পিটিয়ে চিতাবাঘ মেরে ফেলার ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করল বন দফতর। শুক্রবার বন দফতরের মেখলিগঞ্জ এলাকার রেঞ্জার স্থানীয় থানায় ওই অভিযোগ জানান। বৃহস্পতিবার জামালদহের ১৬৫ উছলপুখুরি গ্রামে চিতাবাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনাটি ঘটে। এ দিন বন দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তের পরে সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী হত্যা সংক্রান্ত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “বন্যপ্রাণ বিভাগের অফিসারদের ওই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি।” কোচবিহারের ডিএফও পিনাকী মিত্র জানান, চিতাবাঘের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। উত্তেজিত জনতার ভিড় থাকায় পুলিশ এবং বন কর্মীদের পক্ষে চেষ্টা করেও বুনোটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “গণপ্রহারে চিতাবাঘের মৃত্যু নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” পুলিশ ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ জঙ্গল থেকে আসা একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ মেখলিগঞ্জ থানার উছলপুখুরি গ্রামে ঢুকে পড়ে। ৬ বছর বয়সী ওই পুরুষ চিতার হামলায় ৭ জন গ্রামবাসী এবং ৩ জন বনকর্মী জখম হন। বুনোটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে কাবু করার চেষ্টা হয়। ওই সময় উত্তেজিত জনতা লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করলে চিতাবাঘটি মারা যায়। দেরি করে এলাকায় পৌঁছনোর অভিযোগে বনকর্তাদের কয়েকজন জনতার হাতে প্রহৃত হন বলেও অভিযোগ। ঘটনার পরে কোচবিহারে বন্যপ্রাণ স্কোয়াড তৈরির প্রস্তাব নিয়ে বনকর্মী মহলে ফের প্রশ্ন উঠেছে। বনকর্মীরা জানান, জেলার লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর আনাগোনা বেড়ে চলেছে। কিন্তু জেলায় বন্যপ্রাণ স্কোয়াড না থাকায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। উল্টে বনকর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। কোচবিহারের ডিএফও জানান, বন্যপ্রাণ স্কোয়াড তৈরির প্রস্তাবও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ২০০৯ সালে বন্যপ্রাণ স্কোয়াড তৈরির ওই প্রস্তাব রাজ্য বন দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু বাস্তবায়িত না-হওয়ায় লোকালয়ে ঢুকে পড়া চিতাবাঘ, বাইসনের হামলা ঠেকাতে জলদাপাড়া, বক্সা অথবা জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে। দূরত্বের জন্য ওই স্কোয়াডের কর্মীদের পৌছতে দেরি হওয়ায় জনতার ক্ষোভ সামলাতে হচ্ছে। কোচবিহারের এক কর্তা বলেন, “বৃহস্পতিবার একই সমস্যার জন্য আধিকারিকরা জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন।” রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন জানান, আগামী বাজেটে বন্যপ্রাণ স্কোয়াডে বরাদ্দ বাড়িয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। |