বিতর্কের জেরে তালা হার্বোরিয়ামে
ক পক্ষ হার্বোরিয়ামেই ক্লাস করতে চান। অন্য পক্ষ হার্বোরিমায়কে সংরক্ষিত করার পক্ষে। উপাচার্য দু’পক্ষকে ডেকে বিতর্ক বন্ধের অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে হার্বোরিয়াম তালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনই ঘটনা ঘটেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটানি বিভাগে।
ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ ওই বিভাগেরই রিডার অমল মণ্ডল ও ট্যাক্সোনমির ছাত্রছাত্রীরা। অমলবাবুর দাবি, তিনি যখন বিভাগীয় প্রধান ছিলেন সেই সময়ে অনেক কষ্টে হার্বোরিয়ামটি তৈরি করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “ট্যাক্সোনমির ছাত্রছাত্রীদের কাছে হার্বোরিয়াম অতি গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়াও আমি এবং ছাত্রছাত্রীরা মিলেই হার্বোরিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ করি। আমাদের পর্যাপ্ত ক্লাসরুমও নেই। তাই ওখানেই ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করে। হার্বোরিমায়টিকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্যে কয়েক জন উঠে পড়ে লেগেছে। ওটাকে লোকচক্ষুর আড়ালে পাঠিয়ে দিতেই তালাবন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।” বিষয়টি অমলবাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেও লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, মূলত যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, বটানির সেই বর্তমান বিভাগীয় প্রধান আশিস নন্দীর বক্তব্য, “বিভাগীয় কমিটিই হার্বোরিয়াম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ হার্বোরিয়ামকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাবছিলেন। তা ছাড়াও যখন ক্লাসে শিক্ষক থাকেন না তখন হার্বোরিয়ামে হইহট্টগোল হয়। তাই ওটিকে সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” দু’পক্ষ শিক্ষকের এই ‘কাজিয়া’ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গল ও গ্রাম থেকে সংগ্রহ করে আনা প্রচুর পরিমাণ ওষধি গাছ নিয়েই ওই হার্বোরিয়াম। একটি বিশেষ পদ্ধতিতে ওই গাছকে শুকনো করে রাখা হয়। ফাইলের মধ্যে তা সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। ফাইলের উপরে গাছের সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকে। ইতিমধ্যেই হার্বোরিয়ামে প্রায় ৬০০ ধরনের গাছ সংগৃহীত হয়েছে বলে অমলবাবুর দাবি। সেটি জাতীয়স্তরের হার্বোরিয়ামেরও মর্যাদা পেয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরের মর্যাদা পেতে ১০ হাজার গাছ সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করছিলেন অমলবাবুরা। তাঁর অভিযোগ, “এই চেষ্টাকে ধাক্কা দিতেই হার্বোরিয়াম বন্ধের সিদ্ধান্ত। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্পদ নষ্ট হয়ে যাবে।” যদিও উপাচার্যের বক্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন খাতে বিশেষ প্রকল্পে অর্থ পাচ্ছে। হার্বোরিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা উন্নত করার চেষ্টা হবে।” অমলবাবুও অবশ্য উপাচার্যের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করছেন না। তাঁর বক্তব্য, “উপাচার্য সব দিক দিয়েই সাহায্য করছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার বিভাগ থেকেই এর বিরুদ্ধাচারণ করা হচ্ছে।” হঠাৎ তালা বন্ধ করে দেওয়ায় ছাত্রছাত্রীরাও সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, যে সব ছাত্রছাত্রীর স্পেশ্যাল পেপার ট্যাক্সোনমি, তাঁদের ক্ষেত্রে হার্বোরিয়াম অতি গুরুত্বপূর্ণ বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। তা ছাড়াও, তাঁদের নির্দিষ্ট ক্লাসরুমও নেই। অমলবাবুর আক্ষেপ, “হার্বোরিয়াম তালাবন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কী ভাবে তাদের ক্লাস হবে!” বিভাগীয় প্রধানের কটাক্ষ, “ক্লাসরুম নেই বলে কেউ বাথরুমে গিয়ে ক্লাস নেবেন বললেও কি তা মেনে নিতে হবে?”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.