে অলোক মুখোপাধ্যায়ের মহমেডানের অনুশীলন শুরু হয়েছে। কারণ শিলিগুড়িতে ভাল খেলতে পারলে অনেক দিন পর আই লিগে ডেম্পো, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাবে মহমেডান। সুযোগ আছে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘেরও। গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগেই তাঁদের ফুটবলাররা বিশ্রী ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ায় বিব্রত হলেও দলের স্বার্থে কিছু করতে পারছেন না ক্লাব কর্তারা। মহমেডানের মাঠ সচিব কামারুদ্দিন বললেন, “খুব খারাপ ঘটনা। সামনে খেলা রয়েছে। হাসান প্রথম পর্বে খুব ভাল খেলেছে। তাই এখনই সাসপেন্ড করা সম্ভব নয়। তবে ওকে জরিমানা করব আমরা।” বিস্মিত কোচ অলোক মুখোপাধ্যায়ও, “ওকে দেখে তো কিছু বোঝা যায় না।” আর কালীঘাট এম এসের প্রেসিডেন্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় পুরো ঘটনায় চূড়ান্ত অস্বস্তিতে। দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, টিম করি বলে ওদের দরকার হয়। ওদের লাইফ স্টাইলটা এত খারাপ যে কিছুতেই বুঝিয়ে কিছু হয় না। এর পর থেকে বিদেশি নেওয়ার আগে এ সব দেখতে হবে।”
আফ্রিকা থেকে আসা ফুটবলারদের বিরুদ্ধে এর আগে বহু অভিযোগ উঠেছে। চোরাচালান থেকে মাদক পাচার, মদ্যপ অবস্থায় মারপিট। গতবারও মোহনবাগানের মুরিতালা আলির বিরুদ্ধে অভব্যতার অভিযোগ করেন প্রতিবেশীরা। তাঁকে বাঁচান ক্লাব কর্তারা। হাসানদের কিন্তু অত সহজে মুক্তি মিলল না। |