স্টিফেন কোর্ট
‘উদাসীন’ বাসিন্দারা, টাকা গুনছে পুরসভা
পুড়ে যাওয়া স্টিফেন কোর্টের ছ’তলার ছাদ ধরে রাখতে কলকাতা পুরসভাকে ইতিমধ্যেই এক কোটি টাকার বেশি গুনাগার দিতে হয়েছে। আরও কত দিন ওই গুনাগার বহন করতে হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন পুরকর্তারা।
কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “স্টিফেন কোর্টের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করার জন্য আইনের বাইরে গিয়েও পুরসভা অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু ছ’মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ওই বাড়ির ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন মেরামতের কাজ শুরু করেনি। ইতিমধ্যেই বাড়িটির চারতলা থেকে ছ’তলার ছাদ ধরে রাখতে পুরসভার এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। বেশি দিন ওই ভাবে বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করা পুরসভার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে।”
২০১০ সালের ২৩ মার্চ স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগে। আগুনে বাড়িটি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছ’তলা বাড়িটির ভিতরের পাঁচতলার ছাদ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছ’তলার ছাদও। তার পরেও চারতলা থেকে সেই ছ’তলার ছাদটি আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে পুরসভা ১৭টি লোহার বিমের স্তম্ভ দিয়ে আটকে রেখেছে। কারণ, ছ’তলার ছাদটি যে কোনও সময়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে। তাতে নীচের তলাগুলিরও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্টিফেন কোর্টে ছ’তলার ভঙ্গুর ছাদ ধরে রেখেছে লোহার স্তম্ভ। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে, ছ’তলার ছাদ ধরে রাখতে লোহার বিম দিয়ে ১৭টি থাম তৈরি করা হয়েছে। ওই থামের ভাড়া বাবদ পুরসভাকে প্রতি মাসে ২৭ হাজার টাকা করে ভাড়া দিতে হয় একটি বেসরকারি সংস্থাকে। ইতিমধ্যে ওই খাতে এক কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। স্টিফেন কোর্টের ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাড়িটি মেরামতের জন্য প্ল্যান জমা দিয়েছিল। শর্তসাপেক্ষে সেই প্ল্যানের অনুমোদনও দিয়ে দেওয়া হয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। তার পর থেকে আর কাজ এগোয়নি।
স্টিফেন কোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস গুহনিয়োগী বলেন, “এটা ঠিক যে, পুরসভা আমাদের প্ল্যানের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু অনুমোদন-ফি জমা দিয়ে আমরা সেটি এখনও সংগ্রহ করতে পারিনি। কারণ, আমাদের মধ্যে ৮৪টি আবাসিক পরিবার রয়েছে, যাদের সবাইকে বুঝিয়ে টাকাপয়সা সংগ্রহ করা কঠিন হয়। কারণ, সকলেই নিজেদের শর্ত চাপাতে চাইছিল।” পুরসভা সূত্রের খবর, সমস্যার মূল কারণ অন্য। বাড়িটি পুড়ে যাওয়ার পরে পুরসভা শর্তসাপেক্ষে কিছু দোকানদারকে দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। এখন তারাই টাকা দিতে রাজি হচ্ছে না। দেবাশিসবাবুর অবশ্য দাবি, “ইতিমধ্যে সকলকে রাজি করানো সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা ঠিক করেছি, চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে বাড়িটি সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। তবে তার আগে আমাদের ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সরকারি নথিভুক্তিকরণ হওয়া দরকার। সেই কাজ করতে গিয়েও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।”
দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, পুরসভা যখন লোহার স্তম্ভ দিয়ে ছ’তলার ছাদ বাঁচানোর ব্যবস্থা করেছিল, তখনই ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে পুর-কর্তৃপক্ষকে বলা হয়, লোহার বিমের পরিবর্তে সেখানে কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি করে দেওয়া হোক। তাঁর দাবি, সে ক্ষেত্রে হয়তো পুরসভাকে এত টাকা খরচ করতে হত না।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.