আরামবাগে একশো দিনের প্রকল্প
সরকারি অনুমোদন ছাড়া কাজ, সমস্যা মজুরি নিয়ে
প্রশাসনিক অনুমতি বা অনুমোদন ছাড়াই আরামবাগের আরান্ডি ১ এবং মাধবপুর পঞ্চায়েতে কিছু ক্ষেত্রে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ হয়েছে বলে তথ্য উঠে এল প্রশাসনিক তদন্তে।
আরান্ডি ১ পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে অভিযোগ আট মাসের পুরনো একটি কাজকে কেন্দ্র করে। বিধানসভা ভোটে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব সিপিএম পরিচালিত ওই পঞ্চায়াতকে দিয়ে ‘মর্জিমতো’ এই কাজ করিয়েছেন বলে প্রশাসনিক তদন্তে তথ্য উঠে এসেছে। মাধবপুর পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে আবার গত বিধানসভা ভোটের আগেই বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষই এই অনিয়ম করেছেন বলে তদন্তে প্রকাশ।
খাতায়-কলমে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে দিন পনেরো আগে। তার আগে অবশ্য গত চার মাস ধরে পঞ্চায়েত দু’টিতে শ্রমিকেরা ওই ‘বেআইনি’ কাজগুলির মজুরি চেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। অবশেষে পঞ্চায়েত দু’টিই লিখিত ভাবে ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে ‘পরামর্শ’ চায়। প্রায় একই সময়ে শ্রমিকদের তরফেও মজুরি না পাওয়ার অভিযোগ লিখিত ভাবে দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনকে। ব্লক প্রশাসনের তরফে গোটা বিষয়টি মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর দৃষ্টিগোচর করা হয়। তিনি আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। দিন সাতেক আগে সেই তদন্ত শেষ হয়েছে। মহকুমাশাসক শুক্রবার বলেন, “প্রকল্পের আইন মেনে কাজগুলি হয়নি। তাই শ্রমিকদের মজুরি প্রকল্পের তহবিল থেকে দেওয়া যাবে না বলে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কাজের সত্যতা যাচাই করে পঞ্চায়েত অন্য তহবিল থেকে তা মেটাতে পারবে।”
সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত দু’টিতে সমস্যা আরও আছে। অভিযোগ, এক দিকে টাকা না পেয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতৃত্বও নানা ভাবা ‘ধমকানি’ দিচ্ছে।
আরান্ডি ১-এর প্রধান যুথিকা পণ্ডিত জানান, ইচ্ছা মতো কাজকর্ম করিয়ে অশান্তির চেষ্টা করছেন এক তৃণমূল নেতা। একশো দিনের প্রকল্পের টাকা থেকে মজুরি মেটানো যাবে না বলে জানিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। কিন্তু মজুরির জন্য নিজস্ব তহবিল কিংবা তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশনের প্রদত্ত তহবিল যথেষ্ট নয়। সমস্যা সমাধানের কোনও পথ পাচ্ছি না।” অন্য দিকে, মাধবপুরে সিপিএমের প্রধান মুজিবর রহমান দীর্ঘ দিন গরহাজির। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সিপিআইয়ের সুজাতা রায়। তিনি বলেন, “কোন পরিপ্রেক্ষিতে কে কী ভাবে কাজ করিয়েছিলেন, আমার জানা নেই। তবে কাজ যে হয়েছে, সে হদিস পাওয়া গিয়েছে। শ্রমিকদের টাকা মেটানোর ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের কাছে পরামর্শ চেয়েছি।”
মুজিবর এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এলাকার তৃণমূল নেতা রণজিৎ রায়ের বক্তব্য, “বিধানসভা ভোটের আগে ভোটারদের সরকারি টাকা পাইয়ে দেওয়ার রীতি দীর্ঘ দিন ধরে সিপিএমের ছিল। ওরা জিতে গেলে প্রশাসনকে চাপ দিয়ে ঠিকই পুরনো তারিখ দিয়ে প্রকল্প মঞ্জুর করিয়ে নিত। তবে আমরা চাই যে ভাবেই হোক শ্রমিকেরা মজুরি পান।” অন্য দিকে, আরান্ডি ১ পঞ্চায়েত প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সোহরাব হোসেন বলেন, “আমি একশো দিনের প্রকল্পের নিয়ম-কানুন জানতাম না। প্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্যেরা কেউ না আসায় কিছু রাস্তা, বাগান সংস্কারের কাজ করিয়েছিলাম। প্রশাসন নিয়ম-কানুন শিথিল করে মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.