ক্ষুব্ধ শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর ক্ষোভের কারণ, আজ, শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শ্রম দফতরেরই একটি অনুষ্ঠান রয়েছে। অথচ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তাঁকে সে বিষয়ে কিছু জানানোই হয়নি! সে কারণে তিনিও ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। তবে ওই পর্যন্তই। এজন্য মন্ত্রিত্ব ছাড়তে সাবিনা রাজি নন।
যুবভারতীতে শ্রম দফতর অসংগঠিত শ্রমিকদের সমাবেশ ও সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠান করছে। সাবিনার অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠানের সরকারি আমন্ত্রণ পত্রে তাঁর নাম ছাপা বা তাঁকে আমন্ত্রণ করা তো হয়ইনি, এদিন বিকেল পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানের বিষয়ে তাঁকে জানানোও হয়নি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে এবং রাস্তার ধারে লাগানো ফেস্টুন থেকে তিনি ওই অনুষ্ঠানের খবর জানতে পেরেছেন।
প্রশাসনের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, যে কোনও সরকারেই সাধারণ জোটশরিকদের প্রতিমন্ত্রীর পদগুলি দেওয়া হয় জোট রাজনীতির ‘বাধ্যবাধকতা’র জন্য। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হলে অন্য কথা, নইলে স্বাধীন দায়িত্বহীন প্রতিমন্ত্রীদের অবস্থান শোভাবর্ধক ‘ফুলদানি’র চেয়ে বেশি কিছু নয়। উদাহরণ হিসেবে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারে তৃণমূলের মন্ত্রীদের কথাও বলা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারে আপাতত তৃণমূলের ছ’জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। |
সাংবাদিক বৈঠকে সাবিনা। নিজস্ব চিত্র |
কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ নামেই মন্ত্রী। তাঁরা বেশিরভাগ সময় রাজ্যেই কাটান। বিগত বাম সরকারের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও যে ফ্রন্টের ছোটখাটো শরিকদের প্রতিমন্ত্রীর পদ দিয়ে ‘তুষ্ট’ রাখতে বাধ্য হতেন, সে কথাও তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, এ দিনই শ্রম দফতরের পূর্ণমন্ত্রী ও শ্রমকল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান পূর্ণেন্দু বসুর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন সাবিনা। সেখানেও পূর্ণেন্দুবাবু তাঁকে ওই বিষয়ে একটি কথাও বলেননি বলে সাবিনার অভিযোগ। তিনি বলেন, “বিষয়টি কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশেই এখনও প্রতিমন্ত্রী রয়েছি।” প্রসঙ্গত, যুবভারতীতে শ্রম দফতরের আজকের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং সেখানে সভাপতিত্ব করবেন শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবু। সাবিনার অভিযোগ, দফতরের কোনও কাজ তাঁকে দেওয়া হয় না। সরকারি কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করা-সহ কোনও সিদ্ধান্তও তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হয় না। বিড়ি শ্রমিকদের দায়িত্ব তাঁকে দিয়েও পরে তা কার্যত ‘কেড়ে’ নেওয়া হয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানাচ্ছেন না কেন? সাবিনার জবাব, “কিছু হবে বলে মনে হয় না। তবু সুযোগ পেলে এক বার বলতে পারি। কিন্তু আমি সব বিষয় নিয়মিত দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে রাখছি।” তিনিও কি কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীর মতো মন্ত্রিত্ব ছাড়বেন? সাবিনা বলেন, “মন্ত্রিত্ব ছাড়ব না। কারও দয়ায় মন্ত্রী হইনি। জিতে এসেছি। জনগণের সমর্থন আছে আমার সঙ্গে। যদি যেতে হয়, ৪২ জনকে নিয়েই যাব।” সাবিনার অভিযোগ নিয়ে পূর্ণেন্দুবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |